রিজওয়ানা হাসানের ওপর হামলার নিন্দায় নাগরিক সমাজ

4

পূর্বদেশ ডেস্ক

চট্টগ্রামে পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী ও সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বেলা’র অন্যান্য কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ, তাদের বহনকারী গাড়ি আটকে রাখার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন দেশের ৫২ জন মানবাধিকার ও পরিবেশ অধিকার কর্মী।
গত ২৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরের আকবরশাহ এলাকায় সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের গাড়ি লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া হয়। এ সময় তার সফরসঙ্গী বেলার কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। দুপুর দেড়টার দিকে আকবরশাহ থানাধীন লেকসিটি আবাসিক এলাকায় পাহাড় কেটে ভরাট করা ছড়া পরিদর্শনের সময় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুরুল আলম ওরফে জসিমের নেতৃত্বে তার অনুসারী দুর্বৃত্তরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনার সময় তারা ছুরি, কিরিচ, দা প্রভৃতি দেশীয় ধারালো অস্ত্র বহন করছিল। এর আগে কমিশনারের নেতৃত্বে তার লোকজন প্রতিনিধি দলের গাড়িটি আটকে রেখেছিল। পরে পুলিশ এসে গাড়ি ছাড়িয়ে নেয়।
বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, উত্তর পাহাড়তলীতে অবৈধ পাহাড় কাটার অভিযোগে অভিযুক্ত কাউন্সিলর জসিমের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তর ইতোমধ্যে একটি মামলাও দায়ের করেছে আকবরশাহ থানায়। এর আগেও ২০১৫ সালে তার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করেছিল পরিবেশ অধিদপ্তর। এ আক্রমণের ঘটনার ব্যাপারেও আকবরশাহ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
দেশের ৫২ জন মানবাধিকার ও পরিবেশ অধিকার কর্মী গতকাল শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, পরিবেশ, মানবাধিকার ও অধিকার ভিত্তিক সংগঠনগুলো প্রায়শই এ ধরনের অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন করে প্রকৃত ঘটনা সংবাদ মাধ্যম এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট তুলে ধরে তাদের নাগরিক দায়িত্ব পালন করে আসছে। তাই অধিকার ভিত্তিক সংগঠনের উপর এ ধরনের ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা উদ্বেগজনক এবং আমরা এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানাচ্ছি। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে নাগরিকদের চলাফেরা ও নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। তাই রাষ্ট্রকে সকল নাগরিকের এই অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বিবৃতিতে তাঁরা এ ঘটনার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচারের মাধ্যমে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা এবং এ ঘটনার অন্তরালে যারা আছে তাদেরও চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমে ভবিষ্যতে কোনো দখলদার, পাহাড়খেকো, নদীখেকো ও ভ‚মিদস্যু যেন এ ধরণের ঘটনা ঘটাতে সাহস না দেখায় তার জন্য সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানান। খবর বার্তা সংস্থার
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল, অর্থনীতিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ওয়াহেদউদ্দিন মাহমুদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী, নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী খুশী কবির, মানবাধিকার কর্মী ড. হামিদা হোসেন, সাবেক মন্ত্রীপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, আইন ও সালিশ কেন্দ্র’র সভাপতি অ্যাড. জেড আই খান পান্না, সিপিডি’র বোর্ড অব ট্রাস্টি ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশগুপ্ত, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (এএলআরডি)’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র’র ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, নারীনেত্রী শিরিন হক, টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, আইনবিদ ড. শাহদীন মালিক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. স্বপন আদনান, সিনিয়র আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজল দেবনাথ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের অ্যাড. তবারক হোসেইন, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত, কবি ও লেখক রাহনুমা আহমেদ, ব্লাস্টের অনারারি নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, আলোকচিত্রী ও সমাজকর্মী ড. শহিদুল আলম, ঢাবি অধ্যাপক ড. রুশাদ ফরিদী, জাবি’র অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, গবেষক ও অধিকার কর্মী রোজীনা বেগম, চবির সহযোগী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম, নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন, জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক অ্যাড. সালমা আলী, ব্যারিস্টার আশরাফ আলী, অ্যাড. মিনহাজুল হক চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহাদাত আলম, ঢাবি অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী অ্যাড. সাইদুর রহমান, কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী, ঢাবি অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, ঢাবি অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, সঙ্গীতশিল্পী ও লেখক অরূপ রাহী, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য ও প্রচার সম্পাদক দীপায়ন খীসা, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, ঢাবি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন খান, ঢাবির সহযোগী অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন কণা, কাপেং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক পল্লব চাকমা, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফারাহ তানজীন তিতিল, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী রেজাউল করিম লেনিন, আদিবাসী অধিকার কর্মী হানা শামস আহমেদ, ঢাবির সহযোগী অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুব, সাঙ্গাতের কোর গ্রæপ মেম্বার মুক্তাশ্রী চাকমা।