মোছলেমের আয় বেশি ব্যয় কম নগদ টাকা কমেছে সুফিয়ানের

83


চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলের দুই শীর্ষ নেতা প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। ইতোমধ্যে নির্বাচনে অংশ নিতে দুই নেতা জমা দিয়েছেন মনোনয়নপত্র। গত বুধবার বিএনপি প্রার্থী আবু সুফিয়ান ও গতকাল বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমদ মনোনয়নপত্র জমা দেন। জমা দেয়া মনোনয়নপত্রের সাথে উভয় নেতা হলফনামাও জমা দিয়েছেন। হলফনামায় দুই নেতা তুলে ধরেছেন তাঁদের স্থাবর, অস্থাবর সম্পদ, নগদ অর্থসহ আয়-ব্যয়ের হিসেব।
এরমধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমদের বার্ষিক আয় ২৪ লক্ষ ৬১ হাজার ৩৬৪ টাকা এবং ব্যয় ১১ লক্ষ ৬১ হাজার ৭৮৬ টাকা। আয়-ব্যয়ের ব্যবধান ১২ লক্ষ ৯৯ হাজার ৫৭৮ টাকা। মোছলেম উদ্দিনের স্ত্রীর আয় ১০ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা। সবমিলিয়ে এই নেতার নগদ, ব্যাংক আমানত ও ব্যবসায় মূলধনের পরিমাণ এক কাটি ৭৫ লক্ষ ৬৪ হাজার ৫৮০ টাকা। গতকাল চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটানিং কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামানের কাছে জমা দেয়া হলফনামায় এমন তথ্য তুলে ধরেছেন তিনি। একইসাথে তার নামে ব্যাংক ঋণ আছে (দামপাড়াস্থ ইউসিবিএল ব্যাংকে অটোলোন) ৩৪ লাখ ৯০ হাজার ৪২০টাকা।
মোছলেম উদ্দিন আহমদের অস্থাবর সম্পক্তির মধ্যে নিজের নগদ টাকা রয়েছে ১৮ লাখ। নিজ নামে ব্যাংকে আছে ১৬ লাখ টাকা। তার নিজ নামে রয়েছে পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার। গাড়ি রয়েছে মোট ৩টি। নিজের নামে দুটি এবং স্ত্রীর নামে একটি। তিনটি গাড়ির দাম দেখানো হয়েছে এক কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কধুরখীল ও লালখান বাজারে পৈত্রিক সম্পত্তির পরিমাণ ২ দশমিক ২৩ একর। এছাড়াও দুটি বাড়ি আছে। ব্যবসায় মূলধনের মধ্যে মেসার্স তিথী এন্টারপ্রাইজের চার লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ও মহানগর প্রপার্টি ডেভেলাপমেন্টে তিন লক্ষ ৩৩ হাজার ৩০০ টাকা।
আয়ের মধ্যে বাড়ির কৃষি জমি থেকে বার্ষিক ২০ হাজার টাকা। ব্যবসা থেকে বার্ষিক আয়ের পরিমাণ ২১ লক্ষ ৫৭ হাজার ৩৬৪ টাকা। অন্যান্য খাত থেকে আয় করেন দুই লক্ষ ৬৪ হাজার টাকা। সম্পদের মধ্যে স্ত্রীর নামে আছে ২০ ভরি স্বর্ণ। প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম দেখিয়েছেন পাঁচ হাজার টাকা মাত্র। আর স্ত্রীর কাছে নগদ টাকা রয়েছে এক লক্ষ ১৪ হাজার এবং স্ত্রীর নামে ব্যাংকে এফডিআর রয়েছে ৫৬ লক্ষ টাকা। বাসার সোফা, আলমিরা-চেয়ার-টেবিলসহ মোট আসবাবপত্রের দাম ১৫ হাজার টাকা।
অন্যদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছিলেন আবু সুফিয়ান। ২০১৮-২০১৯ এক বছরের ব্যবধানে সুফিয়ানের আয় বেড়েছে। গতকাল নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হলফনামায় বাড়ি বা এপার্টমেন্ট, দোকান বা অন্যান্য ভাড়া খাত থেকে আয় দেখিয়েছেন দুই লক্ষ ১৫ হাজার ৬২৫ টাকা। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের হলফনামায় দেখিয়েছিলেন এক লক্ষ ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা। এখাতে আয় বেড়েছে সুফিয়ানের ২৭ হাজার ৫০০ টাকা। এছাড়াও ব্যবসা খাতে সুফিয়ানের বর্তমান আয় তিন লক্ষ দুই হাজার ৭০০ টাকা।
অস্থাবর সম্পদের মধ্যে এক বছরের ব্যবধানে বিএনপি প্রার্থী আবু সুফিয়ানের নগদ টাকা কমেছে ৫৮ লক্ষ ৫৮ হাজার ৯ টাকা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামার তথ্যে নগদ টাকার পরিমাণ ছিল ৫৯ লক্ষ ১৩ হাজার ৩০৭ টাকা। বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫০ লক্ষ ৯৬ হাজার ৮৩৩ টাকা। স্ত্রীদের নামে ৩৩ লক্ষ ৯০ হাজার ৫৯৭ টাকা আছে। সুফিয়ানের স্ত্রীদেরও নগদ টাকা কমেছে। ব্যবসার শেয়ারের পরিমাণ পাঁচ লক্ষ টাকা স্থিতি রয়েছে। নিজের ও স্ত্রীর নামে কার ও পিকআপের মূল্য যথাক্রমে ১৫ লক্ষ ২১ হাজার ৫৯৬ এবং এক লক্ষ ৪০ হাজার টাকার পরিমাণ স্থিতি রয়েছে। নিজের নামে ৫০ হাজার টাকার মূল্যের স্বর্ণ রয়েছে। স্ত্রীদের নামে রয়েছে ৩০ হাজার ও এক লক্ষ টাকার স্বর্ণ। এক বছরে তাও স্থিতি রয়েছে। এক বছর আগে নিজের নামে আসবাবপত্র ছিল ১০ হাজার টাকার। বর্তমানে আসবাবেব মূল্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। তবে স্ত্রীদের নামে ১০ হাজার ও ৫০ হাজার টাকার স্থিতি রয়েছে।স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে অকৃষি জমি ও অর্জনকালীন আর্থিক মূল্য বর্তমানে ৩৩ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা। এক বছর আগে ছিল ৮০ লক্ষ ৫৪ হাজার ২৬৭ টাকা। এখাতে স্ত্রীর নামে থাকা সম্পদের আর্থিক মূল্য ৮ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা স্থিতি রয়েছে। দালান (আবাসিক বা বাণিজ্যিক) অর্জনকালীন মূল্য হচ্ছে বর্তমানে ৫২ লাখ ৮৫ হাজার ২০০টাকা। স্ত্রীর রয়েছে ১৬ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। এক বছরে নিজের ও স্ত্রীর নামে থাকা এই খাতে সম্পদের পরিমাণ স্থিতি রয়েছে। মৎস্য খাতে বর্তমানে আয় ৬৯ হাজার ৬৭ টাকা। গত নির্বাচনেও এ খাতে একই আয় ছিল।