মার্কিন জেনারেল আফগানিস্তান ছাড়লে সন্ত্রাসবিরোধী তৎপরতা কঠিন হয়ে পড়বে

8

মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তান ছাড়লে যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী তৎপরতা কঠিন হয়ে পড়বে। এমন মন্তব্য করেছেন মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের জেনারেল কেনেথ ফ্র্যাংক ম্যাকেঞ্জি জুনিয়র। মঙ্গলবার প্রতিনিধি পরিষদের সশস্ত্র বাহিনী কমিটির কাছে নিজের এমন মতামত দেন তিনি। জেনারেল ম্যাকেঞ্জি বলেন, ‘তালেবানের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত তারা কী করে। যদি তারা আফগানিস্তানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চায়, তাহলে তাদের চুক্তি মেনে চলতে হবে।’ তিনি জানিয়েছেন, ‘আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর প্রতিবেশী কোনও দেশে গোয়েন্দা রাখার বিকল্প ভাবনা যুক্তরাষ্ট্র খতিয়ে দেখছে। তাহলে সেনা প্রত্যাহারের পরও দেশটির পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা যাবে। সেক্ষেত্রে কোনও বিপদ এলে দ্রুত তার মোকাবিলা করা যাবে।’ ভবিষ্যতে সন্ত্রাসবিরোধী মিশনের সম্ভাব্যতা সম্পর্কে কমিটিকে অবহিত করার ম্যাকেঞ্জি বলেন, ‘বিষয়টিকে আমি হালকা করে দেখাতে চাই না। রঙিন চশমা পরিয়ে বলতে চাই না সবকিছুই সহজ।’ ম্যাকেঞ্জি জানান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনকে এ মাসের শেষ নাগাদ তাকে সব ধরনের বিকল্পের কথা জানাতে বলা হয়েছে। শীর্ষস্থানীয় এই জেনারেল আইনপ্রণেতাদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে তার সামরিক বাহিনী প্রত্যাহারের পর যদি নতুন কোনও ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসী হুমকি মোকাবিলার জন্য দেশটিতে, এমনকি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যও আবার যেতে চায় তাহলে তাকে প্রচন্ড বাধার সম্মুখীন হতে হবে। মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার অংশবিশেষের দায়িত্বপ্রাপ্ত মার্কিন বাহিনীর এই কমান্ডার এমন সময়ে এই সতর্কবার্তা উচ্চারণ করলেন যখন আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনীকে দেশে ফেরানো নিয়ে কাজ করছেন কর্মকর্তারা।
এদিকে তুরস্কে অনুষ্ঠিতব্য আফগান শান্তি আলোচনা স্থগিত করা হয়েছে। আগামী শনিবার আফগান সরকার ও তালেবানের প্রতিনিধিদের এ বৈঠকে বসার কথা ছিল। জাতিসংঘ ও তুরস্কের উদ্যোগে অনুষ্ঠিতব্য ওই আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রও সমর্থন দিয়েছিল। তবে শেষ মুহূর্তে এসে এটি স্থগিতের ঘোষণা এলো। আগামী ২৪ এপ্রিল থেকে ৪ মে পর্যন্ত তুরস্কের ঐতিহাসিক ইস্তাম্বুল শহরে এ সম্মেলনের কথা ছিল। তবে মঙ্গলবার তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু জানান, আলোচনা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। পবিত্র রমজান মাসের পর বৈঠক হতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের কাছে মনে হয়েছে এই মুহূর্তে বৈঠক স্থগিত করাটাই ভালো হবে। এ নিয়ে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের সঙ্গেও আমাদের কথা হয়েছে। ঈদের পর বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, তালেবান অংশ নিচ্ছিল না বলে আলোচনা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা এবং প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। এই হামলার জন্য তালেবানদের দায়ী করে আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। ওই হামলার ২০তম বার্ষিকী অর্থাৎ আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই আফগানিস্তান থেকে সামরিক উপস্থিতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।