‘রাখে আল্লাহ মারে কে’

39

নেছার আহমেদ খান

সেই ২১ আগস্ট, রক্তাক্ত বিভীষিকাময় দিন কি হয়েছিল আজকের নতুন প্রজন্ম জানা দরকার। ১৭ বছর আগের এই দিনে মুহুর্মুহু গ্রেনেডের বিকট বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ। মানুষের আর্তনাদ আর কাতর ছোটাছুটিতে তৈরি হয় এক বিভীষিকা। গোটা দেশ স্তব্ধ হয়ে পড়ে ওই হামলায়।
২০০৪ সালের এই দিনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শেখ হাসিনার সমাবেশে অতর্কিতে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয় শেখ হাসিনাকে। মারা যান আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী। সাংবাদিকেরাও আহত হন।
তখন ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার। সেদিন ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবিরোধী’ শান্তি সমাবেশের আয়োজন করেছিল তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ। আর সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ বিরোধী আন্দোলনই ছিলো বিএনপি-জামায়াতের স্বার্থে আঘাতের মূল কারণ। আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে প্রধান অতিথি ছিলেন। সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি সমাবেশের আগে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে স্থাপিত অস্থায়ী ট্রাকমঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা শেষ হওয়ার পরপরই তাঁকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা শুরু হয়। বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হতে থাকে একের পর এক গ্রেনেড। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুহুর্মুহু ১৩টি গ্রেনেড বিস্ফোরণের বীভৎসতায় মুহূর্তেই মানুষের রক্ত-মাংসের স্তুপে পরিণত হয় সমাবেশস্থল। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ পরিণত হয় এক মৃত্যুপুরীতে।
ওই দিন শুধু গ্রেনেড হামলাই নয়, সেদিন শেখ হাসিনার গাড়ি লক্ষ্য করেও চালানো হয় ছয়টি গুলি। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও তিনি আহত হন, তাঁর শ্রবণশক্তি চিরদিনের মতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হামলার পরপরই শেখ হাসিনাকে কর্ডন করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর তৎকালীন বাসভবন ধানমন্ডির সুধা সদনে। ২১ আগস্টের রক্তাক্ত হামলার ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন ১৬ জন। পরে সব মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৪ জনে। রক্তাক্ত-বীভৎস ওই ভয়াল গ্রেনেড হামলার মধ্য দিয়ে আওয়ামীলিগকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন তৎকালীন জোট সরকার বিএনপি-জামায়াত।
‘রাখে আল্লাহ মারে কে ?’
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট এক বিভীষিকাময় দিন।।বিএনপি জামাত দেশরতœ জননেত্রী শেখ হাসিনার সন্ত্রাস বিরোধী জনসভায় বোমা হামলা করে আইভি রহমান সহ অনেক নেতা কর্মীকে নিহত করে। ভাগ্যের সহায় আল্লাহর রহমত ছিল তাই জননেত্রী শেখ হাসিনা মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন কিন্তু আইভি রহমান সহ অনেকেই নিজেদের জীবন দিয়ে দেন।
২০০৯ সালের নির্বাচন পরবর্তী সময় হতে আজ তিনতিনবার নির্বাচনে জয়ী হয়ে সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত নেতৃত্বের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার দেশের উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সূত্রে বলা যায়- ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় যদি শেখ হাসিনাকে হত্যা করা হতো, তবে আজ বাংলাদেশ হয়তো দেশের মানচিত্র হতেই মুছে যেতো।
২১ আগস্ট যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা।

জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু।
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।