মাঠের আন্দোলনে ইতি টানলেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা

16

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ডের বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের ‘মাঠপর্যায়ের আন্দোলনের ইতি টেনেছেন’। তবে, এ হত্যা মামলার তদন্ত কার্যক্রমের মাধ্যমে চার্জশিট দাখিলের পর আসামিদের স্থায়ী বহিষ্কারাদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কোনো ধরনের একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করে একথা জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অন্যতম সায়েম। খবর বাংলানিউজের
গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মীর হাতে নির্দয় পিটুনির শিকার হয়ে মারা যান তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭ ব্যাচ) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের। এ হত্যাকান্ডের পর আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্ত করতে ডিবিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পরদিন থেকে ১০ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছিল।
যদিও বুয়েট কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু দাবিই বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু আন্দোলনে অনড় শিক্ষার্থীরা বলে আসছিলেন, দাবিগুলো বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত তারা আশ্বাসে ভরসা রাখতে পারছেন না।
তবে মঙ্গলবারের ব্রিফিংয়ে সায়েম বলেন, বুয়েট প্রশাসন চলমান তদন্ত প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি সাধনের মাধ্যমে সদিচ্ছা ইতোমধ্যে দেখিয়েছে। আমরা সেই সদিচ্ছার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে বুধবার আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মসূচিতে ইতি টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং বুয়েটের সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মিলে গণশপথে অংশ নেবো। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের ক্যাম্পাসে সা¤প্রদায়িকতা ও সন্ত্রাস রুখে দেওয়ার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবো।
আবরার ফাহাদের খুনিদের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সুস্পষ্টভাবে আমরা বলতে চাই মাঠ পর্যায়ের কর্মসূচির ইতি টানলেও সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করতে থাকবো আমাদের দাবি-দাওয়াগুলো প্রশাসন বাস্তবায়ন করছে কি-না এবং ফাইনালি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চার্জশিট দাখিলের পর অপরাধীদের একাডেমিকভাবে স্থায়ী বহিষ্কারের আগ পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোনো রকম একাডেমিক কার্যক্রম অংশ নেবে না। আমরা খুনিদের সঙ্গে একাডেমিক কালচার শেয়ার করতে রাজি নই।
আন্দোলন ভিন্নখাতে প্রবাহিত হতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করে সায়েম বলেন, বিগত কয়েক দিন ধরে আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, ভাইয়ের লাশকে পর্দা হিসেবে ব্যবহার করে আড়ালে-অন্তরালে অনেক স্বার্থন্বেষী সংগঠন নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন। আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, এদের সঙ্গে আমাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এর পাশাপাশি আমরা দেশবাসীকে আহব্বান জানাই, এসব স্বার্থন্বেষী মহলের এজেন্ডা দেখে আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। রাজপথে আমাদের অবস্থানকে দীর্ঘায়িত করে এ আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার সুযোগ আমরা দিতে চাই না।