রাঙামাটির ‘৩০০ বছরের’ পুরনো চাপালিশ গাছ

36

পূর্বদেশ ডেস্ক

পাহাড় ঘেরা শহর রাঙামাটির জেলা প্রশাসকের বাংলোর প্রবেশ পথের পাশেই রয়েছে সুবিশাল একটি চাপালিশ গাছ। গাছের গায়ে লাগানো বোর্ড অনুসারে এই চাপালিশ গাছের বর্তমান বয়স ৩১৮ বছর, দৈর্ঘ্য ১০৩ ফুট এবং পরিধি ২৫ ফুট। সত্যিই কি গাছটির বয়স তিনশ পেরিয়ে গেছে?
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে আসলে তেমন কোনো তথ্য নেই, জানতে হবে। তবে বোটানিস্ট বা হর্টিকাল্চারিস্টরাই ভালো বলতে পারবে। কারণ বয়স বের করার একটা সায়েন্টিফিক প্রক্রিয়া আছে।
গাছের বয়স গণনার পদ্ধতি নিয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (দক্ষিণ) অজিত কুমার রুদ্র বলেন, গাছের বয়স গণনার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটা হলো, ঋতুচক্র হিসেবে গাছ সব ঋতুতে বাড়ে না।
সাধারণত গ্রীষ্ম ও বর্ষা ঋতুতে গাছের বৃদ্ধি ঘটে বেশি। শীতকালে গাছ বাড়ে না। গাছ না বাড়ার কারণে প্রতি বছর সে সময় গাছের চারপাশে একটা রিংয়ের মত তৈরি হয়। যন্ত্রের সাহায্যে সেই রিংগুলো গণনা করে গাছের বয়স বার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বৈজ্ঞানিক গণনা ছাড়াও স্থানীয়ভাবেও গাছের বয়স গণনা করা হয়। গাছ লাগানো থেকে হিসেব করে বছর গুণে অথবা জনশ্রুতি থেকেও অনুমান ভিত্তিক গাছের বয়স গণনা করা হয়।
এই চাপালিশ গাছের বয়স আদৌ ৩১৮ বছর কি না তা নিয়ে অজিত কুমার রুদ্র বলেন, এখানে বয়সের বিষয়টি অনেক বছর ধরে চলে এসেছে। চলমান একটা জনশ্রæতির বিষয়ে নতুন করে কিছু বলার থাকে না। যে সময় থেকে গাছটির বয়সের বিষয়টি প্রকাশিত, সেসময় নিশ্চয় ওই দুই পদ্ধতির কোনো একটি দ্বারা চাপালিশ গাছের বয়স নির্ণীত হয়েছিল এর আকার, আয়তন, পরিধিসহ। এক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্নতা থাকতে পারে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত, প্রাকৃতিক দূর্যোগ, ভূমিধস এসবের কারণে। এই ধরনের গাছকে সাধারণত সেঞ্চুরিয়ান ট্রি বলা হয়, জানালেন তিনি।
স্থানীয় পরিবেশ সংগঠন গ্লোবাল ভিলেজের প্রধান নির্বাহী ও সাংবাদিক ফজলে এলাহী মনে করেন, চাপালিশ গাছটি এই শহরের ইতিহাসেরই অংশ।
ডিসি বাংলো পার্ক সংলগ্ন চায়ের দোকানে বসা স্থানীয় বাসিন্দা ইদ্রিস মিয়া বলেন, আমার বয়স এখন ৫২। অনেক বছর ধরে এই এলাকায় বসবাস, বাপ-দাদার মুখেও শুনেছি এই গাছের কথা, অনেক বছরের পুরানো এটি।