রাঙ্গুনিয়ায় রাতের আঁধারে পাহাড় নিধন

8

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় রাতের আঁধারে কাটা হচ্ছে পাহাড়। উপজেলার ইছাখালি গুচ্ছগ্রাম চা বাগিচা এলাকায় সন্ধ্যা নামলে শুরু হয় পাহাড় কাটাযজ্ঞ। সন্ধ্যা নামলেই পাহাড় কাটার সরঞ্জামাদি ও লোকজন পৌঁছে যায়। রাতভর চলে পাহাড় কাটার উৎসব।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে পৌরসভার ইছাখালি গুচ্ছগ্রামের চা বাগিচা এলাকায় পৌঁছতে দেখা যায় অন্তত দেড় কিলোমিটার সড়কের পাশ কেটে রাস্তা তৈরি করা হয়। তবে এই এলাকায় কোনো বসতি দেখা যায়নি।
সন্ধ্যার দিকে মূল স্পটে গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ের পাশে স্কেভেটর রাখা। পাশে ছোট আকারে ঝুপড়ি চা দোকান। জানতে চাইলে চা দোকানদার বাদশাহ বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে পাহাড় কাটার খবর পেয়ে কিছু বাড়তি লাভের আশায় দোকানটা চালায়। মাটি কাটার বেশ কিছু লোকজন রাতে এখানে অবস্থান করে, রাতে কিছু বেচা বিক্রি হয়। তবে পাহাড় কারা কাটছে জানতে চাইলে তিনি বলতে রাজি হননি।
ইছাখালি গুচ্ছগ্রাম চা বাগিছা এলাকা থেকে ফিরতে পথে ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল ওই এলাকায় যেতে দেখা যায়। ওই দলে ছিল স্কেভেটর চালক ও পাহাড় কাটার শ্রমিক।
জানতে চাইলে স্কেভেটর চালক মো. মোশারফ বলেন, ‘মাহাবু নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১৫ দিনের জন্য স্কেভেটরটি ভাড়া নেয়া হয়। স্কেভেটর আমি চালাই, স্থানীয় খোরশেদ ও জাহেদ পাহাড় কাটার জন্য আমাকে ঠিক করে। টাকা দেয় সেজন্য গাড়ি চালাই আমরা। গত ২৫ জানুয়ারি থেকে দুইদিনে এখন পর্যন্ত ৮০ ট্রাক মাটি রাঙ্গুনিয়া কলেজ গেইট ও সরফভাটায় দেয়া হয়েছে’। পাহাড় কাটা অপরাধ বলেও তিনি স্বীকার করেন।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, রাতভর বেপরোয়াভাবে ভারি মাটির ট্রাক চলাচলের কারণে রাস্তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গ্রামীণ সড়কে দ্রুত বেগে ট্রাক চলাচলের স্থানীয় লোকজনের চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে। মাটিবাহী দ্রæতবেগে ট্রাক চালানোর কারণে এক ব্যক্তি আহত হয়। তবে তার নাম পাওয়া যায়নি।
পাহাড় কাটার সাথে জড়িত খোরশেদের মুঠোফোনে জানতে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘পাহাড় নয় রাস্তা তৈরি করে দিতে কিছু পাহাড় কাটা হচ্ছে’।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, ‘রাঙ্গুনিয়ার ইছাখালির পাহাড় কাটার বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে’।