রাহুল গান্ধীর দুই বছরের কারাদন্ড

7

পূর্বদেশ ডেস্ক

ভারতের বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধীকে ফৌজদারী মানহানির মামলায় দুই বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। ২০১৯ সালে এক নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পদবি নিয়ে মন্তব্য করার কারণে তার বিরুদ্ধে এই রায় দিয়েছে গুজরাটের একটি আদালত। তবে এখনই জেলে যেতে হবে না তাকে। এরইমধ্যে তিনি ৩০ দিনের জন্য জামিন পেয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ পাবেন।
কংগ্রেস দলের এই পার্লামেন্ট সদস্য রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। ভারতের সাধারণ নির্বাচনের এক বছর আগে এই ঘটনা ঘটলো। খবর বিবিসি।
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় কর্নাটকের একটি সভায় রাহুল বলেছিলেন, সব চোরদের পদবি মোদী হয় কেন? আইপিএল কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ললিত মোদী। ঋণখেলাপের মামলায় অভিযুক্ত নীরব মোদী। তিনিও ফেরার। এই নামগুলি উল্লেখ করে রাহুল ওই মন্তব্যটি করে। তার তির্যক নিশানায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থাকলেও, সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর নাম বলেননি রাহুল।
নিরাভ মোদী হচ্ছেন ভারতের পলাতক হীরা ব্যবসায়ী। আর ললিত মোদী হচ্ছেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের সাবেক প্রধান যার উপর আজীবনের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড।
তার বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছিল পুর্ণেশ মোদী নামে দেশটির ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির এক আইনপ্রণেতার অভিযোগের ভিত্তিতে। তিনি বলেছিলেন, রাহুল গান্ধীর মন্তব্য সমগ্র মোদী সম্প্রদায়ের জন্য মানহানিকর।
রায়ের পর কংগ্রেস দল এক টুইটে বলেছে যে, রাহুল গান্ধী আপিল করবেন এবং আমরা লড়বো ও জিতবো। রাহুল গান্ধী এখনো জনসমক্ষে কোনো মন্তব্য করেননি কিন্তু তিনি হিন্দীতে মহাত্মা গান্ধীর একটি উক্তি নিয়ে টুইট করে বলেছেন, আমার ধর্ম সত্য এবং অহিংসার উপর প্রতিষ্ঠিত। সত্য আমার ঈশ্বর, আর অহিংসা হচ্ছে তাকে পাওয়ার উপায়।
রাহুলের বোন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী টুইটে লিখেছেন, ভীত শাসকরা রাহুল গান্ধীর কণ্ঠ রোধ করতে চাইছে। তবে আমার ভাই কখনো ভয় পায়নি, কখনো ভীত হবেও না। সে সত্য কথা বলতে থাকবে। সত্যের শক্তি ও কোটি দেশবাসীর ভালোবাসা তার সঙ্গে আছে।
ভারতের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী দুই বছর বা তার বেশি মেয়াদের কারাদন্ড হলে সাংসদ-বিধায়কদের পদ খারিজ হতে পারে। ফলে রাহুলের সে আশঙ্কা রয়েছে।
রাহুল গান্ধীর আইনজীবী কিরীট পানওয়ালা গণমাধ্যমকে বলেছেন, রায়ের সময় রাহুল গান্ধী বিচারকদের বলেছেন গণতন্ত্রের স্বার্থেই তিনি এই মন্তব্য করেছেন। তিনি জানান, বিচারক এইচএইচ বর্মার আদালতে সাজা কমানোর আবেদন জানানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, রাহুল গান্ধীর আত্মপক্ষে চারটি যুক্তি রয়েছে: প্রথমত, তিনি গুজরাটের বাসিন্দা নন এবং সেকারণে অভিযোগ দায়েরের আগে একটি তদন্ত অনুষ্ঠানের দরকার ছিল। দ্বিতীয়ত, মোদী নামে কোনো সম্প্রদায় নেই। তৃতীয়ত, মোদী পদবী রয়েছে এমন কোনো ব্যক্তির সাথে এর কোনো সম্পৃক্ততা নেই এবং চতুর্থত রাহুল গান্ধীর মন্তব্যের পেছনে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য নেই।
ভারতের ফৌজদারী মানহানি আইন ব্রিটিশ আমলে প্রণীত একটি আইন যার অধীনে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে দুই বছরের কারাদন্ড বা জরিমানা বা দুটোই হতে পারে।