মিরসরাইয়ে ট্রেন-ট্রাকের সংঘর্ষে নিহত ১

8

মিরসরাই প্রতিনিধি

গেটম্যান ছিলেন ঘুমে আচ্ছন্ন। আর ওই সময়ই ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনের মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাট পৌরসভার রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের সাথে ড্রাম ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। এতে ট্রাক চালকের সহকারী নিহত ও চালক আহত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাত ১টা ১০ মিনিটে ঢাকামুখি ত‚র্ণা নিশিতা এক্সপ্রেস ও বারইয়ারহাটমুখি বালুভর্তি ড্রাম ট্রাকের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে নিহতরা হলেন ট্রাকের চালকের সহকারী মোরসালিন (১৯)। তিনি লক্ষীপুর জেলা সদরের আন্দারমানিক এলাকার শামসুল আলমের পুত্র। এছাড়া আহত ট্রাক চালক শাহ আলম (৪০)। তিনি লক্ষীপুর পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের সুজা মিয়ার পুত্র। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়া হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত আনুমানিক সোয়া একটার দিকে করেরহাট থেকে আসছিল বালুভর্তি ড্রাম ট্রাক। সেটি গেটম্যানবিহীন বারইয়ারহাট রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় ঢাকাগামী মহানগর ত‚র্ণা নিশিতা ধাক্কা দেয়। এতে ট্রাকটি (ঢাকা মেট্টো-ট-২২-৩৮২৬) দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ ঘটনায় চালক ও চালকের সহকারী ছিটকে পড়ে আহত হন। তাদেরকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মস্তাননগর হাসপাতালে নিয়ে যান। এরপর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সোয়া তিনটার দিকে চালকের সহকারীর মৃত্যু হয়। এছাড়া ট্রাকটির ধাক্কায় অপর একটি পিকআপও (ঢাকা মেট্টো ট-১১-২২৪১) দুর্ঘটনায় পতিত হয় বলে জানা গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দুর্ঘটনার সময় গেটম্যান আনোয়ার হোসেন তার রুমে ঘুমাচ্ছিলেন, সেজন্য দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। তিনি প্রায় সময় ঘুমিয়ে থাকেন। যদি যাত্রীবাহী কোন যানবাহন দুর্ঘটনার কবলে পড়তো, তাহলে প্রাণহানি আরো বাড়তো। গেটম্যানের দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটায় উত্তেজিত জনতা গেটম্যান আনোয়ার হোসেনকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
চিনকি আস্তানা রেল স্টেশন মাস্টার সিরাজুল হক বলেন, মঙ্গলবার রাতে বারইয়ারহাট রেলক্রসিং এলাকায় দুর্ঘটনায় ১ জন নিহত ও ১ জন আহত হয়েছেন। শুনেছি গেইটম্যান ঘুমিয়ে ছিলেন।
সীতাকুন্ড রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) ফাঁড়ির ইনচার্জ খোরশেদ আলম বলেন, মঙ্গলবার রাতে বারইয়ারহাট রেলক্রসিং এলাকায় তূর্ণা নিশিতার সাথে ড্রাম ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। এতে ট্রাকের চালক ও সহকারী আহত হন। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মস্তাননগরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সহকারীর মৃত্যু হয়। সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া চালকের অবস্থা গুরুতর। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২ সেপ্টেম্বর ভোর ৫ টায় বারইয়ারহাট রেলক্রসিংয়ে ময়মনসিংহ থেকে চট্টগ্রামমুখি বিজয় এক্সপ্রেসের সাথে ঢাকা থেকে আসা খাগড়াছড়িগামী যাত্রীবাহী এস আলম পরিবহনের একটি বাসের সংঘর্ষ হয়। ওই দুর্ঘটনায় ২ জন নিহত ও ২২ জন আহত হন। এরপর তৎকালীন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ডিভিশনাল ট্রাফিক অফিসার ফিরোজ ইফতেখারকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি হয়েছিল। তদন্ত শেষে ওই দুর্ঘটনায়ও গেটম্যানের দায়িত্বে অবহেলার কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন কর্মকর্তা ফিরোজ ইফতেখার।