মোদিকে বরখাস্ত করতে চেয়েছিলেন বাজপেয়ি

46

২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার পর সে রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারি বাজপেয়ি। শনিবার এমন মন্তব্য করেছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা যশবন্ত সিন্হা। যদিও বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য লালকৃষ্ণ আদভানি বেঁকে বসায় শেষ মুহূর্তে ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন বাজপেয়ী, জানিয়েছেন যশবন্ত। কংগ্রেসের অনাবাসী ভারতীয় সেলের প্রধান স্যাম পিত্রোদার ‘হুয়া তো হুয়া’ মন্তব্যের রেশ এখনও কাটেনি। দেশের বিভিন্ন জনসভায় এখনও শোনা যাচ্ছে ‘হুয়া তো হুয়া’ রব। বিপদ বুঝে আসরে নেমেছেন খোদ কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধি। প্রচারের যুদ্ধে কিছুটা স্বস্তিতে থাকা বিজেপি শিবিরে এরই মধ্যে এসে পড়ল যশবন্ত-বোমা। ষষ্ঠ ও সপ্তম দফার ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফের জড়িয়ে গেল গুজরাট দাঙ্গার কথা।
এ দিন মধ্যপ্রদেশের ভোপালে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে বোমাটি ফাটান এক সময় দেশের অর্থ ও বিদেশ মন্ত্রণালয় সামলানো যশবন্ত। তার কথায়, ‘‘গুজরাটে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পরই মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে মোদিকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ি। মোদি নিজে থেকে না সরলে গুজরাট সরকারকে বরখাস্ত করা হবে, এমনটাই ছিল তার পরিকল্পনা।’’ বিষয়টি নিয়ে দলের মধ্যে একটি বৈঠকের কথা উল্লেখ করেছেন যশবš। ২০০২ সালে সেই সময় গোয়াতে চলছিল বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক। যশবন্ত বলেছেন, সেই বৈঠকে মোদিকে সরানোর কথা জানাতেই বেঁকে বসেন বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এল কে আদভানি। মোদিকে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরালে তিনি পদত্যাগ করবেন বলে পাল্টা হুমকি দেন। এর পর বাজপেয়ির সামনে আর কিছুই করার ছিল না। আদভানির চাপেই তিনি মোদিকে বরখাস্ত করার রাস্তা থেকে সরে আসেন, এমনটাই দাবি করেছেন যশবন্ত।
নির্বাচনের মধ্যেই নরেন্দ্র মোদিক ফের পুরনো গুজরাট দাঙ্গার সঙ্গে জড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি আইএনএস বিরাট ও রাজীব গান্ধি ইস্যুতেও দেশের প্রধানমন্ত্রীকে এক হাত নিয়েছেন যশবন্ত। আইএনএস বিরাটকে রাজীব গান্ধি ‘পার্সোনাল ট্যাক্সি’ হিসেবে ব্যবহার করেন, মোদির এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে দেশের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘দেশের এক জন প্রধানমন্ত্রী আর এক জন প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এই ভাষায় কথা বলতে পারে না।’
একই সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির প্রতি তার হুঁশিয়ারি, ‘এই নির্বাচন হচ্ছে সরকারের কাজকর্মের নিরিখে, দেশের ইতিহাস নিয়ে নয়।’ দেশের নির্বাচনে বার বার পাকিস্তান প্রসঙ্গ তুলে আনা নিয়েও শাসক দলকে তুলোধনা করেছেন যশবন্ত। তার কথায়, ‘ভারত ও পাকিস্তানকে সমগোত্রীয় করে তোলা হচ্ছে। চিন নিয়ে কোনো চিন্তা নেই। আমাদের এই অবস্থা দেখে নিশ্চয়ই আরও খুশি হচ্ছে বেজিং।’ একই সাংবাদিক বৈঠকে ভোপালের যুদ্ধ দেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ ঠিক করে দেবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এমনটাই জানিয়েছেন বিজেপির এক সময়ের এই ডাকসাইটে নেতা। এই লোকসভা নির্বাচনে ভোপালে মুখোমুখি লড়াই কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ বনাম মালেগাঁও কান্ডে অভিযুক্ত সাধ্বী প্রজ্ঞা-র।