মাদক মামলায় সাক্ষী দেয়ায় জেল থেকে বেরিয়ে হামলা

9

মিরসরাই প্রতিনিধি

মিরসরাইয়ে মাদককারবারী আটক ও মাদক উদ্ধারের ঘটনায় বিজিবির দায়েরকৃত মামলায় সাক্ষী দেয়ায় জেল থেকে বেরিয়ে মাদককারবারীর হামলার শিকার হয়েছেন সাক্ষীদাতা। এই ঘটনায় জোরারগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন হামলার শিকার ফখরুল ইসলাম। পুলিশ সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
গত শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার ১নং করেরহাট ইউনিয়নের পশ্চিম অলিনগর লিচুতলা বাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার ফখরুল ইসলাম জোরারগঞ্জ থানার করেরহাট ইউনিয়নের পশ্চিম অলিনগর গ্রামের মৃত নুরুল হুদার ছেলে। মাদক কারবারী লিয়াকত হোসেন শিপুল, তার দুই সহোদর শওকত ও শাকিল, কামাল উদ্দিনের ছেলে ফারুক, শওকতের ছেলে শরিফ ও বাবনের ছেলে শাহাদাতকে অভিযুক্ত করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি ফেনী ব্যাটালিয়ন ৪ বিজিবির অলিনগর বিওপি ক্যাম্পের সদস্যরা করেরহাট ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পশ্চিম অলিনগর লিচুতলা বাজার সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে লিয়াকত হোসেন শিপুলকে ৪৯৫ পিস ইয়াবাসহ আটক করে। ঐসময় স্থানীয় বাসিন্দা আজিজুল হক, ফখরুল ইসলাম ও আলমগীর প্রকাশ দেলোয়ার হোসেনসহ তিন জন বিজিবির হাতে মাদকসহ আটক হন। এই ঘটনায় বিজিবি মামলা করে। সেই মামলায় সাক্ষী হন ফখরুল।
এর জেরে মাদক কারবারী শিপুল প্রায় ১ মাস জেল খেটে গত ৩ ফেব্রুয়ারি জামিনে বের হয়ে আসে। এরপর গত শনিবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় সাক্ষী হওয়ার জেরে এবং বিজিবির সোর্স সন্দেহে সংঘবদ্ধ মাদককারবারীরা ফখরুল ইসলামের উপর হামলা চালায়। এসময় নগদ ৫০ হাজার ৮০০ টাকা, একটি মোবাইল ফোন ও ৮ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, মাদকসহ আটক হওয়ার পর জামিনে বের হয়ে এসে আগের মতই দেদারছে দাপটের সাথে মাদকের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে শিপুল।
হামলার শিকার ফখরুল ইসলাম বলেন, জানুয়ারি মাসের ৯ তারিখে বিজিবি অলিনগর ক্যাম্পের সদস্যদের অভিযানে শিপুল নামে একজনকে ইয়াবাসহ আটক করে। ঐসময় বিজিবির অনুরোধে আমি দ্বিতীয় সাক্ষী হই। শনিবার সন্ধ্যায় মাদক কারবারি শিপুল তার দলবল নিয়ে আমার উপর হামলা চালায়। সেই সাথে আমার সঙ্গে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণের চেইন ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়। আহত অবস্থায় আমাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মস্তাননগর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসা নেওয়ার পর নিজের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে হামলাকারীদের নাম উল্লেখ করে জোরারগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি এবং হামলার বিষয়টি বিজিবি অধিনায়ক (সিও) ও অলিনগর ক্যাম্প কমান্ডারকে অবহিত করেছি।
করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত আছি, আমাকে অলিনগর ক্যাম্প থেকে জানানো হয়েছে।
ফখরুল ইসলামের উপর হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে অলিনগর বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি এই বিষয়ে অবগত আছি।
জোরারগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাফিজুল ইসলাম জানান, অলিনগর এলাকায় ফখরুল ইসলাম নামে একজনের উপর হামলার ঘটনায় সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।