রাঙামাটি-বান্দরবানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

68

রাঙামাটির কাপ্তাই ও বান্দরবানের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে পৃথক উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
জানা গেছে, রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের পাড় দখল করে নির্মাণ করা কয়েকটি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও রাঙামাটি জেলা প্রশাসন যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পল্লব হোম এবং বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাঙামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পল্লব হোম বলেন, উচ্ছেদ অভিযান কার্যত পানি উন্নয়ন বোর্ডের। তারা জেলা প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছে। আমরা সহায়তা দিচ্ছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাঙামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম বলেন, সারা দেশের প্রত্যেক জেলায় নদী রক্ষায় উচ্ছেদ অভিযান চলছে। আমরা রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের পাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করেছি। অভিযান অব্যাহত থাকবে। উচ্ছেদ হওয়া অবৈধ দখলদার আবদুল লতিফ (৫৫), মো. আনোয়ার হোসেন (৫৮) ও শাহাব উদ্দিন (৪৮) বলেন, আমরা ভূমিহীন। থাকার জায়গা নেই। এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছি। সরকার চলে যেতে বললে আমরা স্বেচ্ছাই চলে যাব। তবে এজন্য ১০ দিনের সময় চাই।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি রাঙামাটি শহরের রিজার্ভমুখ এলাকায় কাপ্তাই হ্রদের পাড়ে দুটি বহুতল ভবন নির্মাণ করছিল রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। একটি কমিউনিটি সেন্টার এবং অন্যটি পর্যটন মোটেল। ভবন দুটির নির্মাণ নিয়ে আপত্তি জানান স্থানীয়রা।
এ অবস্থায় গত জুলাই মাসে জেলা শহীদ মিনার সংলগ্ন কাপ্তাই হ্রদের পাড়ে নির্মাণাধীন জেলা পরিষদের ৫ তলাবিশিষ্ট পর্যটন মোটেল ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
রিজার্ভমুখে শহীদ আবদুল আলী একাডেমি বিদ্যালয়ের উত্তর পাশে কাপ্তাই হ্রদের পাড়ে নির্মাণাধীন জেলা পরিষদের অপর স্থাপনা কমিউনিটি সেন্টারটির বহুতল ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে সদরসহ জেলাজুড়ে কাপ্তাই হ্রদের জায়গা দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা। ব্যাপক হারে দখল করা হচ্ছে হ্রদের জায়গা। কেবল রাঙামাটি শহর এলাকায় কাপ্তাই হ্রদের পাড় দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে কয়েক হাজার অবৈধ স্থাপনা। এসব স্থাপনা নির্মাণের ফলে রাঙামাটিতে দিন দিন বেড়ে উঠছে প্রচুর অপরিকল্পিত বস্তি। এখান থেকে নিক্ষেপ করা ময়লা-আবর্জনায় দূষিত হচ্ছে কাপ্তাই হ্রদের পানি ও আশেপাশের পরিবেশ। ভরাট হচ্ছে হ্রদের তলদেশ। ফলে কাপ্তাই হ্রদ ও পানি দিন দিন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
অন্যদিকে বান্দরবান শহরের বিভিন্ন নদী-নালা, খাল ও বিলের উপর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। দুপুরে বান্দরবান সদরের অফিসার্স ক্লাব সংলগ্ন মিচকি খালের উপর প্রথমে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় মিচকি খালের উপর অবৈধ ভাবে নির্মাণাধীন কয়েকটি স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়। অভিযানকালে অবৈধ দখলদারদের অনেকেই তাদের মালামাল নিয়ে সরে যেতে চেষ্টা করে।
অভিযানের নেতৃত্ব দেন বান্দরবান পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান। তিনি জানান, সারাদেশের মত বান্দরবান শহরের বিভিন্ন নদী-নালা, খাল-বিলের উপর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও জানান, বান্দরবানে ২৯টি অবৈধ স্থাপনার তালিকা করা হয়েছে। আরও তালিকা তৈরি করা হবে এবং সব ভেঙে দেওয়া হবে।
এদিকে বান্দরবানে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করায় প্রশাসনকে স্বাগত জানিয়েছে সুশীল সমাজ।