মেধাবী মুনমুনের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসলেন ওসি আনোয়ার

25

চন্দনাইশ প্রতিনিধি

চন্দনাইশের বরকল এসজেড উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন মুনমুন আক্তার। কিন্তু তার পিতা একজন কৃষক ও পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি। তাই দরিদ্র কৃষক পরিবারের মেয়ে মেধাবী মুনমুন এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেও পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারবেন কিনা তা নিয়ে ছিল বেশ চিন্তিত। দরিদ্র পিতার পক্ষে কলেজে ভর্তি করানো, প্রয়োজনীয় শিক্ষা সামগ্রী কিনে দেয়া কোনভাবেই সম্ভব ছিলনা। অথচ তার স্বপ্ন সে পড়ালেখা শেষে একজন ভালো চিকিৎসক হয়ে দেশের মানুষের সেবা করা।
অবশেষে তার সেই স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসলেন চন্দনাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার হোসেন। তিনি গত ২৯ ডিসেম্বর সকালে চন্দনাইশ উপজেলার বরমা ইউনিয়নের পশ্চিম চর-বরমা এলাকায় মুনমুন আক্তারদের বাড়িতে গিয়ে তার হাতে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বইসহ প্রয়োজনীয় শিক্ষা সামগ্রী এবং কলেজে ভর্তির খরচসহ নগদ অর্থ তুলে দেন। শিক্ষা উপকরণ ও কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়ে খুশি মেধাবী শিক্ষার্থী মুনমুন আক্তার। একই সাথে খুশি তার দরিদ্র পিতা মো. জামাল হোসেন ও পরিবারের সদস্যরা।
কলেজে ভর্তির সুযোগ ও বইসহ প্রয়োজনীয় শিক্ষা সামগ্রী পেয়ে উচ্চসিত মুনমুন বলেন, এসএসসি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করেও কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলাম। অবশেষে আমাকে কলেজে ভর্তির সুযোগ করে দেয়ায় আমি চন্দনাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার হোসেন স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞ।
চন্দনাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার হোসেন জানান, মেধাবী শিক্ষার্থী মুনমুনের পারিবারিক জায়গা জমি নিয়ে স্থানীয় লোকজনের সাথে বিরোধের তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারি মুনমুন মেয়েটি পড়ালেখায় খুব মেধাবী এবং এসএসসি পরীক্ষার্থী। পরে মেয়েটা যাতে ভালোভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারে, তার পড়ালেখায় যাতে বিঘœ সৃষ্টি না হয় সেজন্য সবরকম ব্যবস্থাও গ্রহণ করি। সে তার অধ্যাবসায় ও নিজের প্রচেষ্টায় এসএসসিতে ভালো ফলাফল অর্জন করেছে। অজ পাড়াগাঁয়ের একটি মেয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে দরিদ্র কৃষক পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে। মুনমুন ভবিষ্যতেও যাতে ভালোভাবে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারে তার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
বরকল এসজেড উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরহাদ হোসেন বলেন, মুনমুন একজন মেধাবী ছাত্রী। সে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ- ৫ পেয়েছে। সে জেএসসি পরীক্ষায়ও ৪.৮৬ পয়েন্ট পেয়ে পাশ করেছিল। একজন দরিদ্র পিতার কন্যা কোচিং কিংবা প্রাইভেট পড়ার তেমন সুযোগ না পেয়েও ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমে সে তার প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছে। আমার বিশ্বাস সে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে। একদিন মানুষের মতো মানুষ হবে।