মিয়ানমারে আরেক ‘দমনাভিযানের প্রস্তুতি’ জান্তার

27

পূর্বদেশ ডেস্ক

চার বছর আগে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর যে দমন অভিযান চালিয়েছিল, দেশটিতে সে রকম আরেকটি ঘটনার আশঙ্কা জানিয়েছে জাতিসংঘ। দেশটির জান্তা সরকার বিদ্রোহীদের দমনে এরই মধ্যে উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন রাজ্য ও সেগাইন এলাকায় ভারী অস্ত্রসহ সেনা মোতায়েন করেছে বলে খবর বেরিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার মিয়ানমারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার টম অ্যান্ড্রুজ দেশটিতে আবারও বড় ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, আমাদের সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে। মিয়ানমারে আরও ব্যাপক নৃশংস অপরাধ ঘটতে পারে। তবে আমি আশা করব, আমার এ কথা যেন ভুল হয়। এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
শুক্রবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে বার্ষিক মানবাধিকার রিপোর্ট উপস্থাপনকালে অ্যান্ড্রুজ বলেন, আমি তথ্য পেয়েছি যে মিয়ানমারের দুর্গম উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে হাজার হাজার সৈন্যসহ ভারী অস্ত্র মোতায়েন করা হয়েছে। এই তথ্যগুলো ইঙ্গিত দেয় যে, জান্তা সরকার মানবতার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধের প্রস্তুতি নিচ্ছে’।
গত ১ ফেব্রæয়ারি সু চি সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতায় বসে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এরপর থেকেই দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে সাধারণ মানুষের ওপর দমন-পীড়ন অব্যাহত রেখেছে জান্তা সরকার। জান্তা বিরোধীদের ওপর চালানো রক্তক্ষয়ী অভিযানে ১ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। বিক্ষোভের শুরু থেকে গ্রেপ্তারের সংখ্যা ৮ হাজার ছাড়িয়েছে।
অ্যান্ড্রুজ বলেন, আমাদের সকলের প্রস্তুত থাকা উচিত, মিয়ানমারের এই অংশের লোকেরা আরও বেশি গণহত্যার মুখোমুখি। আমি আশা করছি আমার আশঙ্কা ভুল প্রমাণিত হোক।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে পুলিশ চেকপোস্টে সহিংসতার পর বহুদিন ধরে চালানো রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। হত্যা ও ধর্ষণ থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী অবস্থান করছে। জাতিসংঘ এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ বলে উল্লেখ করেছে। একে নিধনযজ্ঞ বলেছে যুক্তরাষ্ট্রও।