যেকোনো প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকে ‘সর্বোচ্চ ত্যাগ’ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহব্বান প্রধানমন্ত্রীর

42

 

বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ জাতীয় যে কোনো প্রযোজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ‘সর্ব্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে’ সদা প্রস্তুত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর মুজিব রেজিমেন্ট ও রওশন আরা রেজিমেন্টকে পতাকা হস্তান্তর এবং সেনাবাহিনীর ১০টি ইউনিটকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এই আশা প্রকাশ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশপাশি প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবেলাসহ নানা আর্থ-সামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন, তথা জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে। বর্তমানে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।
অপারেশন কোভিড শিল্ড নামে সেনাবাহিনীর সদস্যরা করোনা প্রতিরোধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা ও বিভিন্ন বৈদেশিক মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের আত্মত্যাগ, কর্তব্যনিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য বয়ে এনেছে সম্মান ও মর্যাদা, যা বহিঃবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করেছে। খবর বিডিনিউজের।
বাংলাদেশের সেনা সদস্যরা যখন যে দেশে দায়িত্ব পালন করেন, তাদের মানবিকতায় সেদেশের সাধারণ জনগণও ‘মুগ্ধ হয়’ বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ জাতীয় যে কোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্ব্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে সদা প্রস্তুত থাকবে।
অনুষ্ঠানে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধে জীবন দেওয়া ৩০ লাখ শহীদ এবং দুই লাখ নির্যাতিত মা-বোনের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা স্মরণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, আমার ছোট বোন, আমরা বিদেশে ছিলাম বলে বেঁচে গিয়েছিলাম। কিন্তু এই হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতার আদর্শ বাস্তবায়নের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়, অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে নিজের ‘পারিবারিক একটা সম্পর্ক’ রয়েছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আমার দুই ভাই এই সেনাবাহিনীর সদস্য, আর ছোট ভাই, তারও জীবনে একটা স্বপ্ন ছিল, আকাক্সক্ষা ছিল, সেও একজন সেনাসদস্য হবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি।
অনুষ্ঠানে পাতাকা পাওয়া রেজিমেন্ট ও ইউনিটের সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তোমার পতাকা যারে দাও, তারে বহিবারে দাও শকতি’- এই কথাটা বলে গেছেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আবহমানকাল ধরে যুদ্ধের ময়দানে জাতীয় পতাকা মর্যাদার একটা প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
পতাকা আজকে আপনারা পেয়েছেন। আপনাদের হাতে তুলে দেওয়া হল… এই যে বিরল সম্মান আজকে আপনারা পেলেন, আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। এই পতাকার মর্যাদা সমুন্নত রাখার দায়িত্ব আপনাদের।
সেনাবাহিনীর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে সরকার আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র ও প্রযুক্তি সংগ্রহের পাশাপাশি যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তাও এ অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
এনসিও একাডেমির উন্নয়নে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই অ্যাকাডেমি চৌকস এনসিওদের বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জুনিয়র লিডারে রূপান্তরিত করছে। আমি আশাবাদী, এই একাডেমি তার গুণগত উৎকর্ষতা বজায় রেখে ভবিষ্যতেও প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করবে।