রানবন্যার ম্যাচে শ্রীলংকার জয়

33

চলতি বিশ্বকাপের ৩৯তম ম্যাচে মুখোমুখি হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর শ্রীলঙ্কা। উইন্ডিজদের ২৩ রানে হারিয়ে টুর্নামেন্টের তৃতীয় জয় তুলে নিল লঙ্কানরা। আট ম্যাচ খেলা শ্রীলঙ্কা ৮ পয়েন্ট নিয়ে উঠে গেল টেবিলের ছয়ে। আর সমান সংখ্যক ম্যাচ খেলে মাত্র এক জয়ে উইন্ডিজের অবস্থান নয়ে।
টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন উইন্ডিজ দলপতি জেসন হোল্ডার। ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৩৮ রান তোলে লঙ্কানরা। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে সেঞ্চুরি করেছেন আভিস্কা ফার্নান্দো। ওপেনার কুশল পেরেরা ফিফটির দেখা পান। জবাবে ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩১৫ রান তোলে ক্যারিবীয়ানরা। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান নিকোলাস পুরান। ফ্যাবিয়ান অ্যালেন ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটির দেখা পান।


ব্যাটিংয়ে নেমে লঙ্কান ওপেনার এবং দলপতি দিমুথ করুনারতেœ আর কুশল পেরেরা তুলে নেন ৯৩ রান। করুনারতেœ ৪৮ বলে চারটি চারের সাহায্যে করেন ৩২ রান। আরেক ওপেনার কুশল পেরেরা ৫১ বলে আট বাউন্ডারিতে করেন ৬৪ রান। চার নম্বরে নামা কুশল মেন্ডিস ৪১ বলে চারটি বাউন্ডারিতে করেন ৩৯ রান। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ২০ বলে দুই চার, এক ছক্কায় করেন ২৬ রান।
তিন নম্বরে নামা আভিস্কা ভার্নান্দো ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি হাঁকান। ইনিংসের ৪৮তম ওভারে বিদায়ের আগে করেন ১০৪ রান। তার ১০৩ বলে সাজানো ইনিংসে ছিল ৯টি চার আর দুটি ছক্কা। ইসুরু উদানা ৩ রানে বিদায় নেন। লাহিরু থিরিমান্নে ৩৩ বলে চারটি চারের সাহায্যে ৪৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। ৬ রানে অপরাজিত থাকেন ডি সিলভা।
উইন্ডিজ দলপতি জেসন হোল্ডার ১০ ওভারে ৫৯ রানের বিনিময়ে তুলে নেন দুটি উইকেট। শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ৫ ওভারে ৪৬ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। কার্লোস ব্রাথওয়েট ৭ ওভারে ৫৩ রান খরচায় কোনো উইকেট পাননি। ফ্যাবিয়েন অ্যালেন ৮ ওভারে ৪৪ রান খরচায় তুলে নেন একটি উইকেট। শেল্ডন কটরেল ১০ ওভারে ৬৯ রান দিয়ে পান একটি উইকেট। ওশানে থমাস ১০ ওভারে ৫৮ রান খরচায় তুলে নেন একটি উইকেট।
৩৩৯ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে উইন্ডিজ ওপেনার সুনীল অ্যামব্রিস ৫, তিন নম্বরে নামা শাই হোপ ৫ রান করে বিদায় নেন। আরেক ওপেনার ক্রিস গেইল ৪৮ বলে একটি চার আর দুটি ছক্কায় করেন ৩৫ রান। শিমরন হেটমায়ার ২৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন। দলপতি জেসন হোল্ডারের ব্যাট থেকে আসে ২৬ রান। কার্লোস ব্রাথওয়েট (৮) খুব বেশিদূর যেতে পারেননি।
১৯৯ রানের মাথায় টপঅর্ডারের ৬ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে ক্যারিবীয়ানরা। সেখান থেকে দলকে টানতে থাকেন নিকোলাস পুরান এবং ফ্যাবিয়ান অ্যালেন। এই জুটিতে আসে ৮৩ রান। অ্যালেন ফেরেন ক্যারিবীয়ানদের তৃতীয় রানআউট হয়ে। তার আগে ৩২ বলে সাতটি চার আর একটি ছক্কায় করেন ৫১ রান। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের পর প্রথমবার বোলিংয়ে আসা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস নিজের প্রথম বলেই বিদায় করেন সেঞ্চুরিয়ান পুরানকে। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে তিনি করেন ১০৩ বলে ১১৮ রান। তার ইনিংসে ছিল ১১টি চার আর চারটি ছক্কার মার। ওশানে থমাস, শেল্ডন কটরেল, শ্যানন গ্যাব্রিয়েলরা জেতাতে পারেননি দলকে।
ডি সিলভা ১০ ওভারে ৪৯ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। ১০ ওভারে ৬৭ রান দিয়ে উইকেট পাননি ইসুরু উদানা। ১০ ওভারে ৭৬ রান খরচায় একটি উইকেট পান কাসুন রাজিথা। জেফরি ভান্ডারসে ৭ ওভারে ৫০ রান দিয়ে একটি উইকেট পান। দিমুথ করুনারতেœ ১ ওভারে ৭ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন। লাসিথ মালিঙ্গা ১০ ওভারে ৫৫ রান দিয়ে তুলে নেন তিনটি উইকেট। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ২ ওভারে ৬ রান দিয়ে একটি উইকেট পান।
এবারের বিশ্বকাপে লঙ্কানদের খেলা সাত ম্যাচের দু’টি ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১০ উইকেটের হার এরপরে আফগানদের বিপক্ষে বৃষ্টি আইনে ৩৪ রানের জয়। এরপর বাকি দুই ম্যাচ পরিত্যক্ত। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হেরেছে ৮৭ রানের বড় ব্যবধানে আর এরপরই শক্তিশালী ইংলিশদের হারিয়েছে ২০ রানের ব্যবধানে। আগের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৯ উইকেটে হেরেছে।
উইন্ডিজরা বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত খেলা আট ম্যাচের একটিতে জিতেছে। সেটিও আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তানের বিপক্ষে। ইংল্যান্ড, বাংলাদেশের কাছে পরাজয়। আর দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছিল। আগের ম্যাচেও ভারতের কাছে হেরেছিল ১২৫ রানের বিশাল ব্যবধানে।