রাঙ্গুনিয়ায় তরমুজের দাম বেড়ে দ্বিগুণ

42

মাসুদ নাসির, রাঙ্গুনিয়া

প্রচন্ড তাপদাহে তরমুজের চাহিদা থাকা স্বাভাবিক। দেশের বিভিন্ন জেলায় এবারে তরমুজের বাস্পার ফলন হয়েছে। সৃজন শুরু থেকে এ পর্যন্ত বৃষ্টি না হওয়ায় তরমুজের সাথে জড়িত কৃষক ভাল দাম পেয়েছে। তার পরেও তরমুজের দাম বাজারে সাধারণ মানুষের কেনার বাইরে। রাঙ্গুনিয়ার রমজান শুরুর আগে তরমুজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। রমজানের আগেও তরমুজের দাম সাধারণ নিম্ন আয়ের মানুষের কেনার বাইরে চলে যায়। রমজান শুরু হলে সুস্বাদু ফল তরমুজ এর দাম আরো বেড়ে যায়। এবার পহেলা বৈশাখ ঘিরে তরমুজের দাম যেন আকাশ ছোয়া। রাঙ্গুনিয়ার পথে প্রান্তরে সব জাযগায় তরমুজের ছড়াছড়ি। রাঙ্গুনিয়ার প্রায় বাজারে প্রতিদিন বড় ও মাঝারি সাইজের তরমুজ ভর্তি ট্রাক ঢুকতে দেখা যায়। গত ১১ এপ্রিল তরমুজের দাম গত ১ সপ্তাহের ব্যবধানে একেকটিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারিভাবে তরমুজের দাম নির্ধারণ না থাকায় দোকানিরা নিজেদের মতো করে দাম হাঁকাচ্ছেন এবং আদায় করে নিচ্ছেন। এতে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানের ফুটপাত অবৈধভাবে দখল করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তরমুজ সাজিয়ে রেখেছেন। এর মধ্যে দেশীয় তরমুজসহ বিভিন্ন দেশের জাতের তরমুজ সংখ্যাই বেশি। পাকা তরমুজের পাশাপাশি গাছ থেকে ছিঁড়ে আনা আধা-পাকা তরমুজ রাখা হয়েছে। ছোট সাইজের একটি তরমুজ ২শ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। আবার মাঝারি সাইজের প্রতি পিস ৪শ টাকা থেকে ৫শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান, দোভাষী বাজার মরিয়াম নগর চৌমহনী, রোয়াজার হাট, ইছাখালী গৌডাউন,শান্তির হাট, রানীর হাট, ধামাইর হাট সহ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার প্রায়ন্থানে ব্যাপকভাবে নানা জাতের তরমুজের সারি দেখা যায়। দাম অস্বাভাবিক হলেও রমজানে যেন ইফতারীতে তরমুজের উপস্থিতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ বেড়েই চলেছে। দাম যতই হোক সাধারণ মানুষ তরমুজ কিনছে ব্যাপকভাবে। রাঙ্গুনিয়ার গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ও ফুটপাত দখল নিয়ে তরমুজ বেচাকেনা করছে দেদারছে। লিচুবাগানে খুচরো তরমুজ ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন জানান, আমরা খুচরো ব্যবসায়ী তরমুজের পাইকারী আড়ত থেকে কিনে বিক্রি করে থাকি। গত সপ্তাহের চেয়ে এ সপ্তাহে প্রতি তরমুজের দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বেশী কিনতে হয়েছে। এতে আমাদেরও বেশী দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। চন্দ্রঘোনা লিচুবাগানে তরমুজ কিনতে আসা মো. নুর উদ্দিন সওদাগর নামে এক ব্যক্তি বলেন, কিছুদিন আগেও যে তরমুজের দাম ছিল ১০০-১৫০ টাকা, রমজানের শুরু হতে না হতেই এখন সেই তরমুজ ৪শ-৫শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। রহমত উল্লাহ শাহীন জানান, লিচুবাগানের ডুবাই মার্কেটের সামনে জন চলাচলের পথ বন্ধ করে তরমুজ ব্যবসা করছে জনৈক তরমুজ ব্যবসায়ী। তরমুজ ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছেমত দাম নিচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। চন্দ্রঘোনায় তরমুজের পাইকারী আড়তদার মো. ইছাক মেম্বার জানান, এবারে পার্বত্য এলাকা কিংবা চট্টগ্রামে বিভিন্নস্থানে তরমুজ তেমনভাবে ভাল ফলন হয়নি। আমরা নোয়াখালীর সুর্বণচর ও বরিশালের ভোলা থেকে তরমুজের ক্ষেত কিনে এখানে আনছি।
গত বছর তরমুজের যে ক্ষেত কিনতাম এবাওে তার তিন গুন দিয়ে আমাদের ক্ষেত তিনতে হয়েছে। সে জন্য এবারে তরমুজের দাম বেড়েছে। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি ) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব চৌধুরী জানান, ফুটপাত দখল করে যে কোন কিছু বিক্রয় করা দন্ডনীয় অপরাধ। এখন তরমুজ তরমুজ পাওয়া যাচ্চে বেশি, এসময় দাম বৃদ্ধি থাকা মোটেও স্বাভাবিক না। যারা অতিরিক্ত দাম নিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হবে।