মুজিববর্ষে চতুর্থ পর্যায়ে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর পাচ্ছেন কাউখালীর ৪১ গৃহহীন পরিবার

31

কাউখালী প্রতিনিধি

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্প ২ এর আওতায় নির্মিত চতুর্থ পর্যায়ে ঘর পেতেযাচ্ছেন কাউখালীর ৪১ গৃহহীন-ভূমিহীন পরিবার। আজ ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চতুর্থ ধাপে নির্মিত ঘরগুলো একযোগে উদ্বোধন করবেন। আশ্রয়ন প্রকল্প-৪ এর বিভিন্ন স্থান সরেজমিনে ঘুরে এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জনা যায়। জমিসহ আধা-পাকা ঘর পেয়ে খুশি ভূমিহীন গৃহহীন পরিবারগুলো। গৃহহীন বিধবা, নিঃসন্তান নারী পরিবার যাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিলো না। এমন পরিবারগুলো ২ শতাংশ জমিসহ পাকা ঘর পেয়ে আজ তারা অনেক খুশি। উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের দুর্গম শামুকছড়ির বাসিন্দা সুইজাইউ মারমা ও স্ত্রী আরেমা মারমা তারা দু’জনই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। থাকতেন দুর্গম পাহাড়ের ঢালে জরাজীর্ণ একটি বেড়ার ঘরে। ছিলনা বিদ্যুৎ ও পানি। এখন তারা মূল সড়কের পাশে দু’শতক জায়গা পেয়েছেন সাথে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরও। তাদের আর চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। এতেই তারা বেজায় খুশি। উপজেলার কলমপতি ইউনিয়নের রবিউল হোসেন দিনমুজুরিতে কাজ সংসার চালান। তিন সন্তানের মধ্যে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। দু’কক্ষের একটি পাকা ঘর নির্মাণ করা তার জন্য ছিলো স্বপ্নের মতো। আজ তিনি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পেয়েছেন। ইতিমধ্যেই তিনি সপরিবারে বসবাস শুরু করেছেন সে ঘরে।
প্রধানমন্ত্রীর ঘর পাওয়া ঘাগড়া ইউনিয়নের বিধবা নারী বাসন্তী মজুমদার প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে জরাজীর্ণ দুই কক্ষের একটি বেড়ার ঘরে পলিথিন টাঙ্গিয়ে থাকতেন। এখন তিনি একটি আধা পাকা ঘরের মালিক। এতেই তিনি বেজায় খুশি, তাইতো কান্না জড়িত কন্ঠে দু’হাত উঁচিয়ে প্রার্থনা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য।
প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রæতি অনুযায়ী আশ্রয়ণ প্রকল্প ২-এর আওতায় সারাদেশের মতো রাঙামাটি কাউখালী উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ভূমিহীনদের জন্য ৪১টি ঘর নির্মাণকাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। নির্বাচিত ও যাচাই-বাছাই করা ভূমি-গৃহহীনদের নামে এসব ঘরের দলিলও ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। ২২মার্চ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর ভূমিহীনদের হাতে দলিল তুলে দেওয়া হবে। এরমধ্যে রয়েছে ঘাগড়া ইউনিয়নে ১৪টি, কলমপতি ইউনিয়নে ১১টি, বেতবুনিয়া ইউনিয়নে ১১টি ও ফটিকছড়ি ইউনিয়নে ৫টি। এর পূর্বে উপজেলার চার ইউনিয়নের পর্যায়ক্রমে ১০৯টি ঘরের চাবি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সুবিধাভোগীদের হাতে তুলে দেয়া হয়।
কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা সাদিয়া নূরিয়া জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ নির্মাণ স্থলে গিয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ প্রকল্পের কাজ তদারকি করেছি। উপজোলা মনিটরিং টিমও নিয়মিত মনিটরিং করেছে। তিনি জানান, টেকসই ও উন্নত মানের মালামাল ব্যবহার করে নির্মাণ করা হয়েছে। যা আজ ২২মার্চ সারাদেশে প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন কালে কাউখালী উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ৪১ টি ঘর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন। একই সঙ্গে গৃহের ও ভূমির দলিল ভূমিহীনদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এরপর স্থায়ীভাবে এসব গৃহে বসবাস করতে পারবে তারা। পাবে মাথা গোঁজার ঠাঁই, দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে অন্যের আশ্রয়ে বা পথেঘাটে পড়ে থাকা এসব ভূমিহীন মানুষের। প্রতিটি ঘর দুই শতাংশ সরকারি জমির উপর দুই কক্ষবিশিষ্ট ওয়াল সেড ও পাকা ল্যাট্রিন, রান্নাঘরসহ নির্মাণ করা হয় বলে জানান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ফজলুল করিম। প্রতিটি ঘরের ব্যয় ধরা হয়েছে দুই লাখ ৮৪ হাজার ৫ শত টাকা।