যুদ্ধ দিনের কথা

32

মাগো আমি পদ্মা নদীর তীরে
চতুর্দিকে কাল কেউটে রাখছে আমায় ঘিরে।
আগুনমাখা তপ্ত আকাশ লাল
উড়ছে শকুন মাথার উপর ছিঁড়ছে নায়ের পাল।

এলোমেলো ঘুরছি আমি যেই
অন্ধকারে মৃত্যুপুরী হারিয়ে ফেলি খেই
আমরা ক’জন বন্ধু সজন দাঁড়াই অস্ত্র হাতে
পথের বাঁকে একটু আলো নিকষ কালো রাতে।

ঢেউয়ের উপর ভাসতে থাকে লাশ
নদীর পাড়ে রক্তে ভেজা ঘাস।
দু’হাতে মা ছুঁড়তে থাকি গুলি
পাক হানাদার মরল কত, উড়ল মাথার খুলি।

যখন আমি মধুপুরের বনে
মা মাটি দেশ সঙ্গে আছে শপথ নিলাম মনে
ঘরের শত্রূ দিচ্ছে হানা ভয়ের পরিবেশ
মরণজয়ী হবো আমি সবার আগে দেশ।
যুদ্ধে যুদ্ধে কাটছে সারাবেলা
যুদ্ধ মাগো নয় তো হেলাফেলা
হঠাৎ করে পাকবাহিনীর ত্রাসে
শহীদ হলো মানিক রতন, বালু চরের পাশে।

লাল সবুজের সাহস নিয়ে বুকে
রক্তরাঙা মাটির বুকে যাচ্ছি মা সম্মুখে।
আকাশ বাতাস ফুল পাখিরা শোনো
আমার দেহের হাজার ক্ষত হয় না ব্যথা কোনো।

অশ্রু তুমি মুছে ফেলো মাগো
আসবো আমি বিজয় নিশান হাতে
হয়তো কোনো সকালবেলা
কিংবা জোনাক রাতে।