মৎস্যবাজার নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত স্বার্থান্বেষী মহল

64

কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠা আন্তর্জাতিক মানের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত চট্টগ্রাম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও মৎস্য বাজারের বিরুদ্ধে স্বার্থান্বেষী মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের কর্মকর্তারা। গতকাল রোববার দুপুরে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন তারা।
মহলটি মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাংবাদিক সমাজ ও জনসাধরণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করে সমিতির ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক আমীর হোসেন বলেন, স্বার্থান্বেষী মহলটি ষদেশের ধারাবাহিক উন্নয়ন চায় না। ১ কোটি টাকা খাজনা ও জামানত এবং ৩২ লাখ টাকা বার্ষিক ভাড়ায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ৪ একর জমির ওপর গড়ে তোলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও বাজার নিয়ে নানামুখি ষড়যন্ত্র হচ্ছে অথচ সমিতির কেউ সরকারি জায়গা দখল করে বা জায়গার মালিক সেজে বাজার প্রতিষ্ঠা করেননি। বন্দরের ভাড়াটিয়া হিসেবে ৩ দশমিক ৯৭৭৫ একর জায়গায় সমিতি বাজারটি প্রতিষ্ঠা করে।
খাল দখল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পার্শ¦বর্তী খালের মোহনা দখলের যে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে তাও মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। খালের একটি অংশ নিয়ে মামলা রয়েছে। সেখানে কেউ স্থাপনা নির্মাণ করছে না। প্রকৃত সত্য হলো, বন্দরের ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের আওতায় চাক্তাই-রাজাখালী খালের মোহনার দুই পাড়ে সিসি ব্লক দিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেরাই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে। যে কারণে খালের মোহনা আরও প্রশস্ত হয়েছে। সুতরাং খাল দখলের প্রশ্নই আসে না।
তিনি বলেন, মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও বাজারটি ঘিরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অর্ধলাখ মানুষের জীবিকা জড়িত। পাথরঘাটা ইকবাল রোড ফিশারিঘাটে স্থান সংকুলান না হওয়া, গভীর সমুদ্র থেকে মাছ আনতে খরচ বেড়ে যাওয়া, নোংরা পরিবেশ নিয়ে বিদেশি ক্রেতাদের আপত্তি, যানজট-জনদুর্ভোগ ও বিভিন্ন ঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ১৫ বছরের চুক্তিতে জায়গা লিজ নিয়ে নতুন অবতরণ কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সোনালী যান্ত্রিক মৎস্য শিল্প সমবায় সমিতির সহ-সভাপতি নূর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক বাবুল সরকার, জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির কোষাধ্যক্ষ নিজামুল ইসলাম, নূর হোসেন, মো. সিরাজুল ইসলাম, এরশাদুল আলম, হাফেজ মো. ইসমাইল, সেলিম উল্লাহ, পারভেজ, একেএম ফজলুল হক, এনামুল হকসহ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।
ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, ১৯৬০ সালে ইস্ট পাকিস্তান প্রভিনশিয়াল ফিশারম্যানস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড প্রতিষ্ঠিত হয়। দেশ স্বাধীনের পর বাংলাদেশ জাতীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড নামকরণ করা হয়। সমিতির প্রধান কার্যালয় চট্টগ্রামে অবস্থিত। দেশের বিভিন্ন স্থানে ৯১টি কেন্দ্রীয় ও ৫৭০টি নিবন্ধিত প্রাথমিক মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি গঠনের মাধ্যমে ২ কোটি মৎস্যজীবীর ভাগ্যোন্নয়ন করেছে সমিতি। সমিতির মাধ্যমে বরফ কল, হিমাগার, জাল বুনন কারখানা, কারিগরী কারখানা, ফেরোসিমেন্ট নৌ নির্মাণ কারখানা ও মৎস্য বিপণিকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।