রমজান মাস আসার পূর্বেই খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে হবে

10

আগামী ১২ মার্চ হতে রমজান শুরু হবে। এখনো মাস দেড়েক সময় আছে। পাঁচ মন্ত্রীর বৈঠকে ইতোপূর্বে এ বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে, সিদ্ধান্তও হয়েছে। এসংবাদ প্রচার হবার পর হতে অসাধু ব্যবসায়ীরা অপকৌশল শুরু করে দিয়েছে। তারা রমজান আসার পূর্বেই ছোলা-ডাল, রসুন-পেঁয়াজসহ মুসলমানদের রমজানে যে সকল খাদ্যদ্রব্যের অতিরিক্ত চাহিদা থাকে, সে সব ভোজ্য পণ্যের মূল্য অকারণে এখন হতে বাড়তি করে দিয়েছে। দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার প্রতিবেদন হতে জানা যায় ব্যবসায়ীরা বর্তমান বাজারে রমজান সংশ্লিষ্ট নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে বিক্রি করছে। মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে তারা কোন অজুহাতও দেখাতে পারছে না। এরই মধ্যে চাল ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি চালের মূল্য ৫/৬ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করছে। যখন সংশ্লিষ্ট পাঁচ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরা রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বৈঠক করে, তখন দেশে চালের বাজার অকারণে অস্থির হয়েছিল। চালের দাম বৃদ্ধি বিষয়ে সরকার ও প্রশাসন হতে কোন তড়িৎ পদক্ষেপ কিংবা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। সরকারি সংশ্লিষ্ট পক্ষ হতে বার বার বলা হয় নিত্য খাদ্যদ্রব্যের কোন সংকট দেশে নেই। পর্যাপ্ত মজুদও দেশে আছে, এরপরও ব্যবসায়ীরা সমগ্র বাজার ব্যবস্থাকে তাদের ইচ্ছে মতো চালায়। কিন্তু সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ হতে প্রতিরোধমূলক জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না কেন ? -এ প্রশ্নের উত্তর জনগণ জানে না। যে কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে যায়। চালের দাম বাড়লো এখনো সেই বাড়তি দামে চাল বিক্রি হচ্ছে। সরেজমিনে ব্যবসায়ী সমাজ ও বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে যথাযথ পদক্ষেপের মাধ্যমে কার্যকর করার ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে সরকার যত কথাই বলুক না কেন বাজার নিয়ন্ত্রণ তথা দ্রব্যমূল্য জনগণের নাগালের ভেতর রাখা সরকারের পক্ষে সম্ভব হবে না। দফায় দফায় বৈঠক করে কোন লাভও হবে না। দেশের সাধারণ মানুষ যদি কোন সুফল না পায় বাজার সংক্রান্ত মন্ত্রণালয় সমূহের বৈঠক, আলোচনা, সমালোচনা এবং সিদ্ধান্ত কোন কাজে আসবে না।
অসাধু ব্যবসায়ীরা রমজান আসার দেড় মাস আগ হতে সংশ্লিষ্ট দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে ফেলছে। বাড়াচ্ছে রমজানে বাড়াতে যেন না হয় এই অসৎ উদ্দেশ্যকে মাথায় রেখে। তারা যদি তাদের এ অপকৌশল কাজে লাগিয়ে আগেভাগে দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে ফেলতে পারে তা হলে রমজানে তাদের দাম বাড়াতে হবে না। আগে থেকেই যদি রমজান সংশ্লিষ্ট দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে ফেলে তা হলে মন্ত্রীদের বৈঠকে রমজানে দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি রোধে যে সিদ্ধান্তই গ্রহণ করা হোক না কেন তা জন্মের পূর্বেই বধ হয়ে যাবে। অসাধু ব্যবসায়ীদের এহেন অপকৌশল কালবিলম্ব না করে এখন হতে কাঁচাবাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ শুরু করা জরুরি। বাজারের খাদ্যদ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে অনতিবিলম্বে কাজ শুরু করা জেলা প্রশাসক, স্থানীয় প্রশাসন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর হতে শুরু করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে সততা নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে এগিয়ে আসতে হবে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ভাইরাসে দেশের সাধারণ মানুষ ভয়াবহ ভাবে আক্রান্ত।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উক্ত বিষয়ে সম্যক অবগত আছেন। তিনি অবগত আছেন বলেই নির্বাচনী ইশতিহারে দেশের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণকে সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করেছেন। মন্ত্রী পরিষদ গঠনের পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম ও প্রধান কাজ বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ। দ্রব্যমূল্য ও মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছে দেশে সর্বস্তরের জনগণ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর নির্বাচনী ওয়াদা কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে জরুরি প্রয়োজনীয় নির্দেশ প্রদান করলে এক দিনেই সমগ্র দেশের অস্থির বাজার ব্যবস্থা স্থিতিশীল হয়ে যাবে এমন আশাবাদ সমগ্র দেশবাসীর। দেশের মানুষের আয় এবং ব্যয়ে সামঞ্জস্য বর্তমানে নেই। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ দু’বেলা স্বাভাবিক ভাবে খেতে পারছে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে দেশের পণ্যবাজার স্থিতিশীল হোক এটাই বর্তমানে দেশের মানুষের একান্ত কামনা।