মিয়ানমারে অসহযোগ আন্দোলনে অর্ধসহস্রাধিক পুলিশ সদস্য ‘পরিস্থিতির অবসানে তৎপর যুক্তরাষ্ট্র’

32

মিয়ানমারে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এর অবসানে আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে বাইডেন প্রশাসন। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি এ কথা জানিয়েছেন। ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই-এর প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গত ১ ফেব্রæয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে ব্যাপক গণ বিক্ষোভ এবং নাগরিক অসহযোগ আন্দোলন চলছে। বিক্ষোভকারীরা সেনা শাসনের অবসান এবং দেশটির নির্বাচিত নেতাদের মুক্তির দাবি করছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দেশটির অভ্যুত্থান এবং বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংস নিপীড়নের নিন্দা জানালেও তা উপেক্ষা করছে সেনা সরকার। বিক্ষোভকারীরাও জীবনের পরোয়া না করে প্রতিবাদ জানিয়ে যাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন জেন সাকি। তিনি বলেন, সেনা অভ্যুত্থান যে অগ্রহণযোগ্য তা মিয়ানমারকে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিতে নিষেধাজ্ঞার পদক্ষেপ নিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। জেন সাকি আরও বলেন, ‘বার্মার (মিয়ানমার) অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।’
আলাদা এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রিসে বলেন, গত ৩ মার্চ মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হাতে ২৪ জনের মতো নিহত হওয়ার খবরে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে কষ্ট অনুভব করছে। তিনি আরও বলেন, ‘বার্মিজ নিরাপত্তা বাহিনী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারী, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজসহ সাধারণ জনগণের ওপর যে ধরনের সহিংসতা চালাচ্ছে, তার দৃঢ় নিন্দা জানাচ্ছি আমরা। সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের জন্য বার্মিজ সেনাবাহিনীর প্রতি আহŸান জানিয়ে যাব আমরা।’
এদিকে মিয়ানমারে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রপন্থীদের চলমান সিভিল ডিজ অবেডিয়েন্স মুভমেন্ট (সিডিএম) বা অসহযোগ আন্দোলনের পরিধি ক্রমেই বাড়ছে। বার্মিজ সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতী জানিয়েছে, এরইমধ্যে ছয়শ’ পুলিশ সদস্য এ আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। ৪ মার্চ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক এবং শুক্রবার আরও ১০০ পুলিশ সদস্য সিডিএমের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। ইরাবতী জানিয়েছে, দেশজুড়ে সরকারি বাহিনীর দমনপীড়ন শুরুর পর থেকেই বেসামরিক নাগরিকদের অসহযোগ আন্দোলনের দিকে ঝুঁকে পড়েন অনেক পুলিশ সদস্য। ফেব্রæয়ারির শেষদিকে সহিংসতার পর এ সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। নেপিদোর একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সিআইডি, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, ট্যুরিস্ট সিকিউরিটি পুলিশ, সিকিউরিটি পুলিশ এবং প্রশিক্ষণ ডিপোর অনেক কর্মকর্তা সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের অংশ হিসেবে সরকারি দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রয়েছেন।
সারাদেশেই এমন ঘটনা ঘটলেও একমাত্র ব্যতিক্রম রাখাইন রাজ্য। সেখানে পুলিশের কোনও সদস্যকে অসহযোগ কর্মসূচিতে যোগ দিতে দেখা যায়নি। এ রাখাইন রাজ্যেই রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালিয়েছিল সেনাবাহিনী। নেপিদোর ওই কর্মকর্তা বলেন, স্পেশাল ব্রাঞ্চের মেজর টিন মিন তুনের সিডিএমে অংশগ্রহণ পুলিশের ওপর দুর্দান্ত প্রভাব ফেলেছে।