রুমায় ভিজিডির সঞ্চয় টাকা ফেরত পেয়েছে দুস্থ নারীরা

21

বান্দরবানের রুমায় রুমায় ভিজিডির সঞ্চয় টাকা ফেরত পেয়ে মহাখুশি দুস্থ নারীরা। সরকারের গৃহিত খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ১৯-২০ অর্থ সালে ২৪ মাস মেয়াদে রুমা উপজেলায় ৪টি ইউনিয়নের এক হাজার ৫৯৬ জন দুস্থ মহিলাকে ভিজিডি উপকারভোগী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়। তারা জানুয়ারী ২০১৯ থেকে ২০২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ( মোট ২৪ মাস) প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল পেতো। এ ২৪ মাস চাল উত্তোলনের সময় উপকাভোগী দুস্থ মহিলারা প্রতিমাসে ২০০ টাকা করে সঞ্চয় হিসেবে জমা দেন ব্যাংকে। গত ২০ সালে ৩১ ডিসেম্বর মোট ২৪ মাসে চক্র শেষ হয়। ফলে সঞ্চয়িত টাকা প্রতি দুস্থ মহিলাকে সুদসহ চার হাজার ৯৮০টাকা করে সঞ্চয় ফেরত বিতরণ করছেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর। রুমা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুপন চাকমা জানান, মনিটরিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইয়ামিন হোসেনের নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে সঞ্চয় টাকা বিতরণ কার্যক্রম চলমান আছে। এদিকে ভিজিডি উপকারভোগী দুস্থ মহিলা হিসেবে সঞ্চয় টাকা পেয়ে মেক্সী তঞ্চঙ্গ্যা জানান, ফেরত প্রাপ্ত সঞ্চয় টাকায় বড় জাতের দুই হাজার ৫০০ টাকায় একটি শুকর নেবো। এক বছর পর তা বিক্রি করে ৯ হাজার টাকা আয়ের পরিকল্পনা কথা জানালেন মেক্সী। আরেক উপকারভোগী দুস্থ মহিলা ও পাইন্দু ইউনিয়নের ছাংদালা পাড়া বাসিন্দা সাইমেউ মারমা জানান, নগদ চার হাজার ৯৮০ টাকা এক সাথে পেয়ে খুব ভাল লাগছে। কারণ যে কাজ করুক না কেন, কোনো অবস্থাতেই এতো টাকা মাসিক জমা রাখা সম্ভব হয়নি ঘরে। মাসে ৩০ কেজি করে পুরো ২৪ মাস চাল পেয়েছিলাম নিয়মিত। এতে ঘরে চালের চিন্তাও করতে হয়নি দুই বছর। শেষে আবার একসাথে বড় অংকে টাকাও পেলাম। তিনি আরো জানান, চার হাজার ৯৮০ টাকায় দুই মণ বীজ আদা কিনে জুমে লাগাবেন। এতে দুই হাজার টাকা চলে যাবে। বাদ বাকী টাকায় বাড়ির সন্তানদের জন্য কেনাকাটা করবেন। কারণ ছোট ছেলে ও নাতির গত সাংগ্রাইয়ের সময় কিছুই কিনে দিতে পারিনি। এ টাকায় আমার দুটোর জরুরি কাজ খুশিতে হয়ে গেলো বলেই মুচকি হাসে এসব জানিয়েছিলেন দুস্থ নারী সাইমেউ মারমা। রুমা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুপন চাকমা জানান, গত ১১ এপ্রিল উপজেলা চারটি ইউনিয়নের এক হাজার ৫৯৬ জনকে সঞ্চয় টাকা বিতরণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে লকডাউনের কারণে আসা-যাওয়া সমস্যা থাকার কারণে দুর্গম এলাকার এখনো কিছু দুস্থ নারীকে সঞ্চয় ফেরত দিতে পারেননি। তবে আগামি ২৬ এপ্রিলের মধ্যে বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন হবে বলে আশা করছেন তিনি। এ মহিলা কর্মকর্তার মতে, তালিকাভুক্ত উপকারভোগী দুস্থ নারী এক হাজার ৫৯৬ জনের সঞ্চয় টাকা মাথা পিছু চার হাজার ৯৮০ টাকা করে মোট ৭৬ লক্ষ ৬০ হজার ৮৮০ টাকা সঞ্চয় ফেরত দেয়া হচ্ছে। তার মধ্যে পাইন্দু ইউনিয়নে ৩৬৭ জন, রুমা সদর ইউনিয়নে ৫৮৯ জন, রেমাক্রীপ্রাংসা ইউনিয়নে ৩৩৬ জন ও গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নে ৩০৪ জন ভিজিডির তালিকাভূক্ত উপকারভোগী রয়েছে।