মূল্যস্ফীতি আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ

14

পূর্বদেশ ডেস্ক

মহামারির পর ইউক্রেইন যুদ্ধের ধাক্কায় বিশ্ববাজারে অস্থিরতার জেরে গত মে মাসে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশে উঠেছে মূল্যস্ফীতির হার, যা আট বছরের সর্বোচ্চ। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে খাবারের দাম। এ খাতে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে মে মাসে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) গতকাল রবিবার পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির এই হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে।
অর্থাৎ, গত বছরের মে মাসে দেশের মানুষ যে পণ্য বা সেবা ১০০ টাকায় পেয়েছিলেন, এ বছর মে মাসে তা কিনতে ১০৭ টাকা ৪২ পয়সা খরচ করতে হয়েছে।
গত বছরের মে মাসে দেশে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ।চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে এই হার ৫ দশমিক ৩ শতাংশে বেঁধে রাখার লক্ষ্য ঠিক করেছিল সরকার। তবে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে গড় মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৬ দশমিক ২৯ শতাংশে ওঠে। পরের মাসেই তা ৭ দশমিক ৪২ শতাংশে উঠল।
মহামারির ধাক্কা সামলে অর্থনীতির গতি বাড়ায় গতবছরের শেষ দিক থেকেই মূল্যস্ফীতি ছিল বাড়তির দিকে। চলতি বছরের শুরুতে ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে জ্বালানি ও খাদ্যমূল্য বাড়তে শুরু করে। তার প্রভাব পড়ে অন্যান্য পণ্যেও। এই পরিস্থিতিত টানা ছয় মাস ৬ শতাংশের বেশি ছিল মূল্যস্ফীতির পর। এবার তা প্রায় সাড়ে ৭ শতাংশের ঘরে উঠল। তাতে নিম্নবিত্ত আর মধ্যবিত্তের সংসার খরচ মেটাতে স্বাভাবিকভাবেই প্রচন্ড চাপ পড়ছে।
এর আগে ২০১৪ সালের মে মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এরপর আর কখনও এতটা চড়েনি অর্থনীতির এই গুরুত্বপূর্ণ সূচক।
বিবিএস এর ন্যাশনাল একাউন্টিং উইংয়ের পরিচালক মো. জিয়াউদ্দীন আহমেদ বলেন, মে মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার পেছনে সবচেয়ে বেশি ভ‚মিকা রেখেছে দেশের প্রধান খাদ্যপণ্য চালের দাম বৃদ্ধি। বিবিএস এর মূল্যস্ফীতির হিসাব নির্ণয়ন ঝুড়িতে চালের দামই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
‘আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে দেশেও বেড়েছে। এছাড়া সকল আমদানি পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রভাবে দেশে উৎপাদিত প্রায় সকল পণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা গেছে’।
বিবিএসের সর্বশেষ হিসাব বলছে, মে মাসে খাদ্য উপ-খাতে সবচেয়ে বেশি ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে।
এর আগে ২০১৪ সালের মে মাসে খাদ্য উপখাতে ৯ দশমিক ০৯ শতাশং মূল্যস্ফীতি হয়েছিল। গত ৮ বছরের মধ্যে আর কোনো মাসে খাদ্য উপখাতে এত বেশি মূল্যস্ফীতি হয়নি। গত মাসে খাদ্য বহির্ভূত উপখাতে সাধারণ মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৬ দশমিক ০৮ শতাংশ হয়েছে। আগের মাসে এ হার ছিল ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ। খবর বিডিনিউজের
বিবিএস এর হিসাব বলছে, মে মাসে দেশের গ্রামাঞ্চলেই সবচেয়ে বেশি ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে। আর গ্রামেই খাবারের দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি, ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ। গ্রামে খাদ্য বহিভর্‚ত পণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ।
গত মাসে দেশের শহরাঞ্চলের সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আর খাদ্যের দাম ৭ দশমিক ০৮ শতাংশ হারে বেড়েছে। খাদ্য বহিভর্‚ত পণ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ।