মানবিক ও কল্যাণব্রতী রাজনীতিক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী

57

সুজিৎ কুমার বড়ুয়া শিমুল

বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরী ষাটের দশক থেকে অদ্যাবধি নিরবচ্ছিন্ন একজন রাজনীতিক। ছাত্র রাজনীতিতে সংযুক্তির মাধ্যমে শুরু হয় তাঁর রাজনৈতিক পদচারণা। মানুষের ভালবাসার লোভ ছাড়া আর কোন প্রলোভন স্পর্শ করতে পারেনি ঐতিহ্যবাহী বহরদার পরিবারের কৃতী পুরুষ ষাটের দশকের ছাত্রলীগের আলোর পথযাত্রী রেজাউল করিম চৌধুরী ভাইকে।
চট্টগ্রামের সভ্যতা বিনির্মাণের ইতিহাসে অনিবার্য অংশ চট্টগ্রামের অন্যতম বনেদী বংশে প্রাচুর্য ও অঢেল ধন-দৌলতের মাঝে বলতে গেলে সোনার চামচ মুখে নিয়েই জন্ম হয় তাঁর। বাঙালির জাতীয় জীবনে ষাটের দশক একটি স্মরণীয় সময়। ওই দশকেই বেগবান হয় পূর্ব বাংলার জনগণের স্বাধিকার অর্জনের সংগ্রাম। এসময়ের গণআন্দোলনই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দিয়েছিল, সূচনা হয়েছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের। ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলন, সাংস্কৃতিক আন্দোলন, শ্রমিক আন্দোলন তথা সামগ্রিক গণআন্দোলন মহান মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি রচনা করেছিল। সেই ষাটের দশকের আন্দোলনে প্রধান শক্তি ছিল সংগ্রামী ছাত্রসমাজ। ১৯৫৩ সালের ৩১ মে জন্ম নেওয়া আজকের প্রবীন রাজনীতিবিদ রেজাউল ভাইয়ের বয়স তখন ১৩ বছর। পড়াশুনা চলছিল তার মুসলিম হাই স্কুলে। স্কুল যাওয়ার পথেই স্বীয় বিদ্যালয়ের মাঠে কোন কিছু একটা আয়োজনের ঘনঘটা চোখ এড়ায়নি কৌতুহলী এ কিশোরের।
এক সাক্ষাৎকারে যেভাবে বলেছিলেন রেজাউল ভাই, ‘সেদিন ছিল ২৫ ফেব্রæয়ারি ১৯৬৬ সাল। বিকেল তিনটায় লালদীঘি ময়দান খ্যাত মুসলিম হাই স্কুল মাঠে শুরু হয় আওয়ামী লীগের জনসভা। বঙ্গবন্ধু আসলেন প্রথম কোন জনসভায় ঐতিহাসিক সে ৬ দফার ঘোষণা ও সমর্থন আদায়ে। হাজারো ছাত্র যুব জনতার ভীড়েও দৃষ্টি এড়ায়নি আমার। মোহাবিষ্ট হয়ে দেখছিলাম অসাধারণ মোহময় এক ব্যক্তিত্বের মঞ্চে ওঠা। পাড়া-মহল্লায় ৬ দফার সমর্থনে জনমত গড়ে তোলার জন্য নেতাকর্মীদের আহŸান জানালেন তিনি। ভরাট কন্ঠে কিশোর মনে রেখাপাত করা বক্তব্য এখনো আমার কানে বাজে।’
মূলতঃ ঐতিহাসিক ৬ দফা প্রস্তাবে লুকিয়ে ছিল বাংলার স্বাধীনতার বীজমন্ত্র। তৎকালীন রাজনীতিবিদরা স্পষ্টই দেখতে পেলেন তৎকালীন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে পৃথক সত্বা ও স্বাধীনতার প্রস্তাবনা রয়েছে এখানে। তাই, পাকিস্তানী সামরিক জান্তার ভয়ে বাঘা বাঘা রাজনীতিবিদের অনেকেই ৬ দফার সমর্থনে প্রকাশ্যে আসতে দ্বিধান্বিত। তখন, ১৯৬৭ সালে সদস্য ফরম পূরণ করে ছাত্রলীগের সদস্য হন আজকের চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। সক্রিয়ভাবে অংশ নেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে ৬ দফা ও ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফার আন্দোলনে।
বনেদী ও ধনশালী পরিবারের সন্তান হিসেবে রেজাউল করিম ভাই চাইলে পায়ের উপর পা তুলে, শুয়ে-বসে দিনাতিপাত করতে পারতেন। কিন্তু, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি দেশের কল্যান ও দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের কঠোর সংগ্রামের পথকেই বেছে নিলেন। ১৯৬৯-১৯৭০ সালে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ১৯৬৯ সালে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষে গঠিত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের গোপন সংগঠন “নিউক্লিয়াস”-এর সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। এই ‘নিউক্লিয়াস’ এর মূল লক্ষ্য ছিল বাঙালী জাতিকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করা এবং ছাত্র ও যুবকদেরকে গোপনে স্বশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের জন্য সংগঠিত করা। জনাব রেজাউল করিম চৌধুরীকে চট্টগ্রাম কলেজের এই গোপন সংগঠনের আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। ফলে তিনি চট্টগ্রাম কলেজের এই গোপন সংগঠনকে শক্তিশালী করতে অনন্য সাধারণ ভূমিকা পালন করেন। এখানে উল্লেখ্য যে, তৎকালে চট্টগ্রাম জেলায় চট্টগ্রাম কলেজই একমাত্র কলেজ যেখানে ছাত্রলীগের এই গোপন সংগঠন ‘নিউক্লিয়াস’ চট্টগ্রামের একটি দুর্ভেদ্য ঘাঁটিতে পরিনত হয়েছিল। তিনি ১৯৬৬ সাল থেকে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব বিরোধী সকল আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এবং ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে সাহসী ভূমিকা পালন করেন। এখনো তিনি পুলিশি নির্যাতনের নির্মমতার চিহ্ন তাঁর শরীরে বহন করে চলেছেন। ১৯৭০-১৯৭১ সালে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেন তিনি। প্রশিক্ষন শেষে দেশে ফিরে ১নং সেক্টরের বি এল এফ -এর মাধ্যমে জীবন বাজি রেখে গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেন তিনি।
দেশ স্বাধীন হবার পরও থেমে থাকেনি দেশ গড়ার কাজ। শিক্ষা, শান্তি, প্রগতির ধারায় ছাত্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে ছাত্রলীগের রাজনীতি অব্যাহত রাখেন তিনি। ১৯৭২ সালে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি এবং অবিভক্ত চট্টগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৭৩-১৯৭৫ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন রেজাউল করিম চৌধুরী। পড়াশোনার জন্যে ভর্তি হয়েছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে।
১৯৭৫ সালে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হলে প্রতিবাদ ও হত্যাকারীদের প্রতিরোধ সংগ্রামে অংশ নেন ’৭১-এর রনাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। আইন পড়ায় ঐখানেই ছেদ পড়ে তাঁর। সৃজনশীল কর্মকাÐের মাধ্যমে আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় প্রকাশ করেন নানান পত্রিকা, ম্যাগাজিন, প্রবন্ধ, ইতিহাস নির্ভর গ্রন্থনা। ভয়ভীতি, হুঙ্কার, প্রলোভন কোন কিছুই মুজিবাদর্শের পথচলা থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি তাঁকে। ১৯৭৬ সালে সামরিক স্বৈরাচারী শাসকের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ‘সূর্যশপথ’ নামক পত্রিকা গোপনে প্রকাশিত করেন। উক্ত পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তিনি নিজে এবং প্রকাশক ছিলেন ছাত্রলীগ নেতা কাজী আবু তৈয়ব। ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ও ১৯৭৮ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং বঙ্গবন্ধু হত্যাকাÐের পর এই চরম দুর্দিনে ছাত্রলীগকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে তাঁর অপরিসীম ত্যাগ চট্টগ্রাম ছাত্রলীগের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। ১৯৮০ সালে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৮২-১৯৯১ সাল পর্যন্ত সামরিক শাসক এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের তিনি ছিলেন রাজপথের এক লড়াকু সৈনিক। তিনি ১৯৮৩ সালে চট্টগ্রামের উন্নয়নের দাবীতে গঠিত নাগরিক পরিষদ এবং ‘চাক্তায়’ খাল খনন সংগ্রাম কমিটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং পরবর্তীতে এই সংগঠনের চেয়ারম্যান হিসেবে চট্টগ্রামের উন্নয়ন এবং চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবীতে সামরিক স্বৈরশাসকের ভয়-ভীতিকে উপেক্ষা করে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব প্রদান করেন। ১৯৯২ সালে তিনি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের সদস্য, ১৯৯৭-২০০৬ সালে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক, ২০০৬-২০১৪ সালে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে চট্টগ্রামের রাজনীতিতে আলাদা একটি পরিচিতি রয়েছে রেজাউল ভাইয়ের। বর্তমানে তিনি নগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়াও তিনি চট্টগ্রামের মানুষের কল্যাণে তাদের দাবি দাওয়া আদায়ের নানান সংগ্রাম পরিচালনা করেছেন। বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছেন নিষ্ঠার সাথে। প্রতিষ্ঠা করেছেন নানান সেবামূলক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তিনি এলাকার ছাত্র-যুবকদেরকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য নিজস্ব জায়গায় ও নিজ অর্থে প্রতিষ্ঠিত করেন ‘সামশুন নাহার হারুন পলিটেকনিক ইনিষ্টিটিউট’ ও ‘সামশুন নাহার হারুন টেকনিক্যাল ট্রেনিং ইনিষ্টিটিউট’।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল ৫ বছর এবং ২০০৮ সাল থেকে টানা তিন মেয়াদের ১২ বছর নিজের দল আওয়ামীলীগ রাষ্ট্র পরিচালনায়। কিন্তু, কেউ কোনদিন তাঁর বিরুদ্ধে কোন প্রকার দুর্নীতি-অনিয়ম, প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ তুলতে পারেনি। প্রজন্মের কাছে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে এবং মুজিবাদর্শের প্রতি অনুরাগী করতে তাঁর সম্পাদিত ‘ছাত্রলীগ, ষাটের দশকে চট্টগ্রাম’ বইটি একটি ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনা। চট্টগ্রামে ষাটের দশকের মোট ২৯৩ জন ছাত্রলীগ নেতার জীবনালেখ্য গ্রন্থটিতে সন্নিবেশিত করা হয়। গ্রন্থটির মোড়ক উম্মোচনের দিনে তিনি ষাটের দশকের ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের মিলনমেলার আয়োজন করেন। প্রামাণ্য গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করেন সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী।
রাজনীতিতে কালো টাকা ও পেশী শক্তির প্রবেশ ঘটে ১৯৭৫ পরবর্তী সামরিক ও স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের মাধ্যমে। দীর্ঘ একুশটা বছরে রাজনীতিতে ডাল-পালা বিস্তারের মধ্য দিয়ে অপরাজনীতি মহীরুহ আকার ধারন করে। কালো টাকা আর বাহিনী নির্ভর নেতৃত্ব রাজনীতিকে চরমভাবে দুর্বৃত্তায়িত করে ফেলে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সৎ, যোগ্য, মেধাবী নেতৃত্ব নির্বাচনী ময়দানে বার বার মার খেতে থাকে। বিষয়টা এমন হয়ে দাঁড়ায় যে, সৎ মানুষেরা রাজনীতি করবে, সমাজনীতি করবে, জনসেবা করবে কিন্তু জনপ্রতিনিধিত্ব ও নেতৃত্বের আসনে থাকবে অর্থশালী ও সন্ত্রাসের লালন-পালন কর্তারা।
রাজনীতিতে এ অপসংস্কৃতির কারণে প্রতিটি ক্ষেত্রে লাগামহীন দুর্নীতি উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করছে। দীর্ঘ ষড়যন্ত্রের জাল ছিড়ে ২০০৮ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বারের মত দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে আবারো টানা মেয়াদে সরকার গঠন করে দেশকে উন্নয়নের অনন্য মাত্রায় পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন। কিন্তু, ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে বিশ্বের উন্নত দেশসমূহের কাতারে নিয়ে যেতে তাঁর যে পরিকল্পনা তা বাস্তবায়নে দুর্নীতি একটি বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে নিঃসন্দেহে। সৎ, যোগ্য লোকগুলো অপরাজনীতির ধারার কাছে পরাভূত হয়ে রাজনীতি বিমুখ হয়ে পড়লে এ দুর্নীতির শেখর আরো অনেক গভীরে পুতিত হবে। তখন, দুর্নীতির বিষবৃক্ষ কেবল উন্নয়নের পথে বাঁধাই নয় বরং সমস্ত অর্জনকে গিলে খেয়ে ফেলবে। তাই বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল থেকে রাজনীতিকে দুর্বৃত্তায়নমুক্ত করতে কঠোর কার্যক্রম শুরু করেছেন। পাশাপাশি সৎ, যোগ্য, ত্যাগী রাজনীতিবিদদের রাজনীতিতে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে দলীয় ও সরকারী দায়িত্ব অর্পণ করার কাজ শুরু করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদের জন্য এমন একজনকে তিনি মনোনয়ন দিয়েছেন যার রয়েছে দীর্ঘ রাজনৈতিক পথচলার অভিজ্ঞতা। তিনি চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জমিদার বংশীয় পরিবার বহরদার পরিবারের সুযোগ্য সন্তান, সৎ, পরিচ্ছন্ন, সাহসী ও ত্যাগী আলোচ্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। বিশ্ব মহামারী করোনাভাইরাসের প্রভাব নিয়ন্ত্রণে বিগত ২৯ মার্চের এ নির্বাচন স্থগিত করার পর, তিনি মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়েছেন সচেতনতা বাড়াতে। খাদ্য ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন নগরবাসীর। বয়স ও সংক্রমণ ঝুঁকি ঘরে বন্দী রাখতে পারেনি মুক্তিপাগল এ মানুষটিকে। একদিন এ দেশ, দেশের মাটি ও দেশের মানুষকে পাক ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষনের হাত থেকে মুক্ত করতে মহান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সশস্ত্র যোদ্ধা হয়ে ওঠা সেদিনের টগবগে যুবক আজও ক্রান্তি লগ্নে চিকিৎসাক্ষেত্রে এক শ্রেণির শোষক গোষ্ঠীর অরাজকতা ও অমানবিক আচরন হতে মুক্তি আনতে ‘মুক্তি করোনা আইসোলেশন সেন্টার’ গড়েছেন। নগরীর বাকলিয়াস্থ কালামিয়া বাজার এলাকায় গড়ে তোলা এ আইসোলেশন সেন্টারে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পাবে চট্টগ্রামের মানুষ। পাবে অক্সিজেন সুবিধা, পাবে ডাক্তারী পরামর্শ, নার্সিং, ঔষধ পথ্য। সাদা মনের মানুষ, মুজিবাদর্শের ধারক ও বাহক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর প্রতি রইল আমার বিনম্র শ্রদ্ধা।
লেখক: সংগঠক ও সাবেক ছাত্রনেতা