যারা নষ্ট রাজনীতি করে, তারা রাষ্ট্র মেরামত করতে পারে না

5

ঢাকা প্রতিনিধি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি তাদের পক্ষে কূটনীতিক, বিবৃতিদাতাদের মাঠে নামিয়েছে। বিবৃতিদাতারা হত্যাকান্ড, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অর্থপাচার ও তারেক জিয়ার নষ্ট রাজনীতিকে সমর্থন করছেন। দূতাবাসে নালিশ করছে, কিন্তু জনগণ ছাড়া কেউ ক্ষমতায় বসাতে পারবে না। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শ্যামলী স্কয়ার শপিং মলের সামনে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকায় বিএনপির গণমিছিল সামনে রেখে এই সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কূটনীতিকদের মাঠে নামিয়েছে বিএনপি। তারা মির্জা ফখরুলের মুক্তি চায়, তিনি নাকি অসুস্থ। তার জন্য বিবৃতিজীবী, বুদ্ধিজীবীরা উদ্বিগ্ন। ১৫ আগস্ট, জাতীয় চার নেতা হত্যা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, শাহ এ এম এস কিবরিয়া ও আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যার সময় কী আপনারা বিবৃতি দিয়েছিলেন, উদ্বেগ জানিয়েছিলেন? আগুন সন্ত্রাসের পক্ষে বিবৃতি দিচ্ছেন।
বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা প্রসঙ্গে কাদের বলেন, বিএনপি রাষ্ট্রকে ধ্বংস করেছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার আদর্শকে হত্যা করেছে। বিএনপি নষ্ট রাজনীতি করে। তারা রাষ্ট্রকে মেরামত নয়, ধ্বংস করতে পারে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ফাইনাল খেলা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই খেলা মানে মারামারি না, রাজনীতির খেলা। ফাইনাল খেলায় জনগণ বিএনপিকে লাল কার্ড দেখিয়ে বলবে, না, না, না, বিএনপিকে চাই না।
বিএনপির গণমিছিলের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সাতটি স্থানে এবং দক্ষিণ আওয়ামী লীগ দুই স্থানসহ মোট ৯টি স্থানে সমাবেশ ও অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দেয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঢাকা আজ মিছিলের নগরী। ঢাকা আওয়ামী লীগের দখলে। হাওয়া ভবনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা প্রস্তুত। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমরা প্রস্তুত। স্বাধীনতাবিরোধী, লুটেরাদের রুখতে হবে।
মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সাত্তারের সভাপতিত্বে সমাবেশে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতারা বক্তব্য দেন।
সমাবেশে আরও বক্তব্য প্রদান করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব) মুহাম্মদ ফারুক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি প্রমুখ।
বিএনপি জোট সাপের মতো খোলস বদলায় : আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সাপ যেমন কিছু দিন পরপর চামড়া-খোলস বদলায়, বিএনপির জোটও কিছু দিন পরপর খোলস বদলায়। কোনও সময় ২০ দল হয়, ১২ দল হয়; এখন বলছে ৩৩ দল। কিন্তু ৩৩ দলের মধ্যে ৩০টাকে খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। কারণ, কয়েকটি হাতে গোনা দল ছাড়া বাকিগুলো আসলে সাইনবোর্ড-সর্বস্ব দল।
গতকাল বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপির গণমিছিলে মানুষ আতঙ্কিত উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তাদের এই গণমিছিলের কর্মসূচিতে ঢাকা শহরের মানুষ আতঙ্কিত। সরকারি দল হিসেবে আমাদের দলের দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের পাশে থাকা। দেশে যাতে শান্তি-শৃঙ্খলা-স্থিতি কেউ বিনষ্ট করতে না পারে, সেজন্য আমরা মাঠে আছি। বিএনপি এবং তার মিত্ররা যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায়, আমরা জনগণকে নিয়ে প্রতিহত করবো। আমরা রাজপথে ছিলাম, আছি, থাকবো। তাদের কোনও বিশৃঙ্খলা করতে দেওয়া হবে না।’
জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপিকে প্রতিরোধ করবেন জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে, তাই বিএনপি আতঙ্কিত আগামী নির্বাচনেও তাদের ভরাডুবি হবে বলে। বিএনপি-জামায়াত ওত পেতে বসে আছে কখন ছোবল মারবে। তাই আপনারা সতর্ক পাহারায় থাকবেন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা তাদের প্রতিরোধ করবো। তারা যাতে দেশে কোনও বিশৃঙ্খলা করতে না পারে, এ জন্য আমরা রাজপথে অবস্থান নিয়েছি। আমাদের এই অবস্থান আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে এ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শহীদ সেরনিয়াবাত, হাজী মোহাম্মদ শাহীন, আব্দুস সাত্তার মাসুদ, হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহি, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন প্রমুখ।