মহীউদ্দিন

4

মহীউদ্দিন, বিংশ শতাব্দীর একজন সাম্যবাদী ধারার কবি। নির্যাতিত, বুভুক্ষু ও দারিদ্র পীড়িত মানুষের মুক্তির বাণী তার কবিতায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রকাশিত। বঞ্চিত ও শোষিত জনগণকে বৈপ্লবিক চিন্তাধারায় উদ্বুদ্ধ করাই ছিল তার সাহিত্য সাধনার মূল লক্ষ্য। তার কামিনীকাঞ্চন উপন্যাস এবং ‘অন্ন চাই, আলো চাই পত্রিকা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক বাজেয়াপ্ত হয়। তিনি কাজী নজরুল ইসলামের মতাদর্শের অনুসারী কবি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সাহিত্যকর্মের জন্য ১৯৬২ সালে প্রেসিডেন্টের ‘প্রাইড অব পারফরমেন্স’ পুরস্কার লাভ করেন। স্বাধীনতা পূর্বকালে তিনি শ্রমিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার খালপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। গ্রামের পাঠশালায় দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন। আট বছর বয়সে পিতার মৃত্যু ঘটলে জীবিকা অর্জনের জন্য কলকাতায় গমন করেন ১৯১৪ সালে।
কর্মজীবন শুরু হয় মির্জাপুরের এক পুস্তক বাঁধাই কারখানায়। অতপর কম্পোজ ও প্রæফ রিডিং শিখে বিভিন্ন প্রেসে কর্ম সম্পাদনা করেন। নিজ চেষ্টায় ইংরেজি ও বাংলায় দক্ষতা অর্জন। দেশের রাজনৈতিক কর্মকাÐে যুক্ত হন। ১৯২০-২২ সালে অসহযোগ আন্দোলনে যোগদান। ১৯২৫ সালে প্রখ্যাত কমিউনিস্ট নেতা কমরেড মুজফ্ফর আহ্মেদের সান্নিধ্যে এসে সাম্যবাদে দীক্ষা গ্রহণ। ১৯২৮ সালে খিদিরপুর জাহাজি শ্রমিকদের আন্দোলনে যোগদান। মাসিক ‘জাহাজি’ (১৯২৮) ও সাপ্তাহিক ‘নাবিক’ পত্রিকা সম্পাদনা। ১৯৩৬ সালে ইন্ডিয়ান কোয়ার্টার্স মাস্টার্স ইউনিয়নের সেক্রেটারি নির্বাচিত। ১৯৪০ সালে তৎকর্তৃক ইন্ডিয়ান সেলার্স ইউনিয়ন গঠন এবং বেঙ্গল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের সহ-সভাপতি নির্বাচিত। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর কলকাতা ত্যাগ করে ঢাকায় আগমন এবং স্থায়ীভাবে বাস। মাসিক ‘অন্ন চাই, আলো চাই (১৯৪৯) পত্রিকা প্রকাশ ও সম্পাদনা। ইস্ট পাকিস্তান ফেডারেশন অব লেবারের রিসার্চ অফিসার ছিলেন ১৯৫৪-৫৭ সালে। এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হিসেবে ১৯৫৬-এর জুন মাসে অক্সফোর্ডের খ্রিস্টচার্চ কলেজে অনুষ্ঠিত ‘ঝঃঁফু ঈড়হভবৎবহপব ড়হ ঐঁসধহ চবৎভড়ৎসধহপব’ সম্মেলনে যোগদান। আদমজী জুট ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ছিলেন ১৯৫৪-৫৫ সালে।
তাঁর লিখিত কবিতার বইগুলো হচ্ছে :
* পথের গান (১৯৩৬), * স্বপ্ন সংঘাত যুদ্ধ ও বিপ্লব (১৯৪২), * অন্ধকারে ষড়যন্ত্র (১৯৪২), * এলো বিপ্লব (১৯৪২), * দিগন্তের পথে একা (১৯৬০), * গরীবের পাঁচালী (১৯৬২)।
তার লিখিত উপন্যাস হচ্ছে নতুন সূর্য, আলোর পিপাসা ও দুর্ভিক্ষ। নিরুদ্দেশের যাত্রী (১৯৫৩) তার গল্পসংকলন। রক্তাক্ত পৃথিবী (১৯৪২) নাটক। তার অনূদিত গ্রন্থ হচ্ছে প্রাচীন বিজ্ঞানের ইতিহাস (১৯৭০), জরথুস্ত্র বললেন (১৯৭২), আধুনিক জগৎ ও মানবজ্ঞান (১৯৭৩), বিবর্তন (১৯৭৫) প্রভৃতি। টহফবৎ ঞযব ঝযধফড়ি ড়ভ ধহ অহধৎপযরপ ডড়ৎষফ (১৯৪২), ঞযব ডড়ৎফ (১৯৬৫), ঞযব চড়বস ড়ভ ঞযব চধফসধ ধহফ ঃযব চৎড়ংব ড়ভ ঞযব ঞযবসং তার ইংরেজি কাব্যগ্রন্থ। সূত্র : উইকিপিডিয়া