মধ্যরাতে পাকা দেয়াল ভেঙে হাতির আক্রমণ

10

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাঁশখালীতে মধ্যরাতে এক কৃষক পরিবারের উপর হাতির আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। ওই পরিবারের ঘরের দরজা ও দেয়াল ভেঙে ১১ থেকে ১৫ বস্তা ধান নিয়ে গেছে হাতি। এসময় অন্য দরজা দিয়ে সন্তানসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে পালিয়ে রক্ষাপায় কৃষক পরিবারটি।
গতকাল রবিবার দিনগত রাতে উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ নাটমুড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
হাতির আক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন বিভাগের বাঁশখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘রবিবার রাতে হাতির আক্রমণের বিষয়টি পরদিন সোমবার সকালে জানতে পেরে বিট কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। হাতির আক্রমণে ফসল হানিসহ একটি ঘরের দেয়াল ভেঙে গেছে। আমিও ঘটনাস্থলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। নির্ধারিত পদ্ধতিতে বনবিভাগের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।’
ওই এলাকায় মাঝে মাঝেই হাতির আক্রমণের ঘটনা ঘটে বলে জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য ফরিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘দেড় দুই মাস আগেও এই এলাকায় হাতির আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। মাঝে মাঝেই এখানে পাহাড়ি হাতি আক্রমণ করে। গত রবিবার রাতের আক্রমণে আব্দুল মালেক নামের ওই কৃষকের ৭ থেকে ৮ বস্তা ধান নষ্ট করেছে হাতি। গাছের কাঠাঁল ও ঘরের দরজাসহ দেয়াল ভেঙে ফেলেছে।’
তিনি আরো বলেন ‘গত কয়েক বছরে হাতির আক্রমণে ৪ থেকে ৫ জন নিহত হয়েছে পুকুরিয়ায়। সর্বশেষ এক বছর আগে এক বৃদ্ধ হাতির আক্রমণে মারা গিয়েছিলো।’
ভুক্তভোগী পরিবারের কর্তা আব্দুল মালেক বলেন ‘রাত তিনটার দিকে হঠাৎ দেয়াল কেঁপে উঠার পর বুঝতে পারি হাতি আক্রমণ করেছে। তখন আমার বাচ্চা মেয়েকে নিয়ে অন্যদরজা দিয়ে কোনোমতে বের হয়ে প্রাণ রক্ষা করি। এসময় কৌশলে হাতিটি তাড়ানোর চেষ্টা করলে আমার দিকে তেড়ে আসে। আমাদের ইটের দেয়াল ও লোহার দরজা ভেঙে ১৫ বস্তা ধান নিয়ে গেছে হাতি। তাছাড়া গাছের বেশ কিছু কাঁঠালও নষ্ট করেছে। সব মিলিয়ে অন্তত ৫০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতির হয়েছে আমাদের।’
বাঁশখালীর পুকুরিয়া ইউনিয়ন হাতির আক্রমণের জন্য বিপজ্জনক এলাকা হওয়ায় জানমালের ক্ষতি কমিয়ে আনতে বিভিন্ন সভা সমাবেশের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা চলছে বলে জানান বন বিভাগের বাঁশখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, ‘হাতির আবাসস্থল নষ্ট হওয়ায় তারা জনবসতিতে আক্রমণ করে। তাছাড়া তাদের যে পানির প্রাকৃতিক উৎস, সেসবও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমরা সাধারণ মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি যেন জানমালের ক্ষতি কম হয়। আর যদি ক্ষতি হয়েও যায়, তাহলে সরকার ক্ষতিপূরণ দেবে- এটা বোঝানোর চেষ্টা করছি তাদের।’