রাঙ্গুনিয়ায় নিজের বিয়ে ঠেকিয়ে দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ১৪ বছর বয়সী শারমিন আক্তার নামে এক স্কুলছাত্রী। শারমিন উপজেলার পোমরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। বাবা-মা জোরপূর্বক তার বিয়ের আয়োজন করলে সে বিষয়টা প্রধান শিক্ষককে জানায়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে বিয়েটা পÐ হয়ে যায়।
শারমিন বলেন, ‘পরিবারে আমি একমাত্র মেয়ে। আমার বাবা ভ্যান চালান, বড় ভাই সিএনজি অটোরিকশা চালক ও মেঝো ভাই অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। হঠাৎ মা-বাবা আমার বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। বলেছি, আমি ছোট, এখন বিয়ে নয়, পড়ালেখা করবো। তাছাড়া তোমরা তো জানো না স্বামীটা ভাল না খারাপ।
যদি স্বামী খারাপ হয়, আমাকে ছেড়ে দে, তখন কি হবে। কিন্তু তারা শোনে নাই।
বাবা কথা না শোনায় অবশ্য আমি দমে যাইনি।’
স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাহায্যে স্থানীয় প্রশাসনকে তার বিয়ের কথা জানায় শারমিন। প্রশাসনের হস্তেক্ষেপে থেমে যায় বিয়ে। তার এমন সাহসিকতায় মুগ্ধ সকলে।
সে আরও বলে, ‘মনে হচ্ছিল বিয়ে হলে জীবনটা এখানেই শেষ। আমি পড়ালেখা করে আরও বড় হতে চাই।’
পোমরা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদ সভাপতি মফজ্জল আহমদ কন্ট্রাক্টর বলেন, ‘উপজেলার পোমরা ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ড কাদেরীয়া পাড়া এলাকার মো. মিজানের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সবার ছোট শারমিন আক্তার। সে বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ালেখা করছে। গতকাল শনিবার সকাল ৯টার দিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে ছাত্রীটি এসে কান্না করছিল এবং বলছিল, বাবা-মা তার বিয়ে ঠিক করেছে এবং রবিবার ফেনীতে নিয়ে আপন খালাতো ভাইয়ের সাথে তার বিয়ে দেওয়ার যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি নিজে গিয়ে বাল্যবিয়েটি বন্ধ করে দেন।’
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘সকাল ১০টার দিকে আমি ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ফোন পেয়ে শিক্ষার্থী সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে তাদের বাড়িতে যাই। সেখানে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাই। তার পরিবারকে বাল্যবিয়ের কুফল ও নারী শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে বুঝালে তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পারেন। পরে মুচলেকা নিয়ে বাল্যবিয়েটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়াও সম্পূর্ণ বিনা খরচে যেন স্কুলে তার পড়ালেখা নিশ্চিত হয় এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের তার খোঁজখবর রাখার জন্য দায়িত্ব দিয়ে আসি। আমি শারমিনের সাহসিকতায় মুগ্ধ। এভাবে যদি সবাই সাহস নিয়ে এগিয়ে আসে তবে দেশে বাল্যবিয়ে শূন্যের কোটায় নেমে আসবে।’
রাঙ্গুনিয়ায় ৪ শত
লিটার মদ উদ্ধার
আটক ১
রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি
রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চন্দ্রঘোনা কদমতলী ইউনিয়ন থেকে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৪শ লিটার মদ আটক করেছে পুলিশ। গত বুধবার দুপুরে ইউনিয়নের দোভাষী বাজার আমতলী সিড়ি ঘাট এলাকা থেকে এ মদ উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ১লক্ষ ২০ হাজার টাকা। এসময় জাফর হোসেন জনি (৩৫) নামে একজনকে আটক করা হয়।
আটককৃত জনিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য রাঙ্গুনিয়া দোভাষী বাজার ফেরীঘাট মাদক পাচারের নিরাপদ স্পটে পরিণত হয়েছে। রাঙ্গুনিয়া থানার এস আই মাহাবুব হোসেন জানান, মদ পাচারকারীরা পাচারের লক্ষে ওঁৎ পেতেছিল। সময় মত পাচারের জন্য অপেক্ষা করছিল। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। পাচারকারীরা আমাদের দেখে পালিয়ে যায়। এর মধ্যে একজনকে আটক করতে সক্ষম হই। মদ পাচারকারী সিন্ডকেট ধরতে আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি।
