রামুর সেই শিক্ষককে ৭ দিনের ছুটি, ঘটনা তদন্তে কমিটি

4

পূর্বদেশ ডেস্ক

ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে রামু সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ হোছাইনকে অপসারণ চেয়ে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনের পর ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল থেকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে, বাংলা বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ হোছাইনকে অপসারণ না করে ‘নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে’ তাকে সাতদিনের ছুটি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সাধারণ শিক্ষকরা বলছেন, কলেজের অধ্যক্ষ মুজিবুল আলমের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় মোহাম্মদ হোছাইনের ব্যাপারে তদন্ত কার্যক্রম কতটা নিরপেক্ষ হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
জানা গেছে, গত সোমবার দুপুরে কলেজের গণিত বিভাগের সহকারি অধ্যাপক সুপ্রতীম বড়ুয়াকে প্রধান করে সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল হক, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আমম জহির ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক হুমাইরা আকতারকে সদস্য করে চারজনের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন অধ্যক্ষ মুজিবুল আলম। খবর বাংলানিউজ’র
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) এক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক কাজ করতে গিয়ে কক্সবাজার সৈকতের কবিতা চত্বর এলাকা সংলগ্ন ঝাউবাগানে শিক্ষার্থীদের কাছে ধরা পড়েন রামু সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ হোছাইন। ভুক্তভোগী নিজেই শিক্ষকের ঘৃণ্যকাজের প্রতিবাদ ও তার মুখোশ উন্মোচনে সহপাঠীদের খবর দেন। সে সুবাদেই ছাত্র-ছাত্রীরা ঝাউবাগানে নিয়ে মোহাম্মদ হোছাইনকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। পরে তাকে উত্তমমধ্যম দিয়ে কক্সবাজার আদালত পাড়ায় নিয়ে আসেন তারা। সেখানে আইনজীবীর সামনে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পান তিনি।
এসব ঘটনার পর যৌন হয়রানির প্রতিবাদ ও ছাত্রীকে কেলেঙ্কারিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে মোহাম্মদ হোছাইনের অপসারণ ও শাস্তি দাবিতে গত রবিবার সকালে কলেজ প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করে রামু সরকারি কলেজের কয়েকশ শিক্ষার্থী। এসব বিষয়সহ শিক্ষার্থীরা কলেজের অধ্যক্ষের নানা অনিয়ম দুর্নীতির ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।
পরে গত সোমবার শিক্ষকদের নিয়ে জরুরি সভা ডাকেন অধ্যক্ষ। এতে উপস্থিত ছিলেন ২৫-৩০ জন শিক্ষক। তারা সবাই যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় কলেজের ভাবমূর্তি দারুণভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে দাবি করে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
সভার ব্যাপারে পরে কয়েকজন শিক্ষক গণমাধ্যমকে জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক হোছাইনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এ সভা ডাকা হলেও দুই ঘণ্টার আলোচনায় অধ্যক্ষের বক্তব্যে সৃষ্ট ঘটনার বিচারের দাবিতে কেন মানববন্ধন করা হয়েছে? কারা করেছে? এ কর্মসূচির পেছনে কার কার ইন্ধন রয়েছে? কে ব্যানার করেছে? কে পোস্টার করেছে- বিষয়গুলো প্রাধান্য পেয়েছে।
তারা আরও জানান, গণমাধ্যমে কেন কথা বলেছেন জিজ্ঞেস করে শিক্ষকদের কাছেও এর কারণ জানতে চেয়েছেন অধ্যক্ষ মুজিবুল আলম। তারা যুক্তি তুলে ধরলে অধ্যক্ষ তাদের শাসান এবং এ ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে সবাইকে নিষেধ করা হয়।