মার্কিন সেনাদের পেছনে খরচ বাড়ছে দক্ষিণ কোরিয়ার

45

দক্ষিণ কোরিয়ায় মোতায়েন মার্কিন সেনাদের খরচ ভাগাভাগির চুক্তি নিয়ে সিউল ও ওয়াশিংটন ‘নীতিগতভাবে সম্মত’ হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সোমবার মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতার হয়েছে বলে জানান, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
“বিশেষ ব্যবস্থার চুক্তিতে পৌঁছাতে যুক্তরাষ্ট্র ও গণতান্ত্রিক কোরিয়া (দক্ষিণ কোরিয়ার আনুষ্ঠানিক নাম) নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে। বাকি থাকা কৌশলগত বিষয়গুলোর দ্রুত সমাধানের ব্যাপারেও উভয় পক্ষ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ,” বলেছেন ওই মুখপাত্র। নতুন এ চুক্তিতে সিউলকে বছরে প্রায় ১০০ কোটি ডলার ব্যয় করতে হবে বলে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে সিএনএন। ২০১৪ সালের সর্বশেষ চুক্তিতে প্রায় ২৮ হাজার ৫০০ মার্কিন সেনাকে নিজের দেশে রাখার বিনিময়ে দক্ষিণ কোরিয়াকে বছরপ্রতি ৮৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার ব্যয় করতে হত।
গত বছর ওই চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপর মার্চ থেকে ১০ দফা বৈঠক করেও দুই মিত্র দেশ ওই চুক্তি নবায়ন নিয়ে সমঝোতায় একমত হতে পারেনি। ১৯৫০-৫৩ সাল পর্যন্ত চলা কোরীয় যুদ্ধের সময় থেকেই কোরিয়া উপদ্বীপের দক্ষিণ অংশটিতে মার্কিন সেনা মোতায়েন আছে। সা¤প্রতিক বছরগুলোতে সেনা রাখার ব্যয়ভারে আরও বেশি অংশ নেওয়ার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর চাপ বাড়িয়ে যাচ্ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সিউলের একটি কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ জানায়, ২০১৯ সালের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার একশ কোটি ডলারের কাছাকাছি খরচের প্রস্তাবে ওয়াশিংটন সম্মতি দিয়েছে।
তবে এবার আর আগের মতো ৫ বছর মেয়াদি চুক্তি হচ্ছে না, নতুন এ চুক্তি হচ্ছে কেবল এক বছরের জন্য। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হবে বলেও জানিয়েছে ইয়োনহাপ। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক বোঝাপড়ার ওপর নজর রাখতে সিউল ও ওয়াশিংটন দুই পক্ষই ছাড় দিয়ে এ চুক্তিতে পৌঁছেছে বলেও জানিয়েছে বিভিন্ন সূত্র। উত্তরের শীর্ষ নেতা কিম জং উনের সঙ্গে চলতি মাসের শেষ দিকে ট্রাম্পের সম্ভাব্য দ্বিতীয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা জানান, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সেনা মোতায়েন বিষয়ক চুক্তিটির মেয়াদ অন্তত তিন বছর রাখতে এবং খরচের ৮৯ কোটি ১০ লাখ ডলার বহনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। গত মাসে দক্ষিণের ক্ষমতাসীন দলের এক শীর্ষ আইনপ্রণেতা জানান, যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ায় সেনা রাখতে বছর প্রতি ১২৫ কোটি ডলার দাবি করার পর দুই দেশের মধ্যে এ সংক্রান্ত আলোচনায় অচলাবস্থা দেখা দিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের এ দাবিকে ‘হঠাৎ করে দেওয়া অগ্রহণযোগ্য প্রস্তাব’ বলেও অভিহিত করেছিলেন তিনি।

দক্ষিণ কোরিয়ায় মোতায়েন মার্কিন সেনাবাবদ সিউল যে অর্থ যুক্তরাষ্ট্রকে দেয় তার প্রায় ৭০ শতাংশই মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে প্রশাসনিক, প্রায়োগিক ও অন্যান্য কাজে নিয়োজিত দক্ষিণ কোরীয় কর্মীদের বেতন দিতে খরচ হয় বলে জানিয়েছে রয়টার্স।