যোগাযোগ উন্নয়নের গৌরবগাঁথা

20

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী

মুক্তির মহানায়ক জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু কন্যা সরকার প্রধান দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অদম্য অগ্রগতিতে ধারাবাহিক দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন বিশ্বস্বীকৃত। যেকোন জাতিরাষ্ট্রের শিল্পায়ন-নগরায়ন-সচল গ্রামীণ অর্থনীতির মৌলিক নিয়ামক হচ্ছে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। দেশের সামষ্টিক অগ্রগতির গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হচ্ছে পরিকল্পিত বিনিয়োগ-উৎপাদন-পণ্য সামগ্রীর বাজারজাতকরণ। আধুনিক-সমৃদ্ধ সড়ক-জনপদ-রেলপথ-নদীমাতৃক দেশের নৌযান ব্যবস্থাপনায় যৌক্তিক অবকাঠামো-অবাধ চলাচল উপযোগী প্রসারণ-সংস্করণ প্রকৃত অর্থে দেশের উন্নয়নকে দৃশ্যমান করে। উন্নত বিশ্বের ইতিহাস পর্যালোচনায় এটি সুস্পষ্ট যে, বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান-জীবনমান উন্নয়ন ও আয় বৈষম্য নিরসনে ভারসাম্যমূলক সমৃদ্ধির মূলে যোগাযোগ ব্যবস্থার ভূমিকা অপরিসীম। ইতিমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও সম্মানিত সেতু মন্ত্রী জনাব ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সকল স্তরের প্রকৌশলী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মযোগী প্রচেতা সর্বত্রই সমাদৃত। বিগত দশকে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিস্ময়কর পরিবর্তন-আধুনিক চিন্তাচেতনার প্রতিফলন-তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর নির্মাণ কৌশল দারুণভাবে পরিলক্ষিত। চলমান মেগা প্রকল্পের সুচারু সম্পন্ন শেষে ২০২৩ সালের সমাপ্তি পর্যায়ে দেশবাসী পরিপূর্ণ সুফল ভোগের আশাজাগানিয়া স্বপ্নে বিভোর।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, শুধুমাত্র সাময়িক সৌন্দর্য বৃদ্ধি বা সমাজ উন্নয়নে আত্মসন্তুষ্টির জন্য কার্যক্রম কোনভাবে জাতিরাষ্ট্রকে টেকসই উন্নয়নের পথ নির্দেশিত করে না। দেশবাসীর সম্যক অভিজ্ঞতায় উদ্ভাসিত, প্রায় পুরোটা বছর ধরেই সড়ক নির্মাণ-মেরামত এবং জনগণের অর্থে পরিচালিত এসব দৃশ্যত উন্নয়ন আদৌ কতটুকু জনগণের স্বার্থ রক্ষা করছে তার সত্য-বস্তুনিষ্ট বিশ্লেষণ প্রয়োজন। জনদুর্ভোগ লাঘবের পরিবর্তে যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিসর বা স্বল্প সময়ের মধ্যেই নির্মাণ ত্রæটিতে সড়কের দুরাবস্থা, বিশাল সড়কের প্রায় পরিধি জুড়ে দুপাশে বড় বড় ট্রাক-বাসের অঘোষিত গ্যারেজ স্থাপন যোগাযোগ দৃশ্যপটে ভয়াবহরূপ পরিগ্রহ করছে। যানজটমুক্ত করার উদ্দেশ্যে দেশের সর্বত্রই যোগাযোগ ব্যবস্থার অসাধারণ এই উন্নয়ন জনগণের কল্পনা বা স্বপ্নে কখনো ভাবিত হয় নি। এতসব অর্জন পর্যাপ্ত আধুনিক কর্মপরিকল্পনার প্রচন্ড অভাব-সড়ক ব্যবস্থাপনায় চরম অবহেলায় কেন জানি অতিশয় ¤øান হয়ে যাচ্ছে। অসহনীয় অব্যবস্থাপনা-পরিকল্পিত সমন্বয়-যৎসামান্য ব্যক্তিবর্গের আমলাতান্ত্রিক-রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন এসব আকাশচুম্বী অর্জনের মহাসড়কে প্রবল অন্তরায় দেয়াল তৈরি করছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়; অতিসম্প্রতি যোগাযোগ ব্যবস্থাকে অনন্য উচ্চতায় সমাসীন করা যুগান্তকারী পদক্ষেপ ‘মেট্রোরেল’ থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে ওড়ানো কয়েকটি ফানুস বৈদ্যুতিক তারের উপর এসে পড়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে বছরের প্রথম দিনেই দুই ঘণ্টা বন্ধ রাখতে হয়েছে। এ ঘটনায় বিপুল সংখ্যক আগ্রহী-উৎসাহী নগরবাসীর হৃদয় যারপরনাই ক্ষোভ ও হতাশায় মজ্জমান ছিল। আগে থেকেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের ধ্যানধারণায় এসব বিষয়ের প্রক্ষেপণে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হলে অনাকাক্সিক্ষত-অনভিপ্রেত এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না।
বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ পর্যালোচনায় দেখা যায়, সড়ক-মহাসড়ক নির্মাণের পরিকল্পনায় নানা ত্রæটি থাকায় বছর না ঘুরতেই নতুন সড়ক ভেঙে একাকার হয়ে পড়ছে। নি¤œমানের সামগ্রী বা বাই প্রোডাক্টস বিটুমিন ব্যবহারে অল্প সময়ের ব্যবধানে খানাখন্দ আর কার্পেটিং উঠে চলাচলের অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে। মেরামতের কাজেও রয়েছে দীর্ঘসূত্রিতা। ক্ষেত্রবিশেষে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে দেশের সড়ক বা মহাসড়কগুলো নির্মাণ করার পরও তা বেশিদিন স্থায়ী হচ্ছে না। যা দেশবাসীর জন্য মোটেও স্বস্তিদায়ক নয়। বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যমতে, আমাদের সড়ক-মহাসড়কগুলোর চির-দুরাবস্থার অন্যতম প্রধান কারণ নির্মাণ ও মেরামতে গলদ। অতিরিক্ত পরিমাণে মালপত্র বোঝাই করে যানবাহন চলাচল এবং পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার দুর্বলতাও সড়ক নষ্ট হওয়ার কারণ হিসেবে বিবেচ্য। নির্মাণকাজের গুনগত মান নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও রয়েছে দুর্নীতির অভিযোগ। বছরের পর বছর ধরে চলমান এই দুর্নীতি-অব্যবস্থাপনা-অদক্ষতা ও দায়িত্বহীনতার চর্চার কোনো জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডবিøউইএফ) প্রতিযোগিতা সক্ষমতাবিষয়ক সমীক্ষা অনুযায়ী অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতায় কোন দেশের সক্ষমতা কেমন, তা অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি সড়ক অবকাঠামোর গুনগত মানের উপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মহাসড়ক নেই বললেই চলে। সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা দেখে কর্তৃপক্ষের উপেক্ষা-অবহেলার চিত্র প্রকটভাবে অনুভূত হয়। বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট-২০১৯’ শীর্ষক প্রতিবেদন মতে, সড়ক অবকাঠামোর মান বিবেচনায় বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় কেবল নেপালের তুলনায় এগিয়ে আছে। সড়ক-মহাসড়ক নির্মাণে প্রতিবছর বিপুল অর্থের বিনিয়োগ হলেও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সড়ক নির্মাণে তেমন কোন অগ্রগতি হয়নি। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বৃদ্ধির সাথে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যেও। গণমাধ্যমে প্রকাশিত রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন অনুসারে ২০২১ সালে দেশব্যাপী সংঘটিত ৫ হাজার ৩৭১টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৬ হাজার ২৮৪ জন এবং আহত হয়েছে ৭ হাজার ৪৬৮ জন।
১৬ জুন ২০২২ গণমাধ্যমে প্রকাশিত সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) মহাসড়ক উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ (এইচডিএম) বিভাগের ২০২২-২৩ প্রতিবেদনের সূত্রমতে, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সারাদেশে সড়ক ও মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ২২ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার। যার মধ্যে জাতীয় ৩ হাজার ৯৯০, আঞ্চলিক মহাসড়ক ৪ হাজার ৮৯৭ এবং জেলা সড়ক ১৩ হাজার ৫৮৮ কিলোমিটার। ভালো, মোটামুটি, নাজুক, খারাপ ও খুব খারাপ- এই ৫ শ্রেণিতে ভাগ করে মোট ২০ হাজার ৭২ কিলোমিটার সড়ক-মহাসড়ক জরিপ করা হয়েছে। জরিপ অনুযায়ী, সারাদেশে ২ হাজার ৭৭ কিলোমিটার জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং জেলা সড়ক ভাঙাচোরা যা দেশের সড়ক-মহাসড়কের ১০ দশমিক ৩৬ শতাংশ। তন্মধ্যে প্রায় ৪৫৭ কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ বা চলাচলের অযোগ্য। ২০২১ সালের ৩ হাজার ৫ কিলোমিটার ভাঙা সড়কের বিপরীতে ২০২০ সালে ছিল ৩ হাজার ৫৯১ কিলোমিটার। বর্তমানে দেশের ৭৬ দশমিক ২৫ ভাগ সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা খুব ভালো। ২০১৩ সালে দেশে ভালো সড়ক ছিল মাত্র ২০ দশমিক ২৮ শতাংশ। উক্ত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে ভাঙাচোরা রাস্তা মেরাতম ও ভালো সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে আগামী ৫ বছরে প্রয়োজন হবে ১৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা।
আমাদের সকলের জানা, বর্তমান সরকারের সময়কালে সাফল্য পাওয়া খাতগুলোর অন্যতম হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন। জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে তা বাস্তবায়নে অন্যতম সূচক আধুনিক-নিরাপদ-পরিবেশবান্ধব-উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় গত ১৪ বছরে যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব সাফল্যে নতুন মাইলফলক নির্মিত হয়েছে। দেশব্যাপী সড়ক সংস্কার, নতুন সড়ক নির্মাণ, প্রশস্তকরণের সুবাদে বদলে গেছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান। প্রতিটি বিভাগীয়-জেলা শহর, বন্দর, বাণিজ্যিক কেন্দ্রসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের যেকোন প্রান্তে অনায়াসে যাওয়া যাচ্ছে। অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় প্রতিবেশী দেশগুলোতে সহজ ও হয়রানিমুক্ত যোগাযোগ গড়ে উঠেছে। বিশ্বমানের যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে গৃহীত মেগা প্রকল্পগুলোর অন্যতম বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল ও ভুটানকে নিয়ে সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) আঞ্চলিক সহযোগিতার আওতায় সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থার কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ‘প্রেক্ষিত পরিকল্পনা-২০৪১’ অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের সব মহাসড়ক ছয় লেন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে আট লেনে উন্নীত ও দেশের প্রতিটি জেলার সঙ্গে রেল পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। যোগাযোগের ক্ষেত্রে সড়ক-রেল-আকাশ ও নৌপথকে সমান গুরুত্ব দিয়ে আন্তর্জাতিক মানের যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ দ্রæতগতিতে এগিয়ে চলছে।
ইতিমধ্যে বাংলাদেশ গৌরব ও সক্ষমতার প্রতীক নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতু, আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে ঢাকা মহানগরী ও পার্শ্ববর্তী এলাকার যানজট নিরসনে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, উড়াল সড়ক, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে প্রায় সাড়ে তিন কিমি দৈর্ঘ্যরে দেশের প্রথম সুড়ঙ্গপথ বঙ্গবন্ধু ট্যানেল, একই দিনে দেশজুড়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ১০০টি সেতুর উদ্বোধন, কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৮০ কিমি মেরিন ড্রাইভ নির্মাণের মধ্য দিয়ে উন্নত দেশগুলোর মতো সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থার নেটওয়ার্কে এসেছে। দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা মহাসড়ক, অর্থনীতির লাইফ লাইনখ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম ১৯০ কিলোমিটার মহাসড়ক, প্রায় ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ ইটনা-মিঠামাইন-অষ্টগ্রাম, ঢাকা-গাজীপুর-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল সড়ক চার লেনে উন্নীত করা হয়েছে। গাজীপুরের সাথে ঢাকা মহানগরীর যাতায়াত সহজতর করতে গাজীপুর হতে বিমানবন্দর পর্যন্ত সাড়ে চার কিলোমিটার এলিভেটেড বাস লেনসহ সাড়ে বিশ কিলোমিটার ডেডিকেটেড বাস লেন বা বিআরটি নির্মাণের কাজও এগিয়ে চলছে। এ প্রকল্পের আওতায় দশলেন বিশিষ্ট টঙ্গী সেতু ছাড়াও ৬টি ফ্লাইওভার এবং ওভারপাস নির্মাণ করা হবে। উল্লেখ্য যে, জনবহুল শহরে কমসময়ে ভ্রমণের জন্য যথোপযুক্ত গণপরিবহন ব্যবস্থা হিসেবে বিআরটি বেশ জনপ্রিয়। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ছয় লেনে পরিণত করার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগরী ও পার্শ্ববর্তী এলাকার যানজট নিরসনে ২০৩০ সালের মধ্যে ৬টি এমআরটির (অর্থাৎ উড়াল ও পাতাল সড়ক) মাধ্যমে ১২৯ কি.মি. দীর্ঘ একটি মেট্রো নেটওয়ার্ক গঠনের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। পর্যটন শিল্পের বিকাশমানতায় তিন পার্বত্য জেলায় যোগাযোগ খাতের ব্যাপক উন্নয়নসহ বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল দিয়ে সরাসরি কক্সবাজার পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
যোগাযোগের অন্যতম সহজ ও নিরাপদ মাধ্যম রেলপথ সম্প্রসারণ-আধুনিকায়নের মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশকে রেলের আওতায় নিয়ে আনার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারে নেওয়া উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। দক্ষিণাঞ্চলে রেলের পরিধি বৃদ্ধিকরণে পদ্মা সেতুতে রেলের ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। পদ্মা সেতু ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপ পর্যন্ত রেলপথ তৈরির জন্য সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশাপাশি পৃথক রেল সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। রেলপথ সম্প্রসারণ, নতুন রেলপথ নির্মাণ ও সংস্কার, রেলপথকে ডুয়েল গেজে রূপান্তরকরণ, নতুন ও বন্ধ রেল স্টেশন চালু, নতুন ট্রেন সার্ভিস চালু-বৃদ্ধি এবং ট্রেনের নতুন কোচ সংগ্রহ অব্যাহত রয়েছে। এতদসত্তে¡ও অভূতপূর্ব সড়ক-জনপদ-রেলপথ সঞ্চারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক আগ্রহ দেশের আপামর জনসাধারণকে উৎসাহ-অনুপ্রেরণার মহাকাশে অত্যুজ্জ্বল করছে। কঠোর পর্যবেক্ষণ-তদারকি-অদৃশ্য অশুভ শক্তির অনৈতিক উপার্জনে ঘৃণ্য অর্থলোভ নির্মম সংহারে পর্যুদস্ত করা না গেলে সড়কের টেকসই ব্যবহার-দীর্ঘস্থায়ী নির্মাণ শৈলির দৃষ্টান্ত স্থাপন হতাশার অন্ধকার গহŸরে নিপতিত হবে।

লেখক : শিক্ষাবিদ, সমাজ-অপরাধবিজ্ঞানী, সাবেক উপাচার্য চ.বি