রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় মেটাতে বিকল্প পথ খুঁজছে সিডিএ

60

আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় মেটানোর বিকল্প অপশন খুঁজে বেড়াচ্ছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। ফ্লাইওভারের রক্ষণাবেক্ষণে প্রতিমাসে চার লাখ টাকারও বেশি ব্যয় হচ্ছে। এ ব্যয় মেটানোর জন্য কার পার্কিং, দোকান বরাদ্দ, টোল আদায়সহ কয়েকটি অপশন বের করেছে সিডিএ। একাধিক বিকল্প অপশন থেকে যে কোনও একটি পছন্দ করবে প্রতিষ্ঠানটি। তবে আপাতত টোলের আওতায় আসছে না ফ্লাইওভারটি।
ফ্লাইওভারের আলোকায়ন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, পিলারে লাগানো সবুজ সিনথেটিক টার্ফ পরিষ্কার রাখা ও রোড ডিভাইডারের বাগান রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য দরকার পড়ছে এ খরচের। সিডিএর পক্ষ থেকে এ খরচ বহন করার মতো কোনো ফান্ড নেই। তাই ফ্লাইওভার থেকেই কিভাবে আয় করা যায় সে চিন্তায় ব্যস্ত সংস্থাটি। ফ্লাইওভারের নিচে খালি জায়গায় কার পার্কিং, সুপারশপ বা দোকান বরাদ্দ দেওয়া, নার্সারি বরাদ্দ দেওয়া, ফ্লাইওভার থেকে টোল আদায় করাসহ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে সিডিএ। এরমধ্যে যে কোনো একটি অপশন ব্যবহার করে ফ্লাইওভারের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় মেটানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাবে সিডিএ।
এ বিষয়ে কথা হলে সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, টোল চালুর বিষয়টি সম্পুর্ণ বানোয়াট কথা। আমরা এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। ফ্লাইওভার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অর্থের প্রয়োজন। এই অর্থ সংস্থানের জন্য আমরা কয়েকটি অপশন বের করেছি। কার পার্কিং, দোকান বরাদ্দসহ অনেকগুলো বিকল্প অপশন আছে। এরমধ্য থেকে যেটা ভালো হবে সেটাতেই আমরা যাবো। ফ্লাইওভারের রক্ষণাবেক্ষণ তো করতে হবে।
আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার প্রকল্পটি ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) অনুমোদন দেয়। ৫ দশমিক ২ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৫৪ ফুট প্রস্থের ফ্লাইওভারটির আনুষ্ঠানিক নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয় ২০১৪ সালের ১২ নভেম্বর। বাস্তবে এর নির্মাণকাজ শুরু হয় পরের বছরের মার্চে। শুরুতে এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৪৬২ কোটি টাকা। পরে র‌্যাম্প ও লুপ যুক্ত হওয়ায় প্রকল্প ব্যয় বেড়ে হয় ৬৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে মূল অবকাঠামো তৈরিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫০ কোটি টাকা এবং র‌্যাম্প ও লুপ তৈরির কাজে ২৪৬ কোটি টাকা। বর্ধিত প্রকল্পের মেয়াদ ছিলো ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত। এ বছরের ১৬ জুন ফ্লাইওভারটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স- রেনকেন (জেভি) একটি লেইন পরীক্ষামূলকভাবে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়। পরবর্তীতে প্রকল্পের উভয় লেন এবং রেম্প ও লুপ খুলে দেওয়া হয়। ফ্লাইওভারটি মুরাদপুর এন মোহাম্মদ কনভেনশন সেন্টারের সামনে থেকে শুরু হয়ে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের পশ্চিম গেটের সামনে হয়ে লালখানবাজারে এসে নেমেছে। গাড়ি চলাচলের সুবিধার্থে ফ্লাইওভারে ৬টি র‌্যাম্প নির্মিত হবে। নগরীতে নির্মিত ফ্লাইওভারগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে দীর্ঘ। এই ফ্লাইওভারের সাথে যুক্ত হবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। বহদ্দারহাট (এমএ হান্নান) ফ্লাইওভার, দেওয়ানহাট ফ্লাইওভার, কদমতলী ও আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারে বিনা খরচে যাতায়াতের ব্যবস্থা থাকলেও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে টোল দিয়েই যাতায়াত করতে হবে।