মুক্তবাণিজ্য অঞ্চল বাস্তবায়নে চেম্বারের সহযোগিতা চাই

11

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে নবনিযুক্ত থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মিসেস মাকাওয়াদী সুমিতমোর বলেছেন, থাই সরকার প্রস্তাবিত মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল (এফটিএ) বাস্তবায়নে চট্টগ্রাম চেম্বারের সহযোগিতা প্রয়োজন। এটি করা গেলে দুই দেশের বাণিজ্যিক সৌহার্দ্য যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনি অর্থনৈতিকভাবেও উপকৃত হবে উভয় দেশ।
তিনি গতকাল চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র পরিচালকমন্ডলীর সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান সুসস্পর্ক ও সহযোগিতার ভিত্তিতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ মূল লক্ষ্য। এক্ষেত্রে এখনো অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধি সম্ভব হবে। সমুদ্র পথে সরাসরি জাহাজ যোগাযোগ স্থাপনে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে থাই কর্তৃপক্ষের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে জানিয়ে এই চুক্তি সম্পাদন হলে তা বাণিজ্য সহায়ক হবে বলে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাশা করেন।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, করোনা সংক্রমণের কারণে ব্যবসার পরিধি কমে গেছে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে ৭৪.৮ মিলিয়ন ডলার রপ্তানির বিপরীতে ৯৭৩ মিলিয়ন ডলারের পণ্য থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করা হয়। তিনি এ বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসে সে দেশে বিভিন্ন প্রদর্শনী, ট্রেড শো ইত্যাদি আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশি পণ্যের পরিচিতি বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে র‌্যানং বন্দরের সরাসরি সমুদ্র পথে জাহাজ চলাচল শুরুর মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সময় ৩-৪ দিনে এবং পরিবহন ব্যয় অর্ধেকে নেমে আসবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এছাড়া থাইল্যান্ডের মৎস্য খাতে ৫০ হাজার বাংলাদেশী জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়া পুনরায় চালু করা, সে দেশের শ্রম বাজারের উপযোগী দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপন,চট্টগ্রাম হতে চিয়াংমাই, ব্যাংকক সরাসরি বিমান যোগাযোগ পুনরায় চালু করা, জ্বালানী খাতে প্রস্তাবিত ২৫০ মিলিয়ন ডলারের থাই বিনিয়োগ বাস্তবায়নে রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম।
গত বুধবার সন্ধ্যায় ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম, সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও থাই অনারারী কনসাল আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী, চেম্বার পরিচালকবৃন্দ অঞ্জন শেখর দাশ, ইঞ্জিনিয়ার ইফতেখার হোসেন ও সাজির আহমেদ এবং বাংলাদেশ সেন্টার অব এক্সিলেন্স (বিসিই) এর প্রধান নির্বাহী ওয়াসফি তামিম বক্তব্য রাখেন।
অন্যান্যের মধ্যে চেম্বার পরিচালকবৃন্দ একেএম আকতার হোসেন, মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (আলমগীর), মো. ওমর ফারুক, নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, শাহজাদা মো. ফৌজুল আলেফ খান, মো. ইফতেখার ফয়সাল, এস এম তাহসিন জোনায়েদ, মোহাম্মদ আদনানুল ইসলাম, তানভীর মোস্তফা চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিরুল আলম (ফাহিম), দূতাবাসের মিনিস্টার কাউন্সেলর পানম থংপ্রায়ুন, মিনিস্টার কাউন্সেলর (কমার্শিয়াল) খেমাথেট আর্চাওয়াথামরং, কাউন্সেলর ডুয়ানসিব পাদ্মসুন্দারা কূলেন, সেকেন্ড সেক্রেটারী কুসুমা সারীবুনিয়ারিত, থার্ড সেক্রেটারী বুদসারা সাদাএনগ্রিত, রাষ্ট্রদূতের ব্যক্তিগত সচিব ওয়ারাসান বিনতে ইসরাইল, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সানভিরাজ হাসান নিলয় ও চেম্বার সেক্রেটারী ইনচার্জ প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফারুকসহ সচিবালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
চেম্বার পরিচালকদ্বয় সাজির আহমেদ থাইল্যান্ডে প্রচুর সংখ্যক বাংলাদেশী উন্নত স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করে উল্লেখ করে বলেন এ খাতে একযোগে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে। তিনি বাংলাদেশে একটি অটোমোবাইল কারখানা স্থাপনে রাষ্ট্রদূতের উদ্যোগ কামনা করেন। মতবিনিময়ের পূর্বে রাষ্ট্রদূত ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের নিজস্ব হলরুম পরিদর্শন করেন।