মুখ্যমন্ত্রী বদলে ফেলল বিজেপি

11

পূর্বদেশ ডেস্ক

বিপ্লব দেবের পরে মানিক সাহা। দলের রাজ্য সভাপতিকেই পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বাছল বিজেপি। পেশায় চিকিৎসক মানিক এখন রাজ্যসভার সাংসদ। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ছ’মাসের মধ্যে তাকে কোনও বিধানসভা আসন থেকে জিতিয়ে আনতে হবে। তবে সেটা খুব একটা কঠিন হবে না বিজেপির পক্ষে। ৬০ আসনের ত্রিপুরায় বিজেপি গত বিধানসভা নির্বাচনে ৪৪টিতে জয় পেয়েছিল। তারই কোনও একটি থেকে মানিকের জয় নিশ্চিত করতে হবে বিজেপিকে।
গতকাল শনিবার বিকেলে আচমকাই পদত্যাগ করেন বিপ্লব। শুক্রবার দিল্লিতে তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেন। ফিরে এসেই তার পদত্যাগের পরে মনে করা হচ্ছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশই পালন করেছেন তিনি। বিপ্লবের পদত্যাগের পর থেকেই জল্পনা শুরু হয়ে যায় কে হবেন পরের মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে বসেন বিজেপি নেতৃত্ব এবং ত্রিপুরার পরিষদীয় দল। তবে বিজেপি সূত্রে খবর, আগেই মানিকের নাম চ‚ড়ান্ত করে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে মানিকের সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মণ। তবে চারিলাম আসনের বিধায়ককে পিছনে ফেলে এগিয়ে গেলেন মানিক। গত এপ্রিল মাসেই রাজ্যসভায় গিয়েছেন মানিক। শপথ নেন ৩ এপ্রিল। সাংসদ জীবনের দু’মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে চলেছেন তিনি।
মানিকের নাম ঘোষণা হতেই ত্রিপুরার মনে আসতে পারে এক প্রাক্তনের কথা। ১৯৯৮ থেকে ২০১৮ দু’দশক রাজ্যে বাম সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন মানিক সরকার। সেই সরকারকে সরিয়েই বিপ্লব এসেছিলেন। আবার বিপ্লব সরে যেতে এলেন আর এক মানিক।

ফের প্রকাশ্যে গোষ্ঠী কোন্দল
তবে নতুন মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণার পরই ফের প্রকাশ্যে গেরুয়া শিবিরের গোষ্ঠীকোন্দল। ভাঙা হল চেয়ার টেবিল। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সামনেই নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে ধাক্কা দিলেন রাজ্যেরই কারামন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল। তবে সেই সব ক্ষোভ-বিক্ষোভকে উড়িয়ে নতুন পদে শপথ নিতে রাজভবনের উদ্দেশ্যে রওনা দেন ‘বিপ্লব ঘনিষ্ঠ’ মানিক সাহা। ইতিমধ্যে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
২০২৩ সালে উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন। তার ঠিক ১০ মাস আগেই নিঃশব্দে পদ ছাড়লেন বহু বিতর্কের ‘নায়ক’ বিপ্লব দেব। জানিয়েছেন, দলের স্বার্থে সংগঠনের কাজ করবেন তিনি। তাঁর বদলে বর্তমানে ত্রিপুরা বিজেপির সভাপতি ডা. মানিক সাহা হলেন মুখ্যমন্ত্রী। কংগ্রেস ছেড়ে ২০১৬ সাল নাগাদ বিজেপিতে যোগ দেন সরকারি চিকিৎসক মানিক। তার পর বিপ্লব দেবের হাত ধরেই উল্কার গতিতে উত্থান হয় তাঁর। ২০১৮ সালের ভোটে তাঁকে টিকিট দেয়নি দল। তবে নির্বাচনের পর ত্রিপুরা বিজেপির কাÐারী হন মানিক। রাজ্য সভাপতির পর ত্রিপুরা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট হন তিনি। এবার নির্বাচনের ১০ মাস আগে ত্রিপুরার দায়িত্ব হাতে নিলেন মানিক।
কিন্তু প্রাক্তন কংগ্রেসির এই উত্থানকে মেনে নিতে পারছেন না বিজেপির একাংশ। পরিষদীয় দলের বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সামনেই এই ক্ষোভ উগরে দেয় গেরুয়া শিবিরের একাংশ। রাজ্যের মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে ধাক্কাও দেন বলে অভিযোগ। বিক্ষুব্ধদের দাবি, বিধায়কদের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নয়া মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করেছে। খবর আনন্দবাজার, সংবাদ প্রতিদিন।