মুহিবুল্লাহ কিলিং মিশন কয়েক মিনিটেই শেষ!

6

কক্সবাজার প্রতিনিধি

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন তৎপরতা বন্ধ এবং নেতা হিসেবে মুহিবুল্লাহর উত্থান ঠেকাতে তাকে হত্যা করা হয়েছে। একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের শীর্ষ নেতার নির্দেশে কিলিং (হত্যা) মিশনে অংশ নেন ১৯ সন্ত্রাসী। এদের মাঝে ৫ জন ছিলেন অস্ত্রধারী। পূর্ব প্রস্তুতি মতে কয়েক মিনিটেই কিলিং মিশন শেষ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে সন্ত্রাসীরা। গতকাল শনিবার দুপুরে মুহিবুল্লাহর হত্যার কিলিং স্কোয়াডের সদস্য আজিজুল হককে গ্রেপ্তার এবং হত্যার ছক সম্পর্কে জেনে প্রেস ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন ১৪ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এসপি নাইমুল হক। এর আগে শনিবার ভোরে মুহিবুল্লাহ হত্যায় কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া আজিজুল হককে লাম্বাশিয়া পুলিশ ক্যাম্পের লোহার ব্রিজ এলাকা থেকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে এপিবিএন-১৪ এর সদস্যরা।
আজিজুল হকের স্বীকারোক্তিতে তিনি ছাড়াও হত্যায় সহযোগিতা করা কুতুপালং ক্যাম্প-১ এর ডি ৮ বøকের আব্দুল মাবুদের ছেলে মোহাম্মদ রশিদ ওরফে মুরশিদ আমিন ও একই ক্যাম্পের বি বøকের ফজল হকের ছেলে মোহাম্মদ আনাস ও নুর ইসলামের ছেলে নুর মোহাম্মদকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুলের স্বীকারোক্তির কথা জানিয়ে ১৪ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এসপি নাইমুল হক বলেন, মুহিবুল্লার হত্যার দুই দিন আগে মরকাজ পাহাড়ে কিলিং মিশনের জন্য বৈঠক করে দুর্বৃত্তরা। সেখান থেকে ১৯ জনকে মিশনে অংশ নেয়ার নির্দেশনা দিয়ে সশস্ত্র ৫ জনকে পাঠানো হয়।
জিঙ্গাসাবাদে পুলিশকে আজিজুল হক জানান, দিন দিন মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গাদের নেতা হিসেবে পরিচিত হচ্ছেন। তার উত্থান ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ঠেকাতে যেকোন মূল্যে তাকে হত্যা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশনায় ২৯ সেপ্টেম্বর এশার নামজের পর মুহিবুল্লাহকে বাসা থেকে অফিসে ডাকা হয়। প্রত্যাবাসন বিষয়ে কয়েকজন কথা বলতে ডাকছে বলে বাসা থেকে বের করে আনে আরসা সদস্য মুরশিদ। তারপর বাকিদের সংকেত দিয়ে তিনি অফিস থেকে চলে যান।
নাইমুল হক আরও জানান, সশস্ত্র টিম অফিসে ঢুকে একজন মুহিবুল্লাহকে বলে ‘উঠ’ তোর সাথে কথা আছে। বসা থেকে উঠতেই প্রথমজন একটি, তার পরেরজন দুইটিসহ চারটি গুলি করা হয়। তারপর মুহিবুল্লাহর বাড়ির পেছন দিয়ে পালিয়ে যান স্কোয়াডের ৫ জন। পরে সবাই সতর্ক হয়ে যায়। বিভিন্নজনের ওপর দোষ চাপাতে থাকে।
হত্যায় জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং যেকোন সময় তারা গ্রেপ্তার হতে পারে বলে জানান এপিবিএনের এ কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে ক্যাম্পের ভেতরে মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পরদিন মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ উখিয়া থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় আগে ৫ জন সন্দেহভাজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ইলিয়াস নামে একজন রোহিঙ্গা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শনিবার ৪ জনসহ এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৯ জন গ্রেপ্তার হলো।