মন্ত্রীদের মধ্যে ‘জমিদারি মনোভাব’ আছে

22

সরকারবিরোধী আন্দোলন নিয়ে সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জাতীয় প্রেস ক্লাবে গতকাল শনিবার সকালে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, কয়েকদিন ধরে লক্ষ্য করবেন যে, আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা হুমকি দেওয়া শুরু করেছেন- এই ধরনের কর্মসূচি মেনে নেওয়া হবে না, সমুচিৎ জবাব দেওয়া হবে।
এই হুমকি-ধমকি দিয়েই তো সারাজীবন চললেন। এরা কাউকে সহ্য করতে চায় না। তাদের মানসিকতার মধ্যে আছে- একটা জমিদারি মনোভাব। লর্ডশীপ- আমি সব, আমি ছাড়া আর কেউ নেই।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির আন্দোলনে নামার ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, আন্দোলনের নামে নৈরাজ হলে তার ‘সমুচিৎ’ জবাব দেওয়া হবে।
প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির মুক্তি ও সমসাময়িক রাজনীতি’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। খবর বিডিনিউজের
সরকারের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, আমরা কোথাও সভা করতে চাইলে অনুমতি পাব না, সোহরাওয়ার্দীতে অনুমতি দেবে না। আর দেখেন আওয়ামী লীগের একেবারে এতটুকু সংগঠন মৎস্যজীবী, পেশাজীবীদের সভা চলছে সব সোহরাওয়ার্দীতে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে মাসব্যাপী সভা চলছে। আমরা যাতে যেতে না পারি সেটার ব্যবস্থা করেছে।
এখন তো চলছে উৎসব। আগামীতে জন্মোৎসব হবে, তারপরে আরও কিছু হবে। গোটা পৃথিবী জুড়ে হচ্ছে বাংলাদেশের উৎসব। কার টাকায় করছেন? এসব পাবলিক মানি।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে তিনি বলেন, ৫ তারিখে রিপোর্ট চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। আমরা সারা বাংলাদেশের মানুষ এই প্রত্যাশা করবে পিজির (বিএসএমএমইউ হাসপাতাল) চিকিৎসকরা যারা মেডিকেল বোর্ডের দায়িত্বে আছেন তারা সত্য কথাটা বলবেন। আমরা অন্য কোনো কিছু চাই না। উই ওয়ান্ট দ্য ট্রুথ। অমানবিকতা-প্রতিহিংসার একটা সীমা থাকে। সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
ভারত থেকে নাগরিকদের পুশব্যাক প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, এদেশের মানুষ কোনোদিনই এই অন্যায় কাজকে সমর্থন করবে না এবং বাংলাদেশের কোনো মানুষ ১৯৭১ সালের পরে ভারতে গেছেন আমরা বিশ্বাসই করি না। সেটা যদি করা হয়ে থাকে তা হবে আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার জন্য। আমরা এখনো মনে করি, সরকারের উচিত হবে অবিলম্বে এই বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং এই বিষয়ে জাতিকে জানানো মূল বিষয়টা কী?
জোটকে শক্তিশালী করতে নেতাদের গ্রামে গ্রামে যাওয়ার আহব্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই প্রেস ক্লাবের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বক্তব্য রেখে হবে না। আমি আমাদের শরিক দলগুলোকে বলছি, গ্রামে গ্রামে যান, বাজারে বাজারে যান, মহল্লায় মহল্লায় যান, এই কাজগুলো করেন। কথাগুলো মানুষকে বলেন, মানুষকে সংগঠিত করার চেষ্টা করেন।
আমার খুব কষ্ট হয়, যখন দেখি যে আমরা যারা গণতন্ত্রের জন্য, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য লড়াই করছি, সংগ্রাম করছি, আমরা আবার নিজেরা বিভক্ত হয়ে পড়ছি। কেন? এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় লড়াই হচ্ছে স্বাধীনতা সংগ্রামের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াই, সেখানে আমি কেন বিভক্ত হচ্ছি, আমি কেন এমন এমন কথা বলছি যে, বিভক্তির সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এটা ঠিক নয়।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সভাপতি ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির নিতাই রায় চৌধুরী, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিকল্পধারার নুরুল আমিন ব্যাপারী, শাহ আহমেদ বাদল, জাগপার খোন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান, এনপিপির বেলাল হোসেন, কাজী শওকত হোসেন, ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।