মার্কিন সংস্থার দাবি চীনা ঋণের ফাঁদে বহু দেশ

5

চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগের ফলে অনেক আর্থিক ভাবে দুর্বল দেশ ‘গোপন ঋণ’-এর ফাঁদে জড়িয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশেষজ্ঞ সংস্থা। তাদের দাবি, চীনের কাছে এই দেশগুলির অজানা ঋণের পরিমাণ ৩৮,৫০০ কোটি ডলার। সংস্থাটি জানিয়েছে, চীন মোট ১৬৩টি দেশে রাস্তা, সেতু, বন্দর ও হাসপাতাল তৈরিতে মোট ৮৪,৩০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। এই দেশগুলির মধ্যে আফ্রিকা ও মধ্য এশিয়ার অনেক দেশ রয়েছে। খবর বিবিসির
নতুন এক হিসেবে বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের অন্য প্রধান শক্তিধর দেশগুলো অন্য দেশকে উন্নয়নের জন্য যে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে – তার কমপক্ষে দ্বিগুণ বেশি অর্থ দিচ্ছে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের উইলিয়াম এ্যান্ড মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কেন্দ্র এইডডাটার ওই জরিপে দেখা যাচ্ছে – ১৮ বছর সময়কালে চীন মোট ১৬৫টি দেশে মঞ্জুরি বা ঋণ হিসেবে ৮৪,৩০০ কোটি ডলার পরিমাণ অর্থ দিয়েছে এবং তা খরচ হয়েছে ১৩,৪২৭টি অবকাঠামো প্রকল্পে।
এই অর্থের অধিকাংশই হচ্ছে চীনের বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় ব্যাংক থেকে আসা, এবং এগুলো দেয়া হয়েছে চড়া সুদে ‘ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ’ হিসেবে। এর এক বড় অংশই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংএর উচ্চাভিলাষী বেল্ট এ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ বা বিআরআই প্রকল্পের সাথে সম্পর্কিত। বিশ্ব বাণিজ্যের নতুন নতুন পথ নির্মাণের জন্য ২০১৩ সালে এ প্রকল্প শুরু হয়। সমালোচকরা আশংকা প্রকাশ করেন যে চড়া সুদের যেসব ঋণ থেকে চীনের এসব প্রকল্পের অর্থায়ন হচ্ছে -তা অনেক দেশের জনগণের অগোচরেই তাদের কাঁধে বিশাল ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞ সংস্থাটি জানিয়েছে, ৮৪,৩০০ কোটি ডলারের ৭০ শতাংশ সংশ্লিষ্ট দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক বা চীনা ও সেদেশের সংস্থার যৌথ উদ্যোগে তৈরি কোনো সংস্থাকে ঋণ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনেক আর্থিকভাবে দুর্বল দেশের সরকারই আর ঋণ নিতে পারেনি। ফলে অন্য পথে হেঁটেছে চীন। তারা কয়েকটি সংস্থার জোটকে ঋণ দিয়েছে। সেই জোটে সরাসরি সেদেশের সরকার নেই। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই সংস্থাগুলির জোট ঋণ মেটাতে না পারলে সরকার ঋণ মেটানোর দায় নিয়েছে। ফলে চীনের কাছে ওই দেশগুলির প্রকৃত ঋণ কত তা অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সরকারের কাছেই স্পষ্ট নয়।
জরিপে জানানো হয়েছে, ৪৫টি দেশের চিনা ঋণের পরিমাণ তাদের গড় জাতীয় উৎপাদনের ১০ শতাংশের চেয়ে বেশি। চীন হয়তো শিগগীরই ঋণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে পারে।