রাষ্ট্রপতির সম্মতি, আইনে পরিণত ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল

41

উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যেই বিতর্কিত নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল-সিএবি, ২০১৯-এ সম্মতি দিয়েছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। পার্লামেন্টের দুই কক্ষের অনুমোদনের পর বৃহস্পতিবার রাতে ওই বিলে সম্মতি দেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে আইনে পরিণত হয়েছে বিলটি। ভারতীয় স¤প্রচারমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতির সম্মতির পর বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় গেজেট প্রকাশের মধ্য দিয়ে আইনটি কার্যকর হয়েছে।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে নিপীড়নের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব দিতে বিলটি পার্লামেন্টে উত্থাপন করে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। গত ৯ ডিসেম্বর মধ্যরাতে ৩১১-৮০ ভোটে লোকসভার অনুমোদন পায় বিতর্কিত এই বিলটি। পরে বুধবার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভারও অনুমোদন পায়। বিরোধীদলগুলো বিলটিকে ‘মুসলিমবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে প্রতিবাদ করলেও দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভিন্ন দাবিতে উত্তাল। আসাম-ত্রিপুরা, মেঘালয়ে শরণার্থীদের অবৈধ অভিবাসীর স্বীকৃতি বাতিল ও এই অঞ্চলকে সিএবি আওতামুক্ত করার দাবিতে বিক্ষোভ করছে তারা। সংশোধিত আইন অনুযায়ী ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে যাওয়া হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিষ্টান ধর্মালম্বীদের অবৈধ শরণার্থী হিসেবে গণ্য করা হবে না। তাদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার বলছে, এই আইনের মাধ্যমে প্রতিবেশি দেশগুলোতে নিপীড়নের শিকার হওয়া মানুষদের রক্ষা করা হবে।
তবে বিরোধীদের দাবি, মুসলমানদের সুরক্ষার প্রশ্ন উপেক্ষিত থাকায় আইনটি ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানকে হেয় করেছে। এদিকে পার্লামেন্টে বিলটি উত্থাপনের পর থেকে বিক্ষোভে অশান্ত হয়ে রয়েছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি রাজ্য।
বৃহস্পতিবার আসামে বিক্ষোভকারীরা কয়েকটি ভবনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। কারফিউ উপেক্ষা করে কয়েকটি স্থানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। পুলিশের গুলিতে রাজ্যটিতে নিহত হয়েছে তিন বিক্ষোভকারী। এছাড়া পাশের রাজ্য মেঘালয়েও দুই দিন ধরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মোবাইল ইন্টারনেট ও এসএমএস সেবা। রাজ্যটির রাজধানী শিলংয়ে জারি করা হয়েছে কারফিউ।