রমজানের শুরুতেই জমে উঠছে ঈদ বাজার

14

এম এ হোসাইন

রমজানের মাত্র শুরু, এরই মধ্যে ঈদ বাজার নিয়ে শুরু হয়েছে মাতামাতি। নগরীর প্রতিটি মার্কেটসহ অভিজাত শপিংমলগুলোতে ভিড় বেশি না হলেও বেড়েছে ব্যস্ততা। অনেকে আগেভাগে সেরে নিচ্ছেন ঈদের কেনাকাটা। প্রতিটি শপিংমল সাপ্তাহিক বন্ধের দিন প্রত্যাহার করেছে। বাহারি পোশাকের পসরা সাজিয়ে ক্রেতাদের আকর্ষণ বাড়াতে আগেভাগেই বসেছেন দোকানিরা। মার্কেটে মার্কেটে ক্রেতাদের সমাগমও ধীরে ধীরে বাড়ছে। মূলত ভিড় এড়িয়ে কেনাকাটা করতে পছন্দ করেন এমন ক্রেতারাই এখন শপিংমল মুখি হচ্ছেন।
এদিকে দুপুর থেকেই নগরীর কয়েকটি সড়কে বাড়ছে যানবাহনের চাপ। কিছু শপিং মলকে ঘিরেই বাড়তি চাপের এ প্রভাব। মধ্যরাত পর্যন্ত এমন চাপ থাকছে। ঈদ পর্যন্ত ক্রমেই এই চাপ আরও বড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
গতকাল শনিবার দুপুর থেকে আন্দরকিল্লা, চকবাজার, প্রবর্তক মোড়, নিউ মার্কেট মোড় থেকে তিন পুলের মাথা, টেরিবাজারের মুখে বাড়তি গাড়ির চাপ লক্ষ্য করা গেছে। নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার, নিউ মার্কেট, শপিং কমপ্লেক্স, চকবাজারের গুলজার টাওয়ার, বহদ্দারহাট স্বজন সুপার মার্কেট, কাজীর দেউড়ি ভিআইপি টাওয়ারসহ প্রায় মার্কেটে ক্রেতাদের পদচারণা দেখা যায়। পছন্দের পোশাক দরদামে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের।
রমজানের শুরুর এই সময়ে বেশি ভিড় পড়েছে টেরিবাজারে। টেরিবাজারের ফুটপাতের জনস্রোত ঠেলে মার্কেটে গিয়েও দেখা গেল ক্রেতাদের আনাগোনা। দোকানিরা তাদের পোশাক দেখাচ্ছেন, ক্রেতারা একের পর এক দেখছেন। পছন্দ হলেই হচ্ছে দরদাম। পছন্দের বাহারি পোশাক নিয়েই ফিরছেন ক্রেতারা।
টেরিবাজারে কেনাকাটা করতে আসা আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, পরিবারের জন্য কিছু পোশাক কিনেছি। এরমধ্যে কিছু পোশাক আছে সেলাই করতে হবে। আগেভাগে না কিনলে সেলাই করার সুযোগ থাকবে না। তাছাড়া আর কয়েকদিন পর থেকে মার্কেটে ভিড় বেড়ে যাবে। তখন পছন্দ করে কেনার সুযোগই থাকবে না। সবার হই-হুল্লোড়ে পছন্দ করাই কষ্টকর হয়ে পড়বে। তাই ভিড় না বাড়ার আগে কেনাকাটা সেরে নিলাম। যদিও মাঝখানে আরেকবার এসে ছোটখাট কিছু জিনিস কিনতে হবে।
সারা বছরের যতগুলো উৎসব রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি কেনাকাটা হয় ঈদুল ফিতর ঘিরে। তাই আগেভাগেই পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়েছেন দোকানিরা। দোকানে নতুন নতুন বাহারি ডিজাইনের পোশাক, জুতা, কসমেটিক তুলে ক্রেতা আকর্ষণে সব চেষ্টাই করছেন তারা। আবার কেউ পণ্যের দামেও দিচ্ছেন ছাড়। তবে রোজার শুরুর দিকে কাক্সিক্ষত ক্রেতাসমাগম না হলেও সামনের দিনগুলোর জন্য আশাবাদী বিক্রেতারা।
ভিআইপি টাওয়ারের এইচএম গার্মেন্টসের স্বত্বাধিকারী আতিকুর রহমান জানান, অনেকেই ঈদের কেনাকাটা শুরু করে দিয়েছেন। মানুষজন আসছেন, দেখছেন। বিক্রি বেড়েছে, কয়েকদিন পর পুরোদমে বিক্রি শুরু হবে। যারা ভিড় পছন্দ করেন না তারা এখন আসছেন। আমরাও ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী পোশাক দেখানোর চেষ্টা করছি।
শুধু মার্কেটগুলোই নয় বেচাবিক্রি জমে উঠেছে ফুটপাতেও। জনবহুল ফুটপাত এখন সরব হয়ে উঠেছে। ক্রেতারাও কিছুটা কম দামে কেনাকাটা করার জন্য ভিড় করছেন সেখানে। বালিশের কাভার থেকে শুরু করে পোশাক, বিছানার চাদর,পর্দা, তৈজস- সবকিছুরই দেখা মিলছে ফুটপাতে।
ভ্যানে করে পোশাক বিক্রেতা রুস্তম আলী বলেন, ঈদের বিক্রি সেভাবে শুরু হয়নি। তবে আগের চেয়ে বিক্রি বেড়েছে। ১৫ রমজানের পর সবাই কেনাকাটার জন্য ভিড় করবে। তখন ভ্যানের কাস্টমারও বেড়ে যাবে।
রোজার শুরু থেকেই তাপমাত্রা বেড়েছে। পরের দিনগুলোতে ভিড় বাড়তে পারে শপিংমলগুলোতে। তাই ভিড়ের বিড়ম্বনা এড়াতে অনেকে শুরুতেই কেনাকাটা সারছেন। আবার কেউ কেউ ঘুরে দেখছেন, হিসাব কষছেন পছন্দ আর সাধ্যের। পছন্দের পোশাক দেখে রাখছেন, যে কোন সময় এসে কিনে নিবেন। তবে গরম মাথায় রেখে সুতি হালকা রঙের পোশাককে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন ক্রেতারা।