মিশার পাশে থাকব : মৌসুমী

362

প্রার্থীদের একে অপরের প্রতি অভিযোগের ফুলঝুড়ি আর ব্যক্তিগত আক্রমনে শুরু হওয়া বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর স¤প্রীতির বার্তা ছড়ালেন নির্বাচনকে ঘিরে ‘বন্ধু থেকে প্রতিদ্ব›দ্বী’ বনে যাওয়া খলঅভিনেতা মিশা সওদাগর ও চিত্রনায়িকা আরিফা জামান মৌসুমী।
বাংলাদেশ ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের (বিএফডিসি) অন্যতম এই সংগঠনের নির্বাচনে সবার চোখ ছিল সভাপতি পদের দিকে; যেখানে দুই বন্ধু মিশা ও মৌসুমীর হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে অপেক্ষায় ছিলেন ভোটাররা।
ফলাফল প্রকাশের আগেই নানা গুজব, আলোচনাকে পাশ কাটিয়ে মৌসুমীর চেয়ে ১০২ ভোট বেশি পেয়ে জয়ের মালা গলায় তুলেছেন মিশা।
মিশাকে শুভকামনা জানিয়েছেন মৌসুমী; মিশার নেতৃত্বে শিল্পী সমিতির কাজে পাশে থাকার প্রতিশ্রæতিও দিয়েছেন ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ চলচ্চিত্রের এ নায়িকা।
ফলাফল প্রকাশের পর শনিবার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে আলাপচারিতায় মৌসুমী নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে বলেন, “নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে আমি কোনো অভিযোগ করতে চাচ্ছি না।”
তার চেয়ে বরং শিল্পীদের পাশে থাকার বিষয়েই অধিকতর মনোযোগী তিনি। শিল্পীদের নিয়ে কাজ করলে মিশাদের পাশে থাকার অঙ্গীকারও করলেন তিনি।
“শিল্পী সমিতি যে সিদ্ধান্তগুলো নেবে সেগুলোর সঙ্গে আমিও একমত থাকব। শিল্পী জন্য কাজ করলে আমি ওদের পাশে থাকব; কিন্তু ব্যক্তিগত কাজের ক্ষেত্রে হাত বাড়াবো না। শিল্পীদের উন্নয়নে কিছু করে সেখানে অবশ্যই যাবো।”
মিশা সওদাগরও পুরানো বিভেদ ভুলে স¤প্রীতির বার্তা দিয়ে বললেন, শিল্পীদের উন্নয়নে মৌসুমীকে পাশে নিয়েই এগিয়ে যেতে চান তারা।
ব্যক্তিগত জীবনে দুই বন্ধু মিশা ও মৌসুমী নির্বাচনকে ঘিরে একে অপরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে বরাবরই আলোচনার খোড়াক জুগিয়েছেন। কখনও কখনও তারা ব্যক্তিগত আক্রমনে সামিল হলেও ভোটের দিনে বেশ খোশ মেজাজেই দেখা গেছেন তাদের।
বেশ কয়েকবার মুখোমুখি সাক্ষাতে হাসিমুখে কুশল বিনিময় করেছেন; সাংবাদিকদের সামনে হাসিমুখে ছবিও তুলেছেন।
শুক্রবার বিকেলে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে দু’জনেই স্বস্তির কথা শুনিয়েছিলেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে।
প্যানেল ঘোষণার দিন নির্বাচনে বিশৃঙ্খলার শঙ্কার কথা জানালেনও নির্বাচনের দিন মৌসুমী বলেছিলেন, নির্বাচনের পরিবেশ খুবই ভালো। বিশেষ করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য নির্বাচনের পরিবেশ ভালো ছিল।
নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে কোনো প্রশ্ন ছিল না মিশা সওদাগরেরও। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, মৌসুমী ও আমি দুজনেই নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার কথা বলেছি। এটিকে আমি সাধুবাদ জানাই।”
শুক্রবার দিনভর নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণার আগেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে মৌসুমীর সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর একসঙ্গে গণমাধ্যমের মুখোখি হয়েছিলেন তারা।
মৌসুমী বলেছিলেন, আমরা একটাই ফুল কিনে রেখেছি। যে জিতবে তার গলাতেই মালা উঠবে। আপাতত সবাইকে অপেক্ষা করতে হবে মধ্যরাত পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত সেই মালাটি মিশার গলাতেই উঠে।
শিল্পী সমিতির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো নারী সভাপতি পদে নির্বাচনে অংশ নিয়ে নজির স্থাপন করেছেন বলে মন্তব্য এসেছে নির্বাচন কমিটির প্রধান ইলিয়াস কাঞ্চনের তরফ থেকে।
শুক্রবার মধ্যরাতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা সময় তিনি বলেন, “জয় পরাজয় পরের বিষয়, শিল্পী সমিতির ইতিহাসে এই প্রথম কোনো অভিনেত্রী সভাপতি পদে অংশ নিলেন, এটাই অনেক বড় ব্যাপার।”