রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর উজ্জ্বল উত্তরাধিকার

10

 

এক নির্ভীক বিশ্ববরেণ্য সংগ্রামী নেত্রী, নন্দিত সফল রাষ্ট্রনায়ক, যার ভাবনায় নিরবচ্ছিন্ন দেশ গড়ার ইস্পাত-কঠিন মনোবল, উদারতায় আকাশসম, মানবিকতায় বিশাল হৃদয়ের অধিকারী। যার দূরদর্শী নেতৃত্বে অনন্য উচ্চতায় বাংলাদেশ, মুগ্ধতা ছড়ানো ব্যক্তিত্বে উদ্বেলিত বিশ্ববাসী; তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যিনি জনকের দেশপ্রেমের চেতনাকে হৃদয়ে ধারণ করে স্বদেশ এবং দেশের মানুষের কথা ভেবে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১৯৮১ সালে ফিরে এসেছিলেন তাঁর প্রিয় মাতৃভূমিতে। হন্তারকের নির্মম হত্যাযজ্ঞে ১৯৭৫ সালের সেই কালো রাতে হারিয়েছেন বাঙালির গর্বের ধন জাতির জনক এবং তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,বঙ্গমাতা,নিজের ভাইসহ পরিবারের ঘনিষ্ঠজন। পুরো পরিবারকে হারিয়ে নিঃস্ব হয়েও তিনি থেমে থাকেননি। দেশ গঠনে, দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে, অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে বাবার স্বপ্নের সোনার বাংলা নির্মাণে তিনি উজার করে দিয়েছেন নিজের মেধা, মননের উৎকর্ষতা। শৈশবে বেড়ে উঠেছেন প্রাকৃতিক নির্জনতা ঘেরা টুঙ্গিপাড়া গ্রামে। তাঁর লেখনীতে ব্যক্ত হয়েছে গ্রাম-প্রকৃতির স্বপ্নবোনা শৈশবের দিনলিপি- “শৈশবের স্বপ্ন-রঙিন দিনগুলো কেটেছে গ্রাম বাংলার নরম পলিমাটিতে,বর্ষার কাদা পানিতে, শীতের মিষ্টি রোদ্দুরে, ঘাসফুল আর পাতায় পাতায় শিশিরের ঘ্রাণ নিয়ে, জোনাক-জ্বলা অন্ধকারে ঝিঁঝির ডাক শুনে, তাল-তমালের ঝোপে বৈঁচি, দিঘির শাপলা আর শিউলি- বকুল কুড়িয়ে মালা গেঁথে,ধুলোমাটি মেখে,বর্ষায় ভিজে খেলা করে।” আজও গ্রামের প্রকৃতি, শৈশব তাঁকে পিছু টানে, ফিরে যান সোনালি স্বপ্নের বাসভূমে।
যার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান একজন রাজনৈতিক প্রজ্ঞার মানুষ, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি এবং বাঙালির বঙ্গবন্ধু, তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন বাবার সংগ্রামমুখর পথচলা , দুঃখীমানুষের মুখে হাসি ফোটানোর ব্রত, মানুষের সুখের জন্য নিজের জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বিসর্জন দিয়েছিলেন, জেলজুলুম, ফাঁসির মঞ্চ কোনও কিছুই তাকে তাঁর লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর এ সাহসিক অভিজ্ঞান তাঁর রক্তের উত্তরাধিকারের মধ্যে পদ্মা, মেঘনা, যমুনার স্রোতস্বিনী ধারায় প্রবাহিত। এ উজ্জ্বল উত্তরাধিকারের একমাত্র কাÐারি বঙ্গবন্ধু তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনা। ষাটের দশক বাঙালির আত্মোপলব্ধিতে আত্মপরিচয় সন্ধানের সুবর্ণ সময়। ছাত্র আন্দোলনের গৌরবোজ্জ্বল ষাটের দশকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাও ছিলেন ওই সময়ের সক্রিয় যোদ্ধা। রাজনীতির পাঠ গ্রহণ করেছেন রাজনীতির বৃহত্তর পাঠশালায়। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের যে আন্দোলন- সংগ্রাম তা তিনি ঘনিষ্ঠভাবে দেখেছেন এবং সামিল হয়েছেন।
১৫ আগস্টের হত্যাকান্ড বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকেও নিশ্চিহ্ন করে দিতে চেয়েছিল পাকিস্তানি রাষ্ট্র কায়েমীর দল। ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। তিনি ঝঞ্জা – বিক্ষুব্ধ বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগকে ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনেন। তিনি অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন তাঁর অদম্য সংগ্রামে। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে যিনি আওয়ামী লীগের গুরু দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তিনি ৭৫ বছর বয়সে এখনো উদ্দীপিত, নিজের আলোয় বিভাসিত বিশ্বনেত্রী। রাজনৈতিক জীবনের দীর্ঘ সংগ্রামী চলার পথ পুষ্পিত ছিল না। প্রতিনিয়ত বিপদ এবং মৃত্যুর ঝুঁকি তাঁকে তাড়া করেছে, বিপদগ্রস্ত করেছেন নিজের জীবন। হত্যার অপচেষ্টা চলেছে ক্রমাগত। তারপর ও তাঁর এগিয়ে চলাকে রোধ করতে পারেনি ষড়যন্ত্রকারীর দল। জীবন মৃত্যুকে সাথে করে তিনি এগিয়ে চলেছেন নির্দ্বিধায়। একজন সফল সরকার প্রধান হিসেবে তিনি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে অনন্য উচ্চতায় আরোহণ করেছেন এবং বাংলাদেশকে স্থাপন করেছেন বিশ্বমঞ্চে। তিনি তাঁর জীবনকে মানুষের কল্যাণে উৎসর্গ করেছেন তার স্বীকৃতিও তিনি পেয়েছেন, ভূষিত হয়েছেন মর্যাদাপূর্ণ অসংখ্য পদক ও পুরস্কারে। বঙ্গবন্ধু যে বাংলাদেশের স্বপ্ন বুনন করেছিলেন তাকেই পূর্ণতা দিতে চলেছেন শেখ হাসিনা। তাঁর মধ্যেই মূর্ত হয়ে উঠছে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। তিনি সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠে একটি উন্নত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য নিরন্তর কাজ করে চলেছেন। ক্লান্তির কাছে হার মানেননি। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও সংগ্রাম তাঁর মেধায়, প্রজ্ঞায় দীপ্যমান। যার আলোয় উদ্দীপ্ত ও অনুপ্রাণিত। মানুষের কল্যাণে জীবন উৎসর্গ করে বারবার অকপটে বলেছেন তাঁর ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। বঙ্গবন্ধুকন্যার ওপর দেশের মানষের প্রত্যাশা আকাশচুম্বী। উজ্জ্বল উত্তরাধিকারের গুরুভার নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও তাঁর জনকের আত্মোৎসর্গ এবং তাঁর নিজের অমলিন ভাবমূর্তি বজায় রাখতে তিনি বদ্ধপরিকর। ভূরাজনীতিতে অতুলনীয়া এক জননেত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষেত্রে শুধু নয়, এখন তাঁর নিয়ন্ত্রণে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উজ্জীবিত তাঁর দল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সংহত করে বাংলাদেশকে অগ্রগতিশীলতায় পূর্ণতা দেবেন এবং তাঁর নেতৃত্বে এই দেশের অগ্রগতি অব্যাহত রাখবেন। পিতার দূরদৃষ্টির দূরবীনে শেখ হাসিনার দৃষ্টির প্রবহমানতায় দেশ এগিয়ে চলেছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। পিতার মতো প্রচন্ড আত্মবিশ্বাসী তিনি। নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো প্রকল্প সম্ভব করার আত্মবিশ্বাসে ভর করে পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়ন দেশ-বিদেশে প্রশংসিত। ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ কেবল স্বপ্ন নয়, বাংলাদেশের সর্বক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির এক বিপ্লব ঘটিয়েছে। বঙ্গবন্ধু যেমন সারা জীবন রাজনীতি করেছেন দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার জন্য, তেমনি বঙ্গবন্ধুকন্যা তৃণমূল পর্যায়ে গরিব-অসহায় মানুষের জন্য নানা সহায়তা প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। একদিকে যেমন তিনি কঠোর প্রশাসক অন্যদিকে তিনি মমতাময়ী জননী। তাঁর মানবিকতা মুগ্ধতা ছড়িয়েছে সর্বত্র । নেতৃত্বের গুণাবলির কারণে শেখ হাসিনা আজ দেশে-বিদেশে সম্মানিত। তাঁর প্রজ্ঞা ও দূরদৃষ্টির কারণে বিশ্ব নেতাদের প্রথম কাতারে স্থান করে নিয়েছেন।
বিজয়ের ৫০ বছরে অর্থ ও বাণিজ্যের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের অর্জন বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। দারিদ্র দূরীকরণ, অর্থনৈতিক মুক্তি, রিজার্ভ, প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয়ে উন্নত দেশগুলোকেও টেক্কা দিচ্ছে বাংলাদেশ। বার্ষিক মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সর্বশেষ পরিমাণ ২৪ হাজার মেগাওয়াট। খাদ্যশস্যের বাম্পার উৎপাদন । শিক্ষা, গড় আয়ু, আমদানি, রফতানি, রিজার্ভ, ডলারের মান, জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার এবং মাথাপিছু আয়ের মতো প্রতিটি সূচকে এখন বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। অনেক সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ এখন ভারত থেকেও এগিয়ে।
৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে জন্ম নেয়া এই বাংলাদেশকে আজকের অবস্থানে আসতে অতিক্রম করতে হয়েছে অনেক প্রতিবন্ধকতা। অর্জনের পরিসংখ্যানও নিতান্ত অপ্রতুল নয়। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৮টি লক্ষ্যের মধ্যে শিক্ষা, শিশুমৃত্যুহার কমানো এবং দারিদ্র্য হ্রাসকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভ‚তপূর্ব উন্নতি প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছে। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন প্রণিধানযোগ্য মন্তব্য করেছেন । তাঁর মতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিশ্বকে চমকে দেয়ার মতো সাফল্য আছে বাংলাদেশের। বিশেষভাবে শিক্ষা , নারীর ক্ষমতায়ন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার ও জন্মহার কমানো, গরিব মানুষের জন্য শৌচাগার ও স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান এবং শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম অন্যতম।
শিক্ষাখাতে অর্জন, নারী শিক্ষাকে এগিয়ে নেয়ার জন্য উপবৃত্তি ব্যবস্থা, নারীর ক্ষমতায়নে অর্জন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নকে বাস্তবতায় রূপ দিতে বাংলাদেশ সরকার নিয়েছে যুগান্তকারী সব পদক্ষেপ। দেশের তৃণমূল পর্যায়ে প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারি সেবা পৌঁছে দেবার অভিপ্রায়ে দেশের ৪৫৫০টি ইউনিয়ন পরিষদে স্থাপন করা হয়েছে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার। তৈরি করা হয়েছে বিশ্বেও অন্যতম বিশাল ন্যাশনাল ওয়েব পোর্টাল। দেশের সবকটি উপজেলাকে আনা হয়েছে ইন্টারনেটের আওতায়। টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে বর্তমানে বাংলাদেশে মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা ১২ কোটি ৩৭ লক্ষ এবং ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা ৪ কোটি ৪৬ লক্ষে উন্নীত হয়েছে। কৃষিতে কৃতিত্ব এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন , কৃষিখাতে অভ‚তপূর্ব কিছু সাফল্যের জন্য বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধি পেয়েছে । বিদেশে শ্রমিক প্রেরণ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ স্থাপন করেছে অনন্য দৃষ্টান্ত। জাতিসংঘ শান্তি মিশনে ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ যোগদানের পর এ পর্যন্ত বিশ্বের ৩৯টি দেশের ৬৪ শান্তি মিশনে খ্যাতি ও সফলতার সাথে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এ যাবৎকালে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী ১১৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সর্বাগ্রে। বিদ্যুৎখাতে সাফল্য, শিল্প ও বাণিজ্য খাতে অর্জন বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের পাশাপাশি প্রসার ঘটেছে আবাসন, জাহাজ, ওষুধ, ও প্রক্রিয়াজাতকরণ খাদ্য শিল্পের। বাংলাদেশের আইটি শিল্প বহির্বিশ্বে অভ‚তপূর্ব সুনাম কুড়িয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ অন্তত ১০টি মেগা প্রকল্প বঙ্গবন্ধুকন্যা বর্তমান সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে আলোর মুখ দেখেছে। বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ ঘটেছে। বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
যে হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে বটমলেস বাস্কেট বলে বিদ্রুপ করেছিলেন সেই বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। দারিদ্র্য দূরীকরণ, অর্থনৈতিক মুক্তি, রিজার্ভ, প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয়ে এখন উন্নত দেশগুলোকে টেক্কা দিচ্ছে বাংলাদেশ। ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ আবর্তিত হচ্ছে পৃথিবীর কক্ষপথ ঘিরে। দেশের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ কর্মযজ্ঞ।
বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়ন, মানবিকতা ও সাফল্যের প্রশংসা করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস। বাংলাদেশের এ অভাবনীয় সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেরও ভ‚য়সী প্রশংসা করেন জাতিসংঘ মহাসচিব । জাতিসংঘ মনে করছে যে, একটা দারিদ্র্য্রক্লিষ্ট বাংলাদেশ এখন একটা চাঙ্গা অর্থনীতির দেশে পরিনত হয়েছে।
করোনা মহামারিতেও দেশের মানুষের জীবন ও জীবিকা সচল রাখার মানসে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার অসীম সাহসিকতা আর মানবিকতা দিয়েই জয় করছেন সবকিছু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও যুগান্তকারী পদক্ষেপের ফলেই বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকা আনা সম্ভব হয়েছে। বিশ্বের অনেক ধনী দেশও যেখানে পর্যাপ্ত টিকা পায়নি সেখানে দেশের মানুষের জন্য বিনামূল্যে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। অতি সম্প্রতি ভারত করোনা টিকা রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় বাংলাদেশ ভ্যাকসিন সঙ্কটে পতিত হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী অবিচল পরিকল্পনায় ঠিকা সমস্যার সমাধান করেছেন। এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, যত টাকা লাগুক, টিকা আনবই। মানুষের প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা ও আস্থা এবং দেশের মাটি ও মানুষের প্রতি কমিটমেন্টই তাঁকে নিয়ে গেছে সমৃদ্ধির সোপানে । বৈরী স্রোতের বিরুদ্ধে তিনি তাঁর সংগ্রামকে অভীষ্ট লক্ষ্যে নিয়ে গেছেন। দেশকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর এখন অর্থনৈতিক মুক্তির দৃপ্ত সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুকন্যাই পারেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পথ ধরে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যেতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বিকল্প নেই। কেবল স্বপ্ন দেখানোই নয়, স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পথও দেখিয়েই চলেছেন প্রধানমন্ত্রী । জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশের অবস্থান গোটা বিশ্বের মধ্যেই ঈর্ষণীয়। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যেই অর্থনীতিতে বিশ্বের শীর্ষ ২৬টি দেশের মধ্যে উঠে আসবে বাংলাদেশ। বিশ্লেষকেরাও বলছেন, বাংলাদেশ যে গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে উন্নত বিশ্বের কাতারে উন্নীত হতে এই দেশকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত অপেক্ষাও করতে হবে না। উন্নয়ন আর উত্তরণের পথের দিশারী শেখ হাসিনা আমাদের একমাত্র ভরসা ও আশ্রয়স্থল। দেশের অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে নিঃশঙ্ক চিত্তে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। দেশরতœ শেখ হাসিনা আমাদের বাতিঘর। এ মহীয়সী নেত্রী বাঙালি জাতির স্বপ্নের সারথি হয়ে আরো দীর্ঘ কাল আমাদের মাঝে অক্ষয় থাকুক । জন্মদিনে বিশ্বনন্দিত নেত্রীকে শ্রদ্ধা ও ফুলেল অভিনন্দন জানাচ্ছি। তাঁর সুস্বাস্থ্য ও শতায়ু কামনা করছি। জয় বাংলা, জয়তু শেখ হাসিনা।

লেখক : রেজিস্ট্রার(ভারপ্রাপ্ত), ইউএসটিসি
কলামিস্ট, প্রাবন্ধিক ও সাহিত্যসেবী