মাছের পোনা খাদক সাকার ফিস পাওয়া গেল হালদায়

27

হাটহাজারী প্রতিনিধি

হালদা নদীর মোহনা হতে মদুনাঘাট সেতু পর্যন্ত গতকাল শনিবার ৬টি স্পটে পরিচালিত অভিযানে সাড়ে ৪ হাজার মিটার ঘেরা জাল জব্দ করেছে নৌ পুলিশ। এ সময় কচুখাইন এলাকা থেকে জব্দকৃত ঘেরা জালে মিলেছে মাছ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকারক সাকার ফিশ। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে হালদা পাড়ের ডিম সংগ্রহকারীরা। পাশাপাশি এসব মাছের বিস্তৃৃতি হালদার জন্য একটি অশনি সংকেত বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে হালদার মাছ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সাকার ফিশের বিষয়টি সংশ্লিষ্টরা তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পাশাপাশি কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।
হালদা নদীর মোহনা হতে মদুনাঘাট সেতু পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া চট্টগ্রাম সদরঘাট নৌ পুলিশের ওসি এবিএম মিজানুর রহমান জানান, ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত হালদার মোহনা হতে মদুনাঘাট সেতু সংলগ্ন মোট ৬টি স্পটে এ অভিযান পরিচালনা করে এই ঘেরা জাল জব্দ করা হয়। এছাড়া অভিযান চলাকালে কচুখাইন এলাকা থেকে জব্দকৃত ঘেরা জালে একটি সাকার ফিশের সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করেন।
হালদায় সাকার ফিশের সন্ধান মিলেছে এমন তথ্যে উদ্বিগ্ন হাটহাজারীর গড়দুয়ারা এলাকার হালদা পাড়ের ডিম সংগ্রহকারী মৎস্যজীবী কামাল সওদাগর জানান, দ্রুত বংশ বিস্তারকারী মাছটি জলজ পোকামাকড় ও শ্যাওলার পাশাপাশি ছোট মাছ এবং মাছের পোনা খেয়ে থাকে। যদি নদীতে হালদায় সাকার ফিশ ছড়িয়ে পড়ে তাহলে নদীর মাছ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য বেশ ক্ষতি হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হালদা বিশেষজ্ঞ ও চবি প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, সাকার ফিশ, যার পুরো নাম সাকার মাউথ ক্যাটফিশ। বৈজ্ঞানিক নাম হিপোসটোমাস প্লেকোসটোমাস। এটি দেশীয় জীববৈচিত্র্য এবং জলাশয়ের জন্য হুমকিস্বরূপ। এই মাছের বিস্তৃৃতি হালদার জন্য একটি অশনি সংকেত। এরা খুব অল্প অক্সিজেনে বাঁচতে পারে এবং দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করতে পারে। তাছাড়া সাকার ফিশের পাখনা খুব ধারালো। ধারালো পাখনার আঘাতে সহজেই অন্য মাছের দেহে ক্ষত তৈরি হয় এবং পরবর্তীতে পচন ধরে সেগুলো মারা যায়।
হালদার মাছ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সাকার ফিশের বিষয়টি সংশ্লিষ্টরা তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পাশাপাশি কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী।