রহস্যজনক বেতার তরঙ্গ শনাক্ত

26

মহাজগতের বহুদূরের একটি ছায়াপথ থেকে আসা রহস্যজনক সংকেত পাওয়ার বিস্তারিত প্রকাশ করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। কানাডার একটি টেলিস্কোপে ওই সংকেত ধরা পড়েছে। তবে সংকেতের অর্থ বা কোথা থেকে সেটি আসছে, তা এখনো বিজ্ঞানীরা বের করতে পারেননি।
এর মধ্যে ১৩টি দ্রুত গতির বিস্ফোরণের মতো বেতার শব্দ রয়েছে, যেটি বারবার ঘুরে ঘুরে আসছে। বিজ্ঞানীরা এটিকে এফআরবি বলে বর্ণনা করছেন। এই শব্দটি প্রায় দেড় হাজার আলোকবর্ষ দূরের কোন উৎস থেকে আসছে। এ ধরণের ঘটনা অতীতে আরো একবার ঘটেছিল। সেটি আরেকটি টেলিস্কোপের মাধ্যমে জানা গিয়েছিল। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইনগ্রিড স্টেয়ারর্স বলছেন, এটা জানার পর আরো একবার এই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, মহাবিশ্বের অন্য কোথাও কিছু রয়েছে। এ ধরণের শব্দ আরো পাওয়া গেছে এবং গবেষণার জন্য আরো উৎসের সন্ধান মিললে, আমরা হয়তো এই সৃষ্টি সংক্রান্ত রহস্য বুঝতে শুরু করবো। এটি কোথা থেকে আসছে আর কি কারণে সেটির উৎপন্ন হচ্ছে।
ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ওকানাগান উপত্যকায় চারটি একশো মিটার লম্বা অ্যান্টেনা নিয়ে শাইমি গবেষণাগারটি অবস্থিত, যেখানে এই সংকেত ধরা পড়েছে। এই গবেষণাগার থেকে প্রতিদিন আকাশে অনুসন্ধান চালানো হয়। গতবছর এই টেলিস্কোপটি কাজ শুরু করার পর মহাবিশ্বের ১৩ টি মহাজাগতিক বিস্ফোরণের শব্দ পেয়েছে, যার মধ্যে একটি কয়েকবার ফিরে ফিরে এসেছে।
কানাডার রেডিও টেলিস্কোপ শাইমি সম্প্রতি ন্যাচার পত্রিকায় এই গবেষণার তথ্যটি প্রকাশিত হয়। এতে ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রীহর্ষ তেন্ডুলকার জানান, আমরা দ্বিতীয় বারের মতো একটি সংকেতের পুনরাবৃত্তি পেয়েছি। দ্বিতীয় সংকেতটি একেবারে প্রথমটির মতোই ছিল। এটা আমাদের ওই সংকেতের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আরো ধারণা দিচ্ছে। এফআরবি হল সংক্ষিপ্ত কিন্তু ক্ষুদ্র বেতার তরঙ্গ, যা হয়তো মহাবিশ্বের আরেক প্রান্ত থেকে পৃথিবীতে এসেছে।
এ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা এরকম ৬০টি একক, দ্রুত গতির বিস্ফোরণের বেতার তরঙ্গ সনাক্ত করতে পেরেছেন, যার মধ্যে দুইটির পুনরাবৃত্তি হয়েছে। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, প্রতিদিন আকাশে এরকম সহস্রাধিক বেতার তরঙ্গ ঘুরে বেড়াচ্ছে। কি কারণে এরকম বেতার তরঙ্গ তৈরি হচ্ছে, তা নিয়ে অনেক মতবাদ চালু রয়েছে। এসব ধারণার মধ্যে আছে শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্র নিয়ে কোন নিউট্রন তারকার খুব দ্রুত ঘূর্ণন, দুইটি নিউট্রন তারকার একত্রে মিশে যাওয়া। আর অল্প কিছু পর্যবেক্ষকের মতে, ভিনগ্রহের প্রাণীর মহাকাশযান থেকে আসা তরঙ্গ।