রাজনীতি আজ বড় সংকটে

81

আমি যদি এলাকার প্রতিনিধিত্বের জন্য নির্বাচন করতে চাই, তবে আমাকে পেশীশক্তির কাছে মাথা নত করতে হবে। পেশীশক্তির কাছে না গিয়ে যদি নির্বাচনে হারি, আপনারাই বলবেন আমার কোন ভিত্তি নেই। সুশাসনের জন্য রাজনীতি করতে হলে যোগ্যতা দেখে ভোট নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু তা হচ্ছে না। রাজনীতি আজ বড় সংকটে।
গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। হাটহাজারী সেন্ট্রাল স্টুডেন্টস ফোরামের দুই যুগপূর্তি উদযাপন করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে।
রাজনৈতিক অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে জাতীয় পার্টির এ সাংসদ বলেন, নির্বাচনে আমাদের দেশের মানুষ যোগ্যতা দেখে ভোট দেয় না। মার্কা দেখে ভোট দেয়। কোন নির্দিষ্ট মার্কায় যদি খারাপ লোকও দাঁড়ায় মানুষ তাকেই ভোট দেয়। আমার প্রশ্ন- জন প্রতিনিধি ঠিক করতে নির্দিষ্ট মার্কা দেখে কেনো খারাপ লোককে ভোট দিতে হবে?
ছাত্র রাজনীতির প্রসঙ্গ টেনে আনিসুল ইসলাম বলেন, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়কার ছাত্রনেতারা ভালো পড়াশোনা করতেন। তারা ব্যবসা করতেন না, পাজারো গাড়িতে চড়তেন না। প্রতিনিধি নির্বাচনের সময় তখন পেশীশক্তিকে মনোনীত করা হতো না। ভালো পড়াশোনা ও মেধাকে মূল্যায়ন করা হত। কঠিন সময়েও তারা শক্তি প্রয়োগ করে আন্দোলন করেছেন। যদি আন্দোলন না করতো, তবে ভাষা বা স্বাধীনতা পেতাম না আমরা। তাই ছাত্র সমাজকে সচেতন হতে হবে। কারণ আজকে সিদ্ধান্তই আমার ভবিষত ঠিক করবে। রাজনীতিতে হাজার হাজার ছাত্রের মধ্যে মাত্র ২০০ জন সবরকম সমস্যা সৃষ্টি করছে। তাদের মোকাবেলা করতে হবে।
সংগঠনটির সভাপতি সালাউদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক তারেক ইকবাল চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার, প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী।
উদ্বোধকের বক্তব্যে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, হাটহাজারী সেন্ট্রাল স্টুডেন্টস ফোরাম এ অঞ্চলের একটি গর্বিত সংগঠন। এ সংগঠনের মর্যাদা-সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে তাদের আরও বেশি দায়িত্বশীল ভ‚মিকা রাখতে হবে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান শিক্ষার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ যাতে কোনভাবেই বিঘিœত না হয় সেদিকে তাদেরকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
এর আগে কেক কেটে সংগঠনের দুই যুগপূর্তি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন অতিথিরা। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শামীম, ফোরামের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ রাশেদ চৌধুরী, মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন এবং সাবেক সভাপতি জাবেদ ইকবাল চৌধুরী। বিকালে পরিবেশিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।