মাছ থেকে শুকনা খাবার তৈরি করলেন রাবির গবেষকরা

7

পূর্বদেশ ডেস্ক

বিভিন্ন প্রজাতির মাছ থেকে প্রোটিনসমৃদ্ধ ৫ ধরনের ভিন্ন ভিন্ন ৯টি শুকনা খাবার তৈরি করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফিশারিজ বিভাগের তিন গবেষক।
গবেষকরা হলেন, মুখ্য গবেষক অধ্যাপক ড. তরিকুল ইসলাম, সহ-গবেষক অধ্যাপক ড. ইয়ামিন হোসেন ও ড. সৈয়দা নুসরাত জাহান।
গতকাল রবিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের কনফারেন্স রুমে ‘গবেষণা ফলাফল শেয়ার ও প্রোডাক্ট লঞ্চিং’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান গবেষকরা।খাবারগুলো হলো, রেডি টু কুক ধরনের মধ্যে রয়েছে ফিশ বল (তেলাপিয়া ও টুনা), ফিশ সসেজ (পাঙ্গাস ও ম্যাকরল), ব্যাটারড অ্যান্ড ব্রডেড ফিশ (তেলাপিয়া ও হোয়াইট স্যাপার), ফিশ মেরিনেডস (সারডাইন) এবং রেডি টু ইট ধরনের মধ্যে রয়েছে ফিস ক্র্যাকার্স (তেলাপিয়া ও টুনা)। ভোক্তা পর্যায়ে এসব খাবারের স্বাদ ও মান যাচাইয়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যুভনিয়র শপ, রাজশাহীর আমানা বিগ বাজার ও ঢাকায় বিএআরসি ক্যান্টিনে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে খাবার ক্রয় করে সাধারণ মানুষেরা একটি তথ্য ফর্ম পূরণ করতে পারবেন।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) ও বিশ্ব ব্যাংকর সহযোগিতায় এক প্রকল্পের আওতায় তারা গবেষণা সম্পন্ন করেন। খবর বাংলানিউজের
অনুষ্ঠানে মুখ্য গবেষক ও ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক তারিকুল ইসলাম বলেন, শহুরে মানুষ এখন কাঁচা উপাদানের পরিবর্তে তৎক্ষণাৎ রান্নার উপযুক্ত অথবা খাওয়ার উপযুক্ত খাদদ্রব্য খুঁজে বেড়ায়। আমাদের দেশের সুপারশপগুলোত বিভিন্ন ধরনের মাংসজাত দ্রব্য, প্যাকটজাত খাবার পাওয়া গেলেও মৎস্যজাত দ্রব্য খুব কম পাওয়া যায়। হিমায়িত দ্রব্যের পাশাপাশি কীভাবে শীতলীকৃত এসব মৎস্যজাত দ্রব্য বাজারে প্রচলন করা যায় সেটি নিয়ে ভাবতে হবে। কারণ আমাদের দেশের ভোক্তারা হিমায়িত খাবারের চেয়ে শীতলীকৃত দ্রব্য বেশি পছন্দ করেন।
তিনি আরও বলেন, তিনটি উদ্দেশ্য নিয়ে এই গবেষণা প্রকল্পের কাজ করা হয়। সেগুলা হলো, স্বাদুপানি ও সামুদ্রিক মাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের রেডি টু কুক এবং রেডি টু ইট খাদ্যদ্রব্য তৈরি করা, মডিফাইড এটমোস্ফিয়ারে প্যাকজিং করে বিভিন্ন তাপমাত্রায় সংরক্ষণ ও স্থায়িত্বকাল নির্ণয় করা এবং প্যাকেটজাত এসব মৎস্যজাত দ্রব্য স্বল্প পরিসরে বিক্রি করার মাধ্যমে ভোক্তাদের গ্রহণযোগ্যতা নির্ণয় করা।
সৈয়দা নুসরাত জাহানের সঞ্চালনায় সহ-গবেষক অধ্যাপক ইয়ামিন হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল মৎস্যজাত খাদ্যদ্রব্য হবে দেশের দ্বিতীয় রপ্তানিজাত পণ্য। আমরা সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়া বর্তমান সময়ে অনেকে নানা কারণে মাছ খেতে চান না। তাদের জন্য সরাসরি মাছ গ্রহণ না করে যাতে মাছের প্রোটিন পান সেটি নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি আমাদের তৈরি এসব খাবার মানুষের জন্য ভালো কিছু বয়ে নিয়ে আসবে।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ধরনের চরিত্র হওয়া উচিত আপনারা সেটি গবেষণার মাধ্যমে পালন করেছেন। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুধু পুঁথিগত পাঠদান নয় বরং বিভিন্ন বিষয়ে পাঠদানের সঙ্গে সঙ্গে গবেষণা করা ও গবেষণালব্ধ জ্ঞান মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। এছাড়া কোনো জ্ঞান যদি মানব কল্যাণে ব্যবহার না হয় তাহলে সে জ্ঞান মূল্যহীন। আপনারা যেটি করেছেন সেটি বর্তমান সময়ের জন্য বেশি কার্যকরী।
ফিশারিজ বিভাগের সভাপতি মনজুরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম, প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হকসহ বিভিন্ন বিভাগের ডিন ও শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।