যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা

42

ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাটে পরিত্যক্ত সারগুদাম ভবনটি যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। এতে সংলগ্ন নাজিরহাট পৌরভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই ভবনটি ভেঙে ফেলার প্রস্তাব দিয়েছেন নাজিরহাট পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজ-উদ-দৌলাহ।
তিনি বলেন, ১৯৭৩-৭৪ সালের দিকে ফটিকছড়ি উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে নাজিরহাট-বিবিরহাট সড়কের পাশে নাজিরহাট বাজার এলাকায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) এই সারগুদাম নির্মাণ করে।
বিএডিসি ফটিকছড়ি উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিএডিসির কার্যক্রমের অংশ সার সংরক্ষণ করার জন্য সরকার ওই এলাকায় ভবনটি নির্মাণ করে। বর্তমানে ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলীরা ১৯৯৫ সালে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনা এড়াতে ভবনটি ভেঙে ফেলার জন্য বিএডিসি কর্তৃপক্ষ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ভবনটি অপসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বর্তমানে ওই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সরেজমিনে ভবনটিতে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের ছাদ ও দেয়াল থেকে পলেস্তারা খসে পড়ে রডগুলো বের হয়ে আছে। ভবনের আশপাশে যত্রযত্র পরগাছা জন্মেছে। বিভিন্ন স্থানে বড় বড় ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। ছাদের উপর টিনের চালায় ফুটো হওয়ায় বৃষ্টির সময় পানি গড়িয়ে পড়ছে।
গুদামের তত্ত্বাবধায়ক কানু চন্দ্র নাথ বলেন, বৃষ্টির সময় ভবনের ভেতরে রক্ষিত সার পানিতে ভিজে একাকার হয়ে যায়। এতে হাজার হাজার টাকার মালামাল নষ্ট হয়। এসময় প্লাস্টিক দিয়ে কোনমতে এসব মালামাল রক্ষা করা হয়।
নাজিরহাট পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুহাম্মদ আলী বলেন, গুদামের ভেতর বা আশপাশে না যাওয়ার জন্য সবাইকে বলা হয়। কিন্তু অনেকেই তা শোনেন না। গুদাম ভবনটি পৌর কার্যালয় সংলগ্ন হওয়ায় এটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় আমরাও সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকি। ঝুঁকি নিয়ে পৌরভবনে কাজ করি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লিটন দেবনাথ জানান, স্বাধীনতা পরবর্তী বিএডিসি কার্যালয়ের সার সংরক্ষণের জন্য সেখানে সারগুদামটি স্থাপন করা হয়। বর্তমানে ভবনটি ফটিকছড়ি উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির কাছে লিজ রয়েছে। এর আগে ভবনটি ভেঙে ফেলার জন্য তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্তু এখনো ভাঙ্গা হয়নি।
ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সায়েদুল আরেফিন জানান, শিগগিরই ঝুঁকিপূর্ণ এই সারগুদাম ভবনটি অপসারণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং সারগুদাম অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।