রণক্ষেত্র পঞ্চগড়ে ১৭ প্লাটুন বিজিবি

18

পূর্বদেশ ডেস্ক

পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে দিনভর কয়েকশ লোক পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। এসময় ট্রাফিক পুলিশের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, দোকানপাট ভাঙচুর ছাড়াও আহমদিয়া সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর তারা মিছিল নিয়ে পঞ্চগড় শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে এলে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় বলে সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিয়া জানান।
এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে বিজিবি মোতায়েন করা হয় বলে বাহিনীর জনসংযোগ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
রাতে বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘পঞ্চগড়ে আহমদিয়া মুসলিম জামাতের সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভের ঘটনায় সংঘর্ষ; উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে’।
গতকাল শুক্রবার থেকে আগামিকাল রবিবার পর্যন্ত তিনদিন শহরের উপকণ্ঠে আহমদনগরে এ জলসার আয়োজন করেছিল আহমদিয়া সম্প্রদায়। তার আগেই এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল এবং পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা। এ সময় এক তরুণের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রাতে পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা সাংবাদিকদের বলেন, ‘একজনের মারা যাওয়ার খবর আমরা পেয়েছি। তবে কী কারণে মারা গেল তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের পরই মারা যাওয়ার কারণ বলা যাবে। শহরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ, বিজিব ও র‌্যাব সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে’।
নিহত তরুণের নাম আরিফুর রহমান (২৭) বলে জানা গেছে। মাথায় আঘাত পেয়ে মারাত্মক জখম হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। খবর বিডিনিউজের
তবে রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল মৃত্যুর খবরটি এখনও নিশ্চিত নয় বলে জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা উড়াউড়া খবর শুনছি’।
এর আগে সন্ধ্যায় ওসি লতিফ বলেন, আহমদনগরে কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার কথা শুনেছি। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ছাড়া সেখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও র‌্যাব রয়েছে’।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জলসা বন্ধের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার দুপুর ও রাতে কয়েকটি সংগঠন জেলা শহরে বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা সড়ক অবরোধ করলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সাধারণ মানুষ ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। এর ধারাবাহিকতায় জুমার নামাজ শেষে আহমদিয়াদের তিন দিনব্যাপী বার্ষিক সালানা জলসা বন্ধসহ তাদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে খন্ড খন্ড বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলগুলো শহরের তেঁতুলিয়া সড়কের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে বড় পরিসরে চৌরঙ্গী মোড়ের দিকে আসে।