রামগড়ে মিলছে না আগের মত খেজুর রস

28

রতন বৈষ্ণব ত্রিপুরা, রামগড়

শীত পুরোদমে শুরু হলেও প্রতি বছরের মতো পার্বত্যাঞ্চলে বিভিন্ন এলাকা থেকে গাছিরা খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করবেন এটাই ছিলো স্বাভাবিক। কিন্তু কেজি প্রতি ৪০-৪৫ টাকা দিলেও খেজুর রস মিলছেনা আগের মত। এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলেন, গ্রামে গ্রামে খেজুর গাছ কেটে ফেলায় বিভিন্ন স্থানে জ্বালানী কাঠ হিসেবে ব্যবহার হয়ে যাওয়াতে বিগত ৫-৬ বছর খেজুর গাছ আশংকাজনক মাত্রায় কমতে শুরু করেছে। যার ফলে এখন উপজেলায় তীব্র শীতের মৌসুমেও খেজুর রসের চাহিদা থাকলেও রসের সংকট দেখা দিয়েছে। বিত্তবানরা অনেক কষ্টে অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে খেজুর রসের মৌসুমী স্বাদ গ্রহণ করতে পারলেও পাহাড়ি এলাকার গরীব ও হত দরিদ্র শ্রেণির মানুষ সেই স্বাদ নিতে পারেন না আগের মত।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শন করে দেখা গেছে, উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে দূর দূরান্তে ২-৪টি খেজুর গাছ থেকে গাছিরা রস সংগ্রহ করতে দেখা গেলেও রামগড় লেকের দু’পাশের খেজুর গাছগুলো গাছির অভাবে না কাটায় রামগড় সদর ও পৌরসভার সোনাইপুল-খাগড়াবিল সড়কের দু’পাশের ৪৫-৫০টি খেজুর গাছ প্রতিবছর এলাকাটির আশপাশের মানুষের রসের চাহিদা মিটিয়ে পাশের এলাকায়ও সরবরাহ করা হলেও চলতি বছর গাছগুলোর মালিকানাসহ বিভিন্ন সমস্যা থাকায় গাছিরা রস সংগ্রহ করতে না পারায় উপজেলার রামগড়, পাতাছড়া, এ দুই ইউনিয়ন ও পৌর এলাকাগুলোতে এখন উচ্চ মূল্যেও খেজুর রস খুঁজে পাওয়া যায় না, যার ফলে তীব্র শীতেও ঘরে ঘরে মিলছেনা শীতের ভাঁপা পিঠা ও খেজুর রসে তৈরি নানা ধরনের পায়েস।
রামগড় পৌর এলাকার গাছি মো. মোস্তফা জানান, প্রতি বছর শীতকালে নিয়মিত ৮০-৯০টি গাছ রসের জন্য প্রস্তুত করলেও এবছর গাছের মালিকানাসহ বিভিন্ন সমস্যাজনিত কারণে গাছগুলো রসের জন্য প্রস্তুত করতে দেয়া হচ্ছেনা, যার কারণে আশপাশের এলাকার ১৫-২০টি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে থাকি যা গ্রাহকদের চাহিদার তুলনায় অতি নগণ্য। তিনি আরো বলেন, ১২-১৫ বছর ধরে শীতের সময় খেজুর গাছের খেজুর রস সংগ্রহ করে গ্রাহকদের মাঝে বিক্রয় করে আসছি। এক সময় প্রচুর রস পাওয়া যেতো, এখন গাছও কম কিন্তু চাহিদা বেশি। অগ্রিম অর্ডার দিয়েও গ্রাহকদের পরিমাণ মত রস দিতে পারিনা।