মর্গের পাহারাদার যে কারণে গ্রেপ্তার

50

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে আনা দুই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে মো. সেলিম (৪৮) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চমেক হাসপাতাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিআইডি চট্টগ্রাম জেলা ও মেট্রো ইউনিটের সুপার (এসপি) মো. শাহনেওয়াজ খালেদ।
মো. সেলিম কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মৃত নোয়াব আলীর ছেলে। তিনি নগরের চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট খাজা রোড এলাকায় থাকতেন। দীর্ঘদিন ধরে সেলিম চমেক মর্গ দেখাশোনা ও পাহারাদার হিসেবে কাজ করে আসছিলেন।
সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ৭ ফেব্রæয়ারি নগরীর চকবাজার থানা এলাকা থেকে আনুমানিক ৩২ বছর বয়সী এক নারীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ। একই বছরের ২৫ এপ্রিল ১২ বছর বয়সী এক কন্যাশিশুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ। মৃত্যুর পূর্বে ধর্ষণ হয়েছে কি-না জানার জন্য মর্গের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক মরদেহ দুটি থেকে বীর্যের নমুনা সিআইডির ল্যাবে প্রেরণ করেন। সেখানে দুই মরদেহে একই ব্যক্তির বীর্য পাওয়া যায়। এরপর চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। তবে তদন্তকালে দুই মরদেহের ক্ষেত্রে মৃত্যুর আগে ধর্ষণের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। তারপরও পেছনে লেগে থাকে সিআইডি। এক পর্যায়ে তদন্তে পাওয়া যায় দুইটি মরদেহ ময়নাতদন্তের পূর্বে দীর্ঘক্ষণ চমেকের মর্গে ছিল। আবার ওই মর্গের পাহারাদার ও দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন সেলিম। সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে সেলিম ওই দুই মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার করেছেন বলে প্রমাণিত হয়। এরপর গতকাল চমেক হাসপাতাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। একইদিন তার বিরুদ্ধে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় সিআইডি চট্টগ্রাম জেলা ও মেট্রো ইউনিটের উপ-পরিদর্শক (এসআই) কৃষ্ণ কমল ভৌমিক বাদী হয়ে দন্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করেন।
সিআইডি চট্টগ্রাম জেলা ও মেট্রো ইউনিটের সুপার (এসপি) মো. শাহনেওয়াজ খালেদ পূর্বদেশকে বলেন, সেলিমের বিষয়ে কয়েকদিন ধরে তদন্ত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে দুই নারীর সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের সত্যতা পাওয়া গেছে। গোপন অনুসন্ধানে তার বিরুদ্ধে এর আগেও পাঁচলাইশ থানায় একটি নারী নির্যাতনের মামলা পাওয়া যায়। আজ (সোমবার) চমেক হাসপাতাল এলাকা থেকে তাকে গেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আগামীকাল (মঙ্গলবার) তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।